Advertisement
Advertisement
Russia

লেখার চাদরে

দিনভর লিখে ভুলতে চান বাস্তব?

Boris Akunin exiled from Russia for criticizing Vladimir Putin
Published by: Biswadip Dey
  • Posted:August 1, 2024 4:29 pm
  • Updated:August 1, 2024 9:32 pm  

এই সময়ের বিশিষ্ট রুশ লেখক বরিস আকুনিন আর কখনও রাশিয়ায় ফিরতে পারবেন না। দিনভর লিখে ভুলতে চান বাস্তব?

‘বিঞ্জ রাইটিং’। কথাটা খুব পুরনো নয়, এবং এটাকে লড়তে হচ্ছে আরও একটা হালফিলের শব্দবন্ধের সঙ্গে– ‘স্ন্যাক রাইটিং’। কেউ যদি দিনের অনেকটা সময় জুড়ে লেখার কাজে নিয়োজিত থাকে– অর্ধেক দিন বা কখনও হয়তো সারাটা দিন– সেটাকে বলা হয় ‘বিঞ্জ রাইটিং’। অন্যদিকে ‘স্ন্যাক রাইটিং’ হল দিনে দু’-তিন ঘণ্টা করে লেখা, কিন্তু তা প্রায় রোজ। বরিস আকুনিন (ছদ্মনাম) সদ্য লন্ডনের পাঠক সমাবেশে বলেছেন, গত দু’-বছর ধরে পাগলের মতো নাকি লিখেছেন। আগে কখনও এত লেখেননি। তঁার অভিমত, এটা এক ধরনের পলায়নি মনোভাব।

Advertisement

কে এই বরিস আকুনিন? ৯০টির বেশি বইয়ের লেখক। উপন্যাস, নাটক, রাশিয়ার (Russia) বিভিন্ন প্রদেশের ইতিহাস তাতে শামিল আছে। এ-যাবৎ রাশিয়ায় তঁার বই বিক্রি হয়েছে তিন কোটির বেশি। ৪০টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে আকুনিনের কাজ। এমন খ্যাতকীর্তি লেখককে তো রাষ্ট্রের বুকে জড়িয়ে ধরার কথা! কিন্তু না, বরিস আকুনিন রাশিয়া থেকে ‘নির্বাসিত’। ক্রেমলিনের চোখে ‘ফরেন এজেন্ট’। এর কারণ– বরিস আকুনিন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের (Vladimir Putin) তীব্র সমালোচক। জর্জিয়ায় আক্রমণ শানানো, ক্রিমিয়ার উপর দখলদারি, শেষে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ– রাশিয়ার এসব বিদেশনীতির একটিকেও তিনি সমর্থন করেন না। কাজেই রাশিয়া যে বরিস আকুনিনকে সমাদর করবে না, বুঝতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার কিছু পরে একটি আশ্চর্য ঘটনায় জড়িয়ে যান বরিস আকুনিন। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ‘ভোভান ও লেক্সাস’– রাশিয়ার বিখ্যাত প্র্যাঙ্কস্টার জুটি– নাম ও পরিচয় গোপন করে তঁাকে ফোন করে। বলে, তারা ইউক্রেনীয় প্রশাসনের প্রতিনিধি। এরপর বরিসের সঙ্গে ভোভান ও লেক্সাসের যে-কথোপকথন হয়েছিল, তা প্রকাশ্যে ফঁাস করে দেওয়া হয়। এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে করা। বরিস বরাবরের রুশ-বিরোধী। ইউক্রেনের পক্ষে তিনি কথা বলেছিলেন স্বভাবতই।

[আরও পড়ুন: লক্ষ্য-সিন্ধুদের হাত ধরে ব্যাডমিন্টনে পদকের হ্যাটট্রিকের লক্ষ্যে ভারত, স্বপ্নপূরণ করবে প্যারিস?]

কিন্তু সেই কথাবার্তা সামনে চলে আসার ফল হল মারাত্মক। ‘এএসটি’-সহ রাশিয়ার বিভিন্ন বিশিষ্ট প্রকাশনা সংস্থা বরিসের বই ছাপতে আপত্তি করে। রাশিয়া জুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া হয় এই প্রচার যে, তিনি ‘দেশদ্রোহী’। রুশ রাজনীতিক ও ভূতপূর্ব সেনা অফিসার আন্দ্রে গুরুলিয়ভ স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন– বরিস আকুনিন ‘দেশের শত্রু’, অবিলম্বে ‘তঁাকে নিকেশ করা উচিত’।

ভ্লাদিমির পুতিনকে সম্প্রতি তিনি আবারও ‘একনায়ক’ বলে চিহ্নিত করেছেন। আর বলেছেন– ‘ধ্রুপদী রুশ সাহিত্য একমাত্র পন্থা একনায়কতন্ত্রের ফঁাস থেকে রেহাই পাওয়ার।’ একাকী লেখকের ‘মত’ হতেই পারে এমনটা, তবে ভেবে দেখার, গণ-জাগরণ ও সম্মিলিত প্রতিবাদের দিকটা তিনি এড়িয়ে যাচ্ছেন কেন? দিনভর লিখে ‘বাস্তব’ থেকে পালানোর চেষ্টা করছেন কি? রাশিয়ায় হয়তো আর ফিরতে পারবেন না। তাহলে বাইরে থেকে লেখালিখিই সম্বল!

[আরও পড়ুন: বেআইনিভাবে ছবি ব্যবহার, অলিম্পিকে পদক জিতেই ২ ডজন সংস্থাকে আইনি নোটিস মনুর]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement