Advertisement
Advertisement
Prashant Kishor

মোদিবিরোধী রাজনীতির খেলায় পিকে’র গেম প্ল‍্যান কী?

পিকে কি নিজে ভেবেছিলেন যে, মমতার আসনসংখ্যা ২০০ হয়ে যাবে?

Amidst speculation of anti-Modi front, all eyes on Prashant Kishor | Sangbad Pratidin

ফাইল ফটো

Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:July 17, 2021 4:08 pm
  • Updated:July 17, 2021 4:08 pm  

পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিপুল জয়ের পর দেশজুড়ে বিজেপি-বিরোধী শক্তিগুলি তাঁকে সামনে রেখে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে মোদিবিরোধী রাজনীতির তাস খেলতে চাইছে। এই পরিস্থিতিতে পিকে-র রাজনৈতিক গেম প্ল‍্যান কী? আপাতত কি তিনি সলতে পাকাচ্ছেন? লিখছেন জয়ন্ত ঘোষাল

 

Advertisement

বিবিসি-র এক সাংবাদিক সেদিন ফোন করে জিজ্ঞাসা করছেন, আচ্ছা, প্রশান্ত কিশোর (Prashant Kishor) কী করতে চাইছেন? প্রশান্ত কিশোর ওরফে ‘পিকে’ এখন এমন একটি নাম, যা শুধু ভারত নয়, লন্ডন অথবা নিউ ইয়র্কের সাংবাদিকরা- যাঁরা ভারতের রাজনীতি নিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ করেন, বা ভারতীয় রাজনীতির অভিমুখ কোনদিকে চলেছে, তা বোঝার চেষ্টা করেন- তাঁদের সকলের কাছেই অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক এবং গুরুত্বপূর্ণ। বিবিসি-র সেই সাংবাদিককে বললাম, প্রশান্ত কিশোর রাজা হতে চান কি চান না, জানি না। কিন্তু তিনি ‘রাজা’ তৈরি করেন। ইংরেজিতে আমরা যাকে বলি ‘কিং মেকার’। বিবিসি-র সেই সাংবাদিক এরপর জানতে চাইলেন, প্রশান্ত কিশোর কি কোনও রাজনৈতিক দলে যোগ দিতে পারেন? ভারতীয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে যে, তিনি কংগ্রেসে যোগ দিতে পারেন। আবার তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের মনোনীত সদস্য হয়ে রাজ‍্যসভায় পৌঁছতেও পারেন। এমনকী, তিনি আগামী দিনে বিহারের মুখ‍্যমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখেন- এমন কথাও পিকে সম্পর্কে উচ্চারিত হয়, প্রকাশিত হয়, আলোচিত হয়।

প্রশান্ত কিশোরকে আমি ব‍্যক্তিগতভাবে বেশ কয়েক বছর ধরে দেখছি। এর আগে যে সংবাদপত্রের সাংবাদিক ছিলাম, তার সম্পাদকমশাই আমাকে প্রথম দিল্লির ওবেরয় হোটেলে পিকে-র সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। বিহারে নীতীশ কুমারের বাড়িতে পিকে-র সঙ্গে কথা হয়েছিল। এরপর সাংবাদিক হিসাবে যখনই কোনও প্রয়োজন হয়েছে, পিকে-র কাছ থেকে অসহযোগিতা পাইনি। কিন্তু পিকে কী ভাবছেন? পিকে কোন পথে চলেছেন?

[আরও পড়ুন: জন্মনিয়ন্ত্রণ থেকে গোরক্ষা বিল, বিভাজনী রাজনীতির সিঁদুরে মেঘ দেখছেন সংখ্যালঘুরা]

পিকে তাঁর হৃদয়ের কথা যে সবসময় বলতে ব‍্যাকুল, সেটা কিন্তু কখনও মনে হয়নি। শুধু বিবিসি-র সাংবাদিক কেন, এই মুহূর্তে অনেকেই পিকে-কে নিয়ে জানতে চাইছেন। তাঁদের অনেককেই আমার ক্ষুদ্র মস্তিষ্কের বিশ্লেষণ জানাতে পারি। কিন্তু তা যে খুব তথ্যভিত্তিক, এমনটা দাবি করি না। বলা যায়, এটা আমার অনুমান এবং বিশ্লেষণ। এবং ভুল হলে সংশোধনযোগ্য। পিকে নিজেকে উন্নীত করেছেন। তিনি যেখান থেকে তাঁর যাত্রা শুরু করেছিলেন, সেখানে তিনি আর দাঁড়িয়ে নেই। তিনি শুধু নির্বাচনে জয়ের পথ নির্ধারণ করেন বা ভোটগণনা বিষয়ে জ্যোতিষীর মতো আগাম ঘোষণা করেন, এমনও নয়। কিন্তু তিনি রাজনীতির আবহ সঠিকভাবে বুঝতে পারেন এবং যে রাজনৈতিক দল বা সরকার তাঁর ‘ক্লায়েন্ট’ হয়, তাদের প্রেক্ষাপটটা চিনে নেন। যে-নেতার হয়ে কাজ করছেন, সেই নেতার ভাল লাগা, না-লাগা, বৈশিষ্ট্য যেমন অনুধাবন করেন, আবার আমজনতার মধ্যে সেই নেতার সত্যি সত্যি কতটা প্রভাব-প্রতিপত্তি, তাও ধরতে পারেন।

তাঁর টিম জেলায় জেলায় পৌঁছে গিয়ে সমীক্ষা করে। তা কিন্তু খুব তৈলমর্দনকারী গোয়েন্দা রিপোর্ট নয়। বরং তা অনেক সময়ই ‘জমিনি হকিকত’-কে প্রতিষ্ঠিত করে। ‘জুলিয়াস সিজার’-এ যেরকম একজন ব‍্যক্তি সম্রাটের সঙ্গে চলত আর বলত, ‘সম্রাট, ওদের প্রশংসায় কান দিও না, ওরা তোমাকে তোষামোদ করছে। তুমি বিপথগামী হবে।’ বারবার সে ‘নো’, ‘নো’ বলতে বলতে চলত। এমনকী, এক মার্কিন প্রেসিডেন্টও ‘মিস্টার নো’ বলে একটা পদ তৈরি করেছিলেন, যাঁর কাজ ছিল শুধু ‘না’ বলা এবং প্রেসিডেন্টকে সংশোধন করার চেষ্টা করা। আমরা জানি যে, রাজনৈতিক নেতারা সেটা অনেক সময় পছন্দ করেন না। ‘ইয়েস মিনিস্টার’ বা ‘ইয়েস, প্রাইম মিনিস্টার’-এর মতো টেলিভিশনের সিটকমেও আমরা দেখেছি যে, রাজনেতারা কী ধরনের তোষামোদপ্রিয় হন। পিকে-র বৈশিষ্ট্য হল, তিনি ‘কল আ স্পেড আ স্পেড’- এই তত্ত্বে বিশ্বাস করেন। সেই রাজনৈতিক বিশ্লেষণ তিনি প্রকাশ্যে নিয়ে আসেন না। যাঁর হয়ে কাজ করছেন, সেই রাজনৈতিক নেতাকে প্রকাশ্যে ছোট করেন না। বরং অত্যন্ত ইতিবাচকভাবে তাঁর ভুলগুলো ধরিয়ে দেন, তা-ও একান্তে, অনেক সময় ‘ওয়ান টু ওয়ান’ বৈঠকে। তার ভিত্তিতে সংশোধনের রাস্তা তৈরি হয়। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি যখন ক্ষমতায় এসেছিলেন, বা তিনি যখন গুজরাটের মুখ‍্যমন্ত্রী- তখনও কিন্তু পিকে তাঁর জন‍্য এই কাজটিই করেছিলেন এবং সফল হয়েছিলেন।

এবার আমরা চলে আসি আজকের পরিস্থিতিতে। পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিপুল জয়ের পর, কোনও সন্দেহ নেই, দেশজুড়ে বিজেপি-বিরোধী নেতা, দল, শক্তি এবং রাজ‍্য সরকারগুলি এই বিজয়কে রাজনৈতিক মূলধন করে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে মোদিবিরোধী রাজনীতির তাস খেলতে চাইছে। সেই কারণে কমল নাথের মতো কংগ্রেস নেতা মধ‍্যপ্রদেশ থেকে বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখে বিরোধী ঐক‍্য করতে চান। তিনি রায়পুরে অথবা ভোপালে একটা জনসভা করতে উদ্যোগী, সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আহ্বান জানাচ্ছেন। ত্রিপুরার বিরোধী শক্তি চাইছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসুন। সেখানেও কংগ্রেস-তৃণমূল মিলে একটা ঐক্যের ডাক দিক, এমনটা অনেকে চাইছেন। বিজেপি বা নরেন্দ্র মোদি যে পরাস্ত হন না, হতে পারেন না এবং অমিত শাহ-র মতো একজন ‘চাণক‍্য’ পরাজয়ে বিশ্বাস করেন না- এই মিথ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাঙতে পেরেছেন। সেই কারণেই তাঁকে এখন সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে মোদিবিরোধী রাজনীতির সামনের দিকে নিয়ে এসে সক্রিয় হতে চাইছেন অনেকে।

পিকে তামিলনাড়ুতে স্ট‍্যালিনের জন্য কাজ করেছেন, সেখানেও স্ট‍্যালিন বিপুলভাবে জিতেছেন। তিনি ক‍্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংয়ের জন্য কাজ করেছেন, পাঞ্জাবে ক‍্যাপ্টেন মুখ‍্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। এখনও পাঞ্জাবের সঙ্গে তিনি ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত এবং পাঞ্জাবে কংগ্রেসের সংকট মেটাতে পিকে-ই ফরমুলা দিচ্ছেন। আবার এই পিকে বিহারেও সক্রিয় ছিলেন। তিনি এখন অখিলেশ যাদবের সঙ্গে উত্তরপ্রদেশেও কাজ করছেন। উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন প্রান্তে অখিলেশ ‘খেলা হবে’ স্লোগান দিয়ে পোস্টার দিয়েছেন। এই পিকে দিল্লিতে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের হয়ে কাজ করেছেন, যেখানে বিজেপি লোকসভার সব আসন দখল করেছিল, সেখানে অরবিন্দ কেজরিওয়াল নির্বাচনে জিতে মুখ‍্যমন্ত্রী হয়েছেন।

এই পরিস্থিতিতে পিকে-র রাজনৈতিক গেম প্ল‍্যান কী?

পিকে একমাসের মধ্যে শরদ পাওয়ারের সঙ্গে তিনবার বৈঠক করলেন। শরদ পাওয়ার দিল্লিতে একটা চা-চক্র করলেন। সেই চা-চক্র দেখে অনেকে মনে করতে শুরু করলেন, তৃতীয় ফ্রন্ট বা চতুর্থ ফ্রন্ট তৈরি হচ্ছে। পিকে বললেন, এমন কোনও ফ্রন্ট তৈরি হচ্ছে না। এটা নেহাত একটা চা-চক্র এবং এখানে যশবন্ত সিন্‌হার উদ্যোগে বিভিন্ন মহলের মানুষ মত-বিনিময় করেছেন। শরদ পাওয়ারের বাড়িতে এই বৈঠকটা হয়েছিল।

আমার মনে হয়, এসবই হল ‘আরম্ভর আগের আরম্ভ’। সন্ধের প্রদীপ জ্বালানোর আগে বিকেলে সলতে পাকানোর প্রক্রিয়া, যা পিকে শুরু করে দিয়েছেন। তিনি জল মাপছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আগে দিল্লি পৌঁছে গিয়ে বোঝার চেষ্টা করছেন, কীভাবে এগনো যায়। শরদ পাওয়ারের বৈঠকে সুধীন্দ্র কুলকার্নি থেকে জাভেদ আখতার- সকলকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। এরকম একটা পরিস্থিতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২৫ জুলাই দিল্লি পৌঁছচ্ছেন। তার আগে পিকে এসে সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। পিকে জানেন যে, কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে বিরোধী ঐক্য যদি হয়, তাহলে তা নরেন্দ্র মোদির জন্য ‘সেফটি ভালভ’ হয়ে যাবে। যদি রাহুল-মমতা ঐক্য না হয়, তাহলে রাহুল গান্ধী নরেন্দ্র মোদির জন্য সেফটি ভালভ হয়ে যাবেন। সুতরাং, সমবেতভাবে কংগ্রেসকে মমতার কাছাকাছি আনার জন্য পিকে কাজ করছেন। হয়তো আগামী দিনে সোনিয়া গান্ধী এবং রাহুল গান্ধীর সঙ্গেও মমতার বৈঠক হবে। সমস্ত বিরোধী নেতাকে এক জায়গায় নিয়ে এসে ‘কনক্লেভ’ আজ নয়তো কাল হবেই। সেই নতুন কোয়ালিশনের নাম ‘তৃতীয় ফ্রন্ট’ বা ‘চতুর্থ ফ্রন্ট’ না-ও হতে পারে, কেননা, এটা পিকে-র কাছে খুব ক্লিশে একটা ধারণা। এই নাম ব‍্যবহার করা মানেই অতীতের সেই সমস্ত তিক্ত অভিজ্ঞতার স্মৃতিচারণ করা। ভারতে মোরারজি দেশাই থেকে শুরু করে দেবগৌড়া-গুজরাল, চরণ সিং থেকে শুরু করে চন্দ্রশেখর, এমনকী ভি পি সিং- কোনও কোয়ালিশন-ই কিন্তু স্থায়ী হয়নি। সুতরাং, এইরকম রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে মমতা যদি ‘সংবিধান’ হন, তাহলে পিকে যেন তাঁর ‘প্রস্তাবনা’। অর্থাৎ, প্রস্তাবনা নির্মাণের কাজ চলছে। মূল সংবিধানের কাজ হয়তো তারপর হবে।

অনেকে বলছেন যে, পিকে কি নিজে ভেবেছিলেন যে, মমতার আসনসংখ্যা ২০০ হয়ে যাবে? এটা অনেকটা ‘ঝড়ে বক মরে, ফকিরের কেরামতি বাড়ে’-র মতো নয় তো? বিজেপির ভুল রণকৌশলে মমতার জয়লাভ হয়েছে। এখানে পিকে-র ভূমিকা কী আছে? জয়ের সবথেকে বড় কৃতিত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের- এতে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু তিনি ক’টা আসনে জিতবেন, ২০০ না ২৫০, তা ঘোষণা করা তো পিকে-র আসল কাজ নয়। পিকে বারবার বলেছেন যে, বিজেপি ১০০-এ পৌঁছতে পারবে না এবং মমতা সরকার গঠন করবেন। পিকে রাজনৈতিক জ্যোতিষী নন, তবে তিনি পশ্চিমবঙ্গে দশ বছরের যে অ্যান্টি-ইনকামবেন্সি- তাকে নিউট্রাল করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘ডটার অফ বেঙ্গল’ ভাবমূর্তিতে প্রতিষ্ঠিত করার রণকৌশল নিয়েছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজস্ব জনপ্রিয়তার ভিত্তিতে সেই সাফল্য এসেছে। এখন এই সাফল্য তিনি সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে পাবেন কি পাবেন না- তা আগামী দিন বলবে।

এখনও ২০২৪-এর আগে বেশ কিছুটা সময় বাকি। তার আগে ২০২৩-এর উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের কী ফল হয়, তাও একটা বিরাট প্রশ্ন। বিধানসভা নির্বাচন এবং লোকসভা নির্বাচন এক নয়। ২০২৪-এ মোদি থাকবেন কি থাকবেন না- এই প্রশ্নে ভোট হবে। দেশের অর্থনৈতিক বিপর্যয় তিনি কতটা মোকাবিলা করতে পারেন, প্রতিষেধক নীতিতে তিনি কতটা সংস্কার আনতে পারেন, করোনা বিপর্যয়ের মোকাবিলা কতটা করতে পারেন, বিদেশনীতি এবং আফগানিস্তানে তালিবানি উত্থানের মাধ‍্যমে নিরাপত্তার যে অভাববোধ ভারত এবং এই উপমহাদেশে তৈরি হচ্ছে- সেই সবকিছুতে মোদির ভূমিকা কী হবে দেশে এবং বিদেশে, তার উপরও অনেক কিছু নির্ভর করবে।

ইভেন্টের একটা নিজস্ব মোমেন্টাম থাকে। ঘটনাপ্রবাহ কোন দিকে যায়, সেদিকে এখন আমাদের নজর রাখতে হবে। সন্দেহ নেই যে, এই মুহূর্তে প্রশান্ত কিশোর ওরফে পিকে একটি অত‍্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। তিনি কী করছেন, কী করতে পারেন বা পারেন না- সেদিকে কিন্তু সকলের নজর।

[আরও পড়ুন: সিপিএময়ের দুঃসময়, বাংলায় কেন ভরাডুবি বামেদের?]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement