Advertisement
Advertisement

Breaking News

Prayagraj

স্নানের যোগ্য নয় প্রয়াগরাজের নদীর জল! দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সতর্কবাণী কেউ শুনল না কেন?

গঙ্গা ও যমুনার প্রবাহকে স্বচ্ছ রাখার দায় সাধারণ মানুষেরও।

Central Pollution Control Board said that water of Prayagraj was not fit for bathing, has anyone heard

প্রতীকী ছবি

Published by: Biswadip Dey
  • Posted:February 27, 2025 5:06 pm
  • Updated:February 27, 2025 5:06 pm  

কুম্ভমেলা শুরুর আগেই ‘কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ’ জানিয়েছিল, প্রয়াগরাজে গঙ্গা ও যমুনার জল স্নানের যোগ্য নয়। কেউ কি শুনেছে?

কথাটা এই যে, পুণ্য ও স্নান কতখানি একসঙ্গে যায়? বাংলায় পুকুর খনন ও সংস্কার প্রসঙ্গে জয়া মিত্রর মতো পরিবেশবিদ স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, প্রকৃতির নিজস্ব যে শোধনব্যবস্থা রয়েছে, সেটিকে বিঘ্নিত না-করেই পুকুর খনন করতে হবে, বা পুকুরের সংস্কারে মনোযোগী হতে হবে। কোনও এলাকায় অনেক পুকুর থাকলেও গ্রামবাসীরা সব পুকুরে স্নান করে না, বা সব পুকুরের জলকে ‘পেয়’ বলে ধরেও নেয় না।

Advertisement

শোধনপ্রক্রিয়া যেখানে সবচেয়ে সক্রিয়, সেই পুকুরের জল তুলনায় বেশি স্বচ্ছ ধরা হয়, তাই অন্যান্য ঘরের কাজে ওই জল না-ব্যবহার করা শ্রেয়। নদীর জল বহমান। তাই নদীর জলের শুদ্ধতা-রক্ষার পরিসরটি বড়, যদিও সেখানেও নির্ভর করতে হয় প্রকৃতির ‘হোলিস্টিক’ বা সামগ্রিক শোধনব্যবস্থার উপর। যদি বাহ্য দূষণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, শিল্পবর্জ্য যদি অপর্যাপ্তভাবে নদীর জলে মিশ্রিত হতে থাকে, এককথায় নাগরিক দূষণের উপর যদি কোনও প্রকার কবজা না থাকে, তাহলে অবশ্য নদীর বহমান জলও ক্রমশ ব্যবহার-অযোগ্য হয়ে ওঠে। সাম্প্রতিক সময়ে, এর চমৎকার উদাহরণ হতে পারে প্রয়াগরাজে গঙ্গা ও যমুনার জলের ‘কোয়ালিটি’।

খবরে প্রকাশ, কুম্ভমেলা শুরু হওয়ার আগেই ‘কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ’ জানতে পেরেছিল যে, প্রয়াগরাজে গঙ্গা ও যমুনার জল আদৌ নিরাপদ নয় স্নানের জন্য। গঙ্গার চারটি ও যমুনার দু’টি জায়গা থেকে তারা সংগ্রহ করেছিল নমুনা। সেই নমুনা বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে– ১২, ১৩, ১৪, ১৫ এবং ১৯ ও ২০ জানুয়ারি গঙ্গা-যমুনায় ফিকাল কলিফর্মের পরিমাণ কোথাও ছিল প্রতি ১০০ মিলিলিটারে ২৩ হাজার এমপিএন, কোথাও ৩৩ হাজার এমপিএন, কোথাও আবার ৪৯ হাজার এমপিএন। এই মাত্রা কেমন ভয়ংকর ও অসহনশীল, তা বোঝানো যেতে পারে এই তথ্য দিয়ে যে, পুকুর-নদীতে স্নানের উপযোগী জলে প্রতি ১০০ মিলিলিটারে সর্বাধিক ২৫০০ এমপিএন থাকতে পারে। সেখানে কুম্ভের আগে ও শাহি স্নানের সময় গঙ্গা-যমুনার জলে এর প্রায় ১০ গুণের বেশি ছিল ফিকাল কলিফর্মের মাত্রা। এর পরিণতি যে স্বাস্থ্যের পক্ষে কত বিপজ্জনক, তা বলার নয়। কিন্তু এই রিপোর্ট সবিস্তারে উত্তরপ্রদেশ দূষণ পর্ষদকে জানানো হলেও তারা কী পদক্ষেপ করছে, সে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

এবারের কুম্ভমেলার আয়োজন এবং ব্যবস্থাপনা নিয়ে বারবার অভিযোগ উঠেছে। এই তথ্য সেসব অভিযোগের তীক্ষ্ণতা আরও বাড়িয়ে তুলল। পাপ-পুণ্য মানসিক বিশ্বাসের উপর নির্ভরশীল। যে পাপ-পুণ্যে বিশ্বাস করে, তাকে যেমন কাঠগড়ায় তোলা যায় না, তেমনই যে মানে না এসব ধারণা, সে-ও বা কেন সমাজের চোখে হীন প্রতিপন্ন হবে! কিন্তু পুণ্যকামী মানুষকে পরিস্রুত স্নানের জলের ব্যবস্থা করে দেওয়ার দায়িত্ব প্রশাসনের। ত্রুটি ঘটলে অতএব সমালোচনা হবেই। তবে, গঙ্গা ও যমুনার প্রবাহকে স্বচ্ছ রাখার দায় সাধারণ মানুষেরও। সারা বছর কি আমরা সে-দায়িত্ব পালন করি?

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement