‘টেলিগ্রাম’-এর কর্ণধার পাভেল ভালেরিভিচ দুরোভের বিরুদ্ধে ফরাসি গোয়েন্দাকারীদের অভিযোগ– তঁার অ্যাপ শুধু আমজনতা নয়, সন্ত্রাসবাদী এবং মাদক পাচারকারীরাও ব্যবহার করে। এদিকে, ইউক্রেন যুদ্ধে রুশ সৈনিকদের আত্ম-প্রকাশনা ও সমর কৌশলের প্রধান মাধ্যম টেলিগ্রাম। দুরোভকে রক্ষার মাধ্যমে কি আত্মরক্ষায় তৎপর হবে রাশিয়া? লিখছেন কিংশুক বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোশ্যাল মিডিয়ার দুনিয়ায় ঝড় উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে: সামাজিক দায়বদ্ধতা আর ব্যক্তি-স্বাধীনতার সীমারেখা নিয়ে বিতর্ক তুলে আদতে কি সোশ্যাল মিডিয়ায় লাগাম পরানোর চেষ্টা চলছে? আপাতত এই ঝড়ের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ‘টেলিগ্রাম’ অ্যাপ।
প্যারিসের অনতিদূরে লে বুর্জো বিমানবন্দরে ব্যক্তিগত বিমান থেকে নামামাত্র টেলিগ্রামের কর্ণধার পাভেল ভালেরিভিচ দুরোভকে গ্রেফতার করে ফরাসি পুলিশ। তঁার বিরুদ্ধে টেলিগ্রামে নানা ধরনের শিশু পর্নোগ্রাফি, অবৈধ লেনদেন, আপত্তিকর পোস্ট অবাধে চলতে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, কর্তৃপক্ষকে তথ্য জানানোর অসম্মতিরও। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ডিজিটাল পরিষেবা আইনের পরিপন্থী কাজ টেলিগ্রাম করছে বলেও অভিযোগ। অন্যদিকে, প্রশ্নপত্র ফঁাস, শেয়ারবাজারে গন্ডগোল প্রভৃতি অভিযোগে ভারতেও টেলিগ্রামের কাজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
টেলিগ্রামের অন্দরমহল
অভিযোগ নিয়ে বিশদে বলার আগে টেলিগ্রামের পদ্ধতিটা একটু জানা যাক। ১৯৮৪ সালের ১০ অক্টোবর তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের লেনিনগ্রাদে জন্মানো পাভেল দুরোভ ২০১৩ সালে সামাজিক মাধ্যম ‘টেলিগ্রাম মেসেঞ্জার’ পরিষেবাকে আইওএস (অ্যাপেল-এর মাধ্যম) ও অ্যানড্রয়েড মাধ্যমে নিয়ে আসেন। দাদা নিকোলাই সঙ্গী হন। পাভেল দেখতে শুরু করেন অ্যাপটির আর্থিক আর প্রশাসনিক দিক, নিকোলাই দেখেন প্রযুক্তিগত দিক। আদতে টেলিগ্রামের এই এনক্রিপ্টেড মেসেজ পরিষেবা
(সাংকেতিক বর্ম দিয়ে রক্ষিত মেসেজ) নিয়েই যত বিবাদের সূত্রপাত।
হোয়াটসঅ্যাপের একটি গ্রুপে যেখানে সর্বাধিক ১০২৪ জনকে সংযুক্ত করা করা যায়, সেখানে টেলিগ্রামে সংযুক্ত করা যেতে পারে ২ লক্ষ মানুষকে! অভিযোগ, এর ফলে ব্যাপকভাবে ভুয়া খবর ও অন্যান্য আপত্তিকর তথ্য ছড়ানোর সুযোগ থাকে। শুধু তাই নয়। হোয়াটসঅ্যাপে যেমন নিজে থেকেই মেসেজ এনক্রিপ্টেড থাকে, টেলিগ্রামে তা নয়। এখানে ব্যবহারকারীকে এনক্রিপশন চালু করতে হয়। এতেই শেষ নয়। গ্রুপ চ্যাটে কোনও গোপনীয়তা থাকে না কারণ সেখানে এনক্রিপশন চালু করা যায় না। ফরাসি গোয়েন্দাদের অভিযোগ, এই সামাজিক মাধ্যম শুধু আমজনতা নয়, সন্ত্রাসবাদী এবং মাদক পাচারকারীরাও ব্যবহার করে।
‘সিসিয়া স্ট্যাটিস্টিক্স’-এর পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ১৫৫টি দেশে মাসে গড়ে ৮০ কোটি মানুষ টেলিগ্রাম ব্যবহার করেছে। তার মধ্যে শীর্ষে ভারত। এদেশে ১০ কোটি ৪০ লক্ষ মানুষ এই অ্যাপ ব্যবহার করে। এরপর একে-একে রয়েছে রাশিয়া (৩ কোটি ৪৪ লক্ষ), ইন্দোনেশিয়া (২ কোটি ৭২ লক্ষ), আমেরিকা (২ কোটি ৬৮ লক্ষ), ব্রাজিল (২ কোটি ১৯ লক্ষ), মিশর (১ কোটি ৪৮ লক্ষ), ভিয়েতনাম (১ কোটি ১৮ লক্ষ), মেক্সিকো (১ কোটি ১৬ লক্ষ), ইউক্রেন (১ কোটি ৭ লক্ষ) আর তুরস্ক (৯৮ লক্ষ)। দুরোভের দাবি, চলতি বছরের মধ্যেই গ্রাহক সংখ্যা ১০০ কোটি ছোঁবে টেলিগ্রাম।
টেলিগ্রাম অবশ্য দুরোভের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মানতে চায়নি। সংস্থার প্রশ্ন, অ্যাপটিতে যেখানে কোটি কোটি ব্যবহারকারী রয়েছে, কীভাবে সেখানে তাদের সবার কাজের জন্য একা দুরোভকে কাঠগড়ায় দঁাড় করানো যায়? তাদের আরও প্রশ্ন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ডিজিটাল পরিষেবা আইন পুরোপুরি মেনে চলে টেলিগ্রাম। আবার, এই ইউরোপীয় ইউনিয়নের ডিজিটাল পরিষেবা আইনের অন্তর্গত ‘ভেরি লার্জ অনলাইন প্ল্যাটফর্ম’ (ভিএলওপি) আওতায় তাদের সংস্থা পড়ে না বলে টেলিগ্রামের দাবি। মাসে গড়ে সাড়ে ৪ কোটি মানুষ অ্যাপ ব্যবহার করলে সেটা ভিএলওপির পরিধিতে পড়ার কথা। টেলিগ্রামের তরফে বলা হয়েছে, তাদের অ্যাপ ইউরোপে গড়ে মাসে ৪ কোটি ১০ লক্ষ বার ব্যবহৃত হয়েছে। সংস্থার দাবি খতিয়ে দেখার দায়িত্ব পড়েছে ‘বেলজিয়ান ইনস্টিটিউট অফ পোস্ট অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন’-এর উপর। চূড়ান্ত হিসাব তারাই করবে।
তবে মূলত যে-ক্ষেত্রে টেলিগ্রাম অসুবিধায় পড়তে পারে, তা হল– মাদক পাচারকারীদের গ্রুপ চ্যাট। জার্মানির পুলিশ ২০২০ সালেই এরকম ন’টি গ্রুপের সদস্যদের ধরেছে। তাদের মতে, অনেক সময়ই ডার্ক ওয়েবের পরিবর্তে টেলিগ্রাম ব্যবহার করে এই কাজ করা হচ্ছে। লিথুয়ানিয়ার রিগাতে জানুয়ারি মাসেই টেলিগ্রাম ব্যবহারকারী ৭৮ জন মাদক পাচারকারীকে ধরা হয়েছে। নেদারল্যান্ডসে এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ২১টি গ্রুপে ২৫ লক্ষ মাদকের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। মার্চে ডাচ বিচারবিভাগীয় মন্ত্রী সে-দেশের সংসদে জানান, এই ধরনের অপরাধ যাতে সংগঠিত হতে না পারে তা দেখার দায়িত্ব মূলত সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপেরই।
এর উপর ভারত, ইংল্যান্ড, নরওয়ে, স্পেন, থাইল্যান্ড-সহ ১২টি দেশ তাদের দেশে বিভিন্ন সমাজবিরোধী কাজে টেলিগ্রাম অ্যাপ অপব্যবহারের অভিযোগ খতিয়ে দেখছে। যেমন– টেলিগ্রাম ব্যবহার করে হিংসা ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে ইংল্যান্ডে। পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফঁাস থেকে শেয়ার বাজারে গন্ডগোল করার মূলে টেলিগ্রাম রয়েছে– ভারতে অভিযোগ উঠেছে। ইরান আর চিনে আবার সরকার-বিরোধী স্বরের মঞ্চ হয়ে দঁাড়ানোর জন্য টেলিগ্রাম ‘ব্লক্ড’।
ইউক্রেন যুদ্ধের দোসর?
তবে দুরোভের গ্রেফতারিকে সোশ্যাল মিডিয়ার উপর রাষ্ট্রের কর্তৃত্ব ফলানোর চেষ্টা হিসাবেও অনেকে দেখছে। তাদের মতে, বহু ক্ষেত্রে রেডিও, টিভি, সংবাদপত্রের মতো গণমাধ্যমের উপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে রাষ্ট্রশক্তি তার প্রভাব বিস্তার করেছে। সোশ্যাল মিডিয়াই একমাত্র মাধ্যম যেখানে এখনও পর্যন্ত আমজনতা স্বাধীনভাবে নিজেদের মত প্রকাশ করতে পারে। ফলে, এই মাধ্যমের উপর ছড়ি ঘোরানোর জন্য অনেক শক্তিই উদ্গ্রীব।
দুরোভের গ্রেফতার কিন্তু অন্য প্রশ্নও তুলছে। রুশ সংসদের নিম্নকক্ষ দ্যুমার চেয়ারম্যান ভাচেসলাভ ভোলোদিন তো সরাসরি ওয়াশিংটনকে কাঠগড়ায় তুলেছেন। তঁার দাবি, হাতেগোনা যে কয়েকটা সোশ্যাল মিডিয়া আমেরিকার হাতে নেই, তার মধ্যে টেলিগ্রাম অন্যতম। ফলে যেনতেনপ্রকারেন তার দখল নিতে মরিয়া মার্কিনিরা। তবে মস্কোর এই প্রতিক্রিয়ায় পশ্চিমি দেশগুলো খানিকটা বিস্মিতও। কারণ এত দিন দুরোভকে ক্রেমলিন মোটেই সুনজরে দেখেনি। এর ইতিহাস জানতে গেলে, বছর আঠারো
পিছতে হবে। সেন্ট পিটার্সবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় দুই ইজরায়েলি সহপাঠী ইৎজ্চাক মিরিলাশভিলি আর লেভ বিনজুমভিচ লেভিয়েভকে সঙ্গে নিয়ে দুরোভ ২০০৬ সালে ‘কোনতাক্তে’ (Vkontakte) বা সংক্ষেপে ‘ভিকে’ নামে একটি সামাজিক মাধ্যম খোলেন। দাদা নিকোলাই দেখেন এর প্রযুক্তিগত দিকটা।ক্রমে জনপ্রিয়তায় রাশিয়ায় সব সামাজিক মাধ্যমকে ছাপিয়ে যায় ভিকে। গন্ডগোলের শুরু হয় এরপরই। ২০১১ সালে রুশ সংসদ দ্যুমা-র নির্বাচনে বিরোধী নেতাদের পোস্ট সরানোর জন্য শাসক দল চাপ দেয়। দুরোভ রাজি হননি। শেষমেশ ২০১৪ সালে নিজেরই হাতে গড়া সংস্থা ভিকে থেকে দুরোভ বহিষ্কৃত হন। দুরোভ এর জন্য সরাসরি মস্কোকে দায়ী করেন।
ক্রেমলিনের সঙ্গে দুরোভের সম্পর্কের ফের অবনতি হয় যখন ২০১৮ সালে টেলিগ্রামকে রাশিয়ায় নিষিদ্ধ করা হয়। অনেক টানাপোড়েনের পর ২০২০ সালে সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। তবে ক্রেমলিনের এই হঠাৎ ভোলবদলে রুশ বিশেষজ্ঞরা কিন্তু খুব একটা অবাক হননি। তঁাদের মতে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে যুদ্ধবাজ রুশ ব্লগারদের মূল ঘাঁটি হয়ে দঁাড়িয়েছে টেলিগ্রাম। এমনকী, রণাঙ্গনে সেনাদেরও খবর জানার জায়গা হয়েও উঠেছে এই অ্যাপ। সেনারা অনেক সময় লাইভে এসে আশপাশে ঘটে যাওয়া যুদ্ধের বর্ণনা পর্যন্ত দিচ্ছে। ফলে রুশ প্রোপাগান্ডার কাজটা অনেকটাই অজান্তে টেলিগ্রামে হয়ে চলেছে। কোনও কোনও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক তো পরিহাস করে বলছেন, দুরোভের গ্রেফতারি আদতে রুশ সামরিক বাহিনীর মুখ্য জনসংযোগ কর্তার ধরা পড়া। অনেকে আবার এই ভয়ও পাচ্ছেন, যুদ্ধ নিয়ে যেরকম খুল্লম খুল্লা আলোচনা বিভিন্ন গ্রুপে হয়েছে, তাতে টেলিগ্রাম পশ্চিমি হাতে পড়লে অনেক সামরিক গোপনীয়তা প্রকাশ্যে চলে আসতে পারে।
ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও চেষ্টা করছেন টেলিগ্রামকে ব্যবহার করার, কিন্তু রুশ প্রোপাগান্ডার পাশে কিভ এখনও ঠিকমতো দঁাড়িয়ে উঠতে পারেনি। এই পরিস্থিতিতে ক্রেমলিনের শঙ্কা হতেই পারে, দুরোভের গ্রেফতারি ঘিরে। কারণ মুষ্টিমেয় যে-কয়েকটি আন্তর্জাতিক সামাজিক মাধ্যমে তারা যুদ্ধের পক্ষে বলতে পারে তার মধ্যে টেলিগ্রাম অগ্রগণ্য। ফলে সেখানে কোনও জটিলতা তৈরি হলে মস্কোর তো টনক নড়বেই।। ক্রেমলিন এখন দুরোভকে আইনি সহায়তা দেওয়ার কথাও বলছে। একই কথা বলছে দুবাইও।
স্বাধীনতাই মোক্ষ
১,৫৫০ কোটি ডলারের মালিক দুরোভের দাবি, তিনি ব্যক্তি-স্বাধীনতাকে সবার উপর ঠঁাই দেন। এনক্রিপশনের চাবিকাঠি তিনি ক্রেমলিনের হাতে তুলে দেননি, তাই একসময় নিজের জন্মভূমি রাশিয়া থেকেই বহিষ্কৃত হন। স্বাধীনতার খোঁজে টেলিগ্রামের সদর দফতর বার্লিন থেকে সরিয়ে দুবাইয়ে নিয়ে আসেন। রুশ ধনকুবের নিজে রাশিয়া, ফ্রান্স, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি আর সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিসের নাগরিক। সেটাও বিশ্বনাগরিত্বের ‘প্রতীক’ বলে দাবি করা হয়।
অতঃকিম্
শেষ খবর, দুরোভ জামিন পেলেও তিনি ফ্রান্স ছাড়তে পারবেন না। বিশেষজ্ঞদের মতে, দুরোভের এখন আদতে ‘শ্যাম রাখি না কূল রাখি’ অবস্থা। পুলিশি তদন্ত দীর্ঘায়িত হলে সমস্যা হবে ভবিষ্যতে অর্থ জোগাড় করতে। কারণ এ ব্যাপারে দুরোভকে ইউরোপের উপরই মূলত ভরসা করতে হবে। কিন্তু পরিস্থিতি যা, তাতে ইউরোপের তদন্ত এজেন্সিগুলো টেলিগ্রামের গ্রুপ চ্যাটগুলোর নাগাল পেতে চাইছে। কারণ তাদের মতে, বিভিন্ন সংগঠিত অপরাধের শিকড় রয়েছে ওখানে। কিন্তু সেটা করলে টেলিগ্রামের বিশ্বাসযোগ্যতায় যে বড় রকমের প্রশ্নচিহ্ন উঠবে তা-ও দুরোভের অজানা নয়। অথচ, টেলিগ্রামের আকর্ষণের জায়গাই হল এই ‘স্বাধীনতা’। কারণ একদিকে যেমন বলা হচ্ছে, পর্নোগ্রাফি পোস্টে নিষেধাজ্ঞা আছে, তেমনই গ্রুপে কী পোস্ট করা হচ্ছে তাতে বিধিনিষেধ নেই। বাইরের কারও কাছে কোনও তথ্যও না দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। দুরোভকে বলা হয় ‘রুশ জুকারবার্গ’। এহেন দুরোভের গ্রেফতারির খবর শুনে ‘এক্স’-এর কর্ণধার ইলন মাস্ক বলেছেন, ‘ব্যক্তিস্বাধীনতা আর নিরাপত্তার মধ্যে ভারসাম্য রাখাই এই ডিজিটাল জমানার সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।’
(মতামত নিজস্ব)
লেখক সাংবাদিক
[email protected]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.