Advertisement
Advertisement
China

ব্যানার-লিখনে অশনি সংকেত, কক্ষচ্যুতির পথে জিনপিং

চিনে তুঙ্গে শি-বিরোধী জনমত।

Blank paper revolution in China putting pressure on Xi Jinping | Sangbad Pratidin
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:December 6, 2022 2:45 pm
  • Updated:December 6, 2022 2:59 pm  

‘সিসিপি’-র নিয়ম ভেঙে তৃতীয়বারের জন‌্য চিনের প্রধান হয়ে উঠলেন বটে শি জিনপিং, তবে হাওয়ার গতি ভাল নয়। শি-বিরোধী জনমত তৈরি হচ্ছে। অর্থনীতি শক্ত করে রাজনৈতিক শক্তিতে বলীয়ান হওয়া তাঁর লক্ষ্য। কিন্তু সাধের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়লে তিনি যে কক্ষচ্যুত হবেন না, গ্যারান্টি কী? লিখছেন কিংশুক বন্দ্যোপাধ্যায় 

ক্টোবরের সাতসকালেই বেজিংয়ের চক্ষু চড়কগাছ! মহানগরীর সুতং সেতুর উপর দু’-দুটো বিশাল সাদা ব্যানার টাঙানো। তাতে লাল কালিতে শুধু যে লকডাউন-বিরোধী স্লোগান লেখা, তা-ই নয়, বাক্‌-স্বাধীনতা, আর ভোট চেয়ে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-য়ের পদত্যাগও দাবি করা হয়েছে। দূর থেকে দেখা গেল- পথচলতি মানুষের নজর কাড়ার জন্য কমলা রঙের জ্যাকেট আর হলুদ হেলমেট পরা একজন সেতুর উপর টায়ার জ্বালিয়েছেন। একটু পরেই পুলিশ এসে তাঁকে ধরে নিয়ে গেল। ১৩ অক্টোবরের এই ঘটনায় বিশ্ব-মিডিয়া চমকে উঠল। তিনদিন বাদেই ১৬ অক্টোবর চিনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিসিপি) বিংশতিতম কংগ্রেস হওয়ার কথা।

Advertisement

দেং জিয়াওপিং-এর নীতিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে আজীবন ক্ষমতায় থাকার বাসনায় শি জিনপিং উপর্যুপরি তৃতীয়বারের জন্য দেশের প্রেসিডেন্ট হতে চলেছেন। সবাই তটস্থ। পাছে কোথাও কোনও ভুল হয়ে যায়, সেই ভয়ে কোথাও একচুলও খুঁত না রেখে কাজ করা হচ্ছে। পুরো বেজিং শহরকে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে। পার্টিতে শি-বিরোধীদের প্রায় নিশ্চিহ্ন করে ফেলা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে যখন বিক্ষোভের কথা স্বপ্নেও আসে না, তখনই সুতং সেতুর উপর এই অকুতোভয়ের দেখা মিলল। ঠিক যেমন দেং জিয়াওপিং-এর বজ্রশাসনকে তোয়াক্কা না করে ১৯৮৯ সালের ৫ জুন আর-এক দুঃসাহসী তিয়ানানমেন স্কোয়‌ারের চাঙ্গান অ‌্যাভিনিউতে ট্যাঙ্কের সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। অজানা সেই দুঃসাহসীকে ‘ট্যাঙ্ক ম্যান’ নাম দিয়েছিল বিশ্ব। তাঁর কথা মাথায় রেখে সুতং সেতুর অকুতোভয়ের নাম দেওয়া হল ‘ব্যানার ম্যান’।

[আরও পড়ুন: বৃহত্তম গণতন্ত্র পরিচালনার চাবিকাঠি এই সংবিধান কি আইনি নথি মাত্র?]

কিন্তু ‘ট্যাঙ্ক ম্যান’-কে যেমন শত চেষ্টা করেও বেজিং মুছতে পারেনি, এই ‘ব্যানার ম্যান’-কেও চটজলদি লোকচক্ষু থেকে সরিয়ে তা কি করতে পারছে? উলটে যত দিন যাচ্ছে, তত লকডাউন আর শি-এর ইস্তফা-সহ ব্যানার ম্যান যেসব দাবি তুলেছেন, তার পালে দেশময় হাওয়া বাড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘ব্যানার ম্যান’-এর দাবিগুলো আদতে আমজনতার মনের কথা, লকডাউন তো উপলক্ষ মাত্র। তাই স্রেফ ধড়পাকড় চালিয়ে এই অসন্তোষ কমানো সম্ভব কি?

তা যে সম্ভব নয়, সেটা বেজিং, সাংহাই-সহ দেশের বড়-বড় শহরের সাম্প্রতিক স্বতঃস্ফূর্ত বিক্ষোভই বলে দিচ্ছে। ‘ব্যানার ম্যান’ কাণ্ডর পরে সম্প্রতি প্রত্যন্ত পশ্চিমের শিনজিয়াং প্রদেশের রাজধানী উরুম্‌কিতে এক অগ্নিকাণ্ডে জনা দশেকের মৃত্যু লকডাউন-বিরোধী বিক্ষোভে ঘৃতাহুতি দিয়েছে। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, কোভিড লকডাউনের জন্যই দমকল ঠিক সময়ে আসেনি। দমকল যদিও বিলম্বে ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর জন্য রাস্তায় যত্রতত্র গাড়ি পার্কিংকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে। এখনও পর্যন্ত দেশের ২২টি বড় শহরে ৪৫টি বড় আকারের বিক্ষোভ হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাসেও। বেজিংয়ের চিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনে ‘A4’ মাপের এক ফাঁকা সাদা কাগজ নিয়ে স্লোগান দিতে শুরু করে এক ছাত্রী। সাদা কাগজ ফাঁকা, কারণ সাধারণ মানুষের কথা বলার অধিকার নেই।

এই সাদা কাগজ নিয়ে বিক্ষোভ ক্রমে দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। পশ্চিমি মিডিয়া একে ‘ব্ল্যাঙ্ক হোয়াইট পেপার রেভোলিউশন’ নামও দিয়েছে। এক বিক্ষোভকারী মহিলাকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘এটা উরুম্‌কি ঘটনার নীরব প্রতিবাদ। আমরা কাগজে কোনও কিছুই লিখিনি। হৃদয়ে লেখা রয়েছে সব অভিযোগ।’ আর-এক ছাত্র পরিষ্কার বলছে, ‘সুতং সেতু আমাদের প্রেরণা। আমরা চাই না আজকের উত্তর কোরিয়ায় পরিণত হোক আগামী কালের চিন।’

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই গণ-বিক্ষোভের মূলে রয়েছে চিনের একদলীয় শাসনব্যবস্থা, যা মাও-এর পরে শি-এর জমানায় ফের একনায়কতন্ত্রের দিকে হঁাটছে। একুশ শতকের মাও হতে চাইছেন শি। আর সমস্যা দেখা দিচ্ছে এখান থেকেই। ১৯৪৯ সালে মাও জে দংয়ের নেতৃত্বে সিসিপি-র চিনের ক্ষমতা দখল থেকে ১৯৭৬ সালে মাও-এর মৃত্যু পর্যন্ত চিনে কার্যত একনায়কতন্ত্র চলেছিল, যেখানে ব্যক্তি মাও-এর এক ক্যারিশমা কার্যত দলকে ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছিল। মাও-জমানার স্বেচ্ছাচারিতায় ব্যক্তিগতভাবে ভুক্তভোগী দেং জিয়াওপিং তাই দলের নিয়ন্ত্রণ হাতে তুলে নিয়ম করলেন, কোনও সাধারণ সম্পাদক দু’বারের বেশি ওই পদে থাকতে পারবেন না। আর এই পদে থাকার বয়সের ঊর্ধ্বসীমা হবে ৬৮ বছর। সদ্যপ্রয়াত জিয়াং জেমিন (যাঁর কার্যকালের মেয়াদ ১৯৮৯-২০০২) আর হু জিনতাও-এর (কার্যকালের মেয়াদ ২০০২-২০১২) বেলায় এই নিয়ম মানা হলেও ৬৯ বছর বয়সে তৃতীয়বারের জন্য মসনদে বসে শি যে এই নিয়ম ভাঙলেন, তা-ই নয়, মাও-এর আদলে তাঁর ভাবমূর্তি দলকে যাতে ছাপিয়ে যায়, তার সব রাস্তাই বেছে নিলেন।

মাও-এর পথ ধরে যারা-ই বিন্দুমাত্র তাঁর কর্তৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলছে, তাদের দলে কোণঠাসা করা বা নিশ্চিহ্ন করার এই কায়দাটা ইতিমধ্যেই শি নিয়েছেন বলে অভিযোগ। দেশব্যাপী দুর্নীতিদমনের আড়ালে এই কাজই পুরোদমে চলছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। একই সন্দেহ ফের কোভিড রোধে লকডাউন নিয়েও। অভিযোগ উঠছে, নিজের ভাবমূর্তি বজায় রাখতে গিয়ে আগে তথ্য গোপন না করলে পরিস্থিতি এত গুরুতর হত না। অনেক জায়গাতেই লকডাউন বজায় রাখার জন্য বলপ্রয়োগের অভিযোগও উঠছে।

এমনিতে লকডাউনে ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই লকডাউন কেউই ভালভাবে মেনে নেয় না। কিন্তু তাও ২০২০-তে চিনের আমজনতা নিমরাজি হয়েও লকডাউন মেনে নিয়েছিল। কিন্তু পরে দেখা গেল নেতাদের ভাবমূর্তি রাখতে গিয়ে বেজিংই তুঘলকি রাস্তায় হাঁটছে।

সমস্যা আরও বেড়েছে কোভিড নিয়ে বেজিংয়ের চিত্র কোনও দিনই পরিষ্কার না হওয়ায়। ইউহানের ‘ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজি’ থেকেই ভাইরাস লিক হয়েছিল কি না, সেই প্রশ্ন বেজিং সযত্নে এড়িয়ে গিয়েছে। এমনকী, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-র অনুসন্ধানী দলকেও কাজ করতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বেজিংয়ের বিরুদ্ধে। বিশ্বব্যাপী কোভিডের প্রথম কয়েকটি ঢেউয়ে কয়েক লক্ষ লোক মারা গেলেও বেজিং এমন এক পরিসংখ্যান পেশ করে, যার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন উঠে যায়। তারপর সারা বিশ্ব যখন কোভিড অতিমারীতে আক্রান্ত, তখন চিন ‘রোগমুক্ত’ বলে বেজিংয়ের ঢাক পেটানো শুরু হয়। চিনা জনগণ সে-কথা বিশ্বাস করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে শুরু করে। কিন্তু কোভিড সংক্রমণ বাড়ায় আবার তারা গৃহবন্দি। এখন তাই সন্দেহ দানা বাঁধতে শুরু করেছে, আগে বিশ্বের সামনে শি-এর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার জন্য তথ্য গোপন করা হয়েছিল কি না।

পশ্চিমি মিডিয়ার তথ্য অনুসারে, চিনের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোও যথেষ্ঠ নড়বড়ে। প্রতি ১ লক্ষের জন্য মাত্র ৪টি আইসিইউ শয্যা আছে। বহু প্রবীণকে এখনও দুটো ডোজ টিকা দেওয়া হয়নি। তার উপর চিনে তৈরি যে টিকা দেওয়া হয়েছে, তার গুণমানও প্রশ্নাতীত নয়, কারণ সেগুলো করোনার নয়া ভ্যারিয়ান্টগুলোর মোকাবিলা করতে অপারগ।

ফলে, বেজিং পড়েছে চূড়ান্ত আতান্তরে। লকডাউন না করলে সংক্রমণ সামলানো যাবে না। আবার লকডাউনে জনরোষ বাড়ছে আর শি-কেই এর জন্য দায়ী করা হচ্ছে। তবে এই বিক্ষোভকে যেভাবে বিশ্ব মিডিয়া পাদপ্রদীপের তলায় এনেছে, তাতে তিয়ানানমেন স্কোয়‌ারের পথে হঁাটা যে সহজ হবে না, তা-ও বেজিং বুঝছে। তাই শি জিনপিং বিক্ষোভের গুরুত্ব কমানোর জন্য একে ‘গত তিন বছর ধরে কোভিডের জেরে জেরবার পড়ুয়াদের হতাশার বহিঃপ্রকাশ’ বলে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছেন। কিছু শহরে লকডাউনের কড়াকড়ি কম করে ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টাও করা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এছাড়া শি-র সামনে রাস্তাও খোলা নেই। কারণ এই বিপদ যত না রাজনৈতিক, তার চেয়ে অনেক বেশি অর্থনৈতিক। আর অর্থনীতিকে ভিত্তি করেই তো তঁার পরবর্তী রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ গড়ছেন। বিগত শতকের শেষ দশকে দেং জিয়াওপিং-এর নেতৃত্বে চিন যখন আর্থিক সংস্কারের রাস্তায় হঁাটে, তখন পরিস্থিতির চাপে সিসিপি শিল্পমহলের সঙ্গে এক সমঝোতা করে। পার্টির রাজনৈতিক কাজ ও দেশ-শাসন নিয়ে শিল্পমহল যেমন কোনও বিরূপ ভূমিকা নেবে না, তেমনই শিল্পমহলেরও ব্যবসা করার পূর্ণ স্বাধীনতা থাকবে।

এই সমঝোতার পিছনে কারণ ছিল। দেং বুঝতে পারেন, বেজিংয়ের কৃষিনির্ভর অর্থনীতিকে শিল্পভিত্তিক করতে হলে পশ্চিমি বিনিয়োগ প্রয়োজন। আর, এর জন্য প্রথমেই দরকার দেশীয় শিল্পমহলকে নিয়ন্ত্রণমুক্ত করা, যাতে বিদেশি শিল্পমহলের আস্থা অর্জন করা যায়। যদিও সাতের দশকের গোড়ায় তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড মিলহাউস নিক্সনের জমানায় তঁার বিদেশ সচিব হেনরি কিসিঞ্জারের উদ্যোগে ওয়াশিংটন-বেজিং সম্পর্ক সহজ হওয়ায় পশ্চিমি বিনিয়োগের রাস্তা খুলতে শুরু করে, কিন্তু তা সাতের দশকের শেষদিকে দেং ক্ষমতায় আসার পর। সদ্য প্রয়াত জিয়াং জেমিন আর হু জিনতাও-এর জমানায় এই নীতিতে পূর্ণবেগে চিন ‘বিশ্বের কারখানা’য় পরিণত হয়।

২০১৩ সালের পর থেকে শি জিনপিং জমানায় বেজিং ধীরে ধীরে দেং নীতি থেকে সরে আসায় সমস্যার সূত্রপাত হয়। শি-র বিরাগভাজন হওয়ায় চিন তথা এশিয়ার ধনীতম শিল্পপতি জ্যাক মা-র দশা দেখে বিশ্বের শিল্পমহল বুঝে যায় চিনে ব্যবসা করা আর স্বাধীন নয়। দেশের পরিস্থিতি অশান্ত হলে যে ব্যবসা করা অসম্ভব, তা লকডাউনের সময় কারখানা থেকে দলে দলে কর্মীদের পালিয়ে যাওয়াও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে। ফলে অনেক বিদেশি বহুজাতিকই চিন ছেড়ে পড়শি ভারত বা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ভিয়েতনাম বা থাইল্যান্ডে তাদের ব্যবসা নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছে। আরও অভিযোগ উঠেছে, ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে গিয়ে বেজিং দেশের শিল্পমহলের স্বাধীনতা হরণ করে তাদের নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির কাজে লাগাচ্ছে। আর এর ফল ভুগতে শুরু করেছে চিনা বহুজতিক সংস্থাগুলো। চিনা সেনার হয়ে এরা চরবৃত্তি করতে পারে, এই সন্দেহে ইউরোপ-আমেরিকায় একের পর এক চিনা বহুজাতিক কালো তালিকায় চলে যাচ্ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই দুই কারণে চিনা অর্থনীতির মূল ভিতটাই নড়ে যেতে পারে। এমনিতেই করোনার কারণে চিনা অর্থনীতির চাকার গতি অনেক শ্লথ হয়ে পড়েছে। এই দেশব্যাপী বিক্ষোভ দীর্ঘায়িত হলে তা স্তব্ধ করার ক্ষমতা রাখে। আর চিনা বহুজাতিক সংস্থাগুলো দুর্বল হয়ে পড়লে শুধু যে রফতানি বাণিজ্যে চিন মার খাবে তা-ই নয়, শি-র সাধের ৭৮টি দেশে ছড়ানো ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ প্রকল্পও মুখ থুবড়ে পড়বে।

আর এখানেই শি-র রাজনৈতিক বিপদও ঘনিয়ে আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ২০৪৯ নাগাদ চিন যে বিশ্বজয় করবে আর শি যে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী রাষ্ট্রপ্রধান হবেন, বেজিংয়ের এই লক্ষ্যে পৌঁছনোর অনেকটাই কিন্তু ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ প্রকল্পের সাফল্যের উপর নির্ভর করছে। এটাও ভুলে গেলে চলবে না, পার্টির উপর নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব পাওয়ার জন্যই নিজেকে দ্বিতীয় মাও প্রতিপন্ন করার প্রয়াস। আর এই প্রয়াসের পালে হাওয়া দিয়েছে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’-এর মতো প্রকল্প, যাতে দলের মনে হয় নতুন নেতা দেশকে নতুন পথে নিয়ে যাবেন। এখন সেটাই যদি না হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়, তবে এই ব্যর্থতাকেই হাতিয়ার করে দলের বিক্ষুদ্ধ গোষ্ঠী যে ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে, তা বলাই বাহুল্য। তখন মাও বা দেংয়ের মতো প্যারামাউন্ট লিডার হওয়ার স্বপ্নের বাস্তবায়ন দুরূহ হয়ে উঠতেই পারে।

টিউনিশিয়াতে এক ফলঅলার আত্মাহুতি আরব বসন্ত এনেছিল। ‘ব্যানার ম্যান’ কি চিনা বসন্তের আগমনবার্তা নিয়ে এল ফাঁকা সাদা পাতার বিপ্লবের হাত ধরে?

[আরও পড়ুন: কাপের নিচে অন্ধকার! কেন বির্তকে মোড়া কাতার বিশ্বকাপ?]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement