Advertisement
Advertisement
Abhishek Banerjee

হাতে দলের ঝাণ্ডা, বাংলা জয়ের পথে লক্ষ জনস্রোতের মালিক

রাজপথ পেরিয়ে হেঁটে আসা বছর ৩৬-এর যুবক এখন লক্ষ জনস্রোতের মালিক।

Abhishek Banerjee the man who captured the masses | Sangbad Pratidin
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:May 10, 2023 1:28 pm
  • Updated:May 10, 2023 1:28 pm  

আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সকে পইপই করে বুঝিয়ে দিলেও এই ছবিটা আঁকতে পারবে না। কারণ মানুষের ক্যানভাসে যে ছবি রোজ ধরা পড়ছে তাতে নীল আকাশ আর সবুজের ব‌্যাকড্রপে ছোট ছোট বসতি, গলিপথ, রাজপথ পেরিয়ে হেঁটে আসা বছর ৩৬-এর যুবক এখন লক্ষ জনস্রোতের মালিক। সেই স্রোত ক্রমে সমুদ্র, প্লাবন থেকে সুনামির চেহারা নিচ্ছে। কলমে সুমন সেনগুপ্ত

 

Advertisement

প্রথম যেদিন কোচবিহারের মাটিতে যেদিন অভিষেক পা রেখেছিলেন, সেদিনের সঙ্গে রোজ ফারাক তৈরি করে বাংলার মাটির নিগড়ে পুঁতে নিয়ে চলেছেন তাঁর আত্মার ভিত। বাংলার উত্তর থেকে দক্ষিণের বৈচিত্রের জলহাওয়ায় তার শরীর পুষ্ট হচ্ছে। আর মনে যোগাচ্ছে বাংলার মানুষের সমর্থনে গড়ে তোলা অপরিসীম বল। যার জোরে বাড়ছে তার মাংসপেশির দৃঢ়তা। স্থিতিশীলতা, ধৈর্য আর মানব সম্পদকে সঙ্গে নিয়ে পৃথিবী কঠিন হয়ে উঠছে তার মন। আর নিরন্তর ফুলে ফেঁপে ওঠা সেই মানবস্রোতের তরঙ্গের মাঝে দাঁড়িয়ে দলের ঝান্ডাটা শক্ত মুষ্ঠিতে জড়িয়ে মাথার এপার থেকে ওপার দোলাচ্ছেন সেই যুবক, তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের পরিচয়ে যিনি দলের একনিষ্ঠ সৈনিক।

২৪ এপ্রিল থেকে তৃণমূলে নব জোয়ার কর্মসূচি নিয়ে বাংলার উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা কোচবিহারে পা রাখেন অভিষেক। তাঁকে ঘিরে দলের কর্মীদের ভিড় তখন স্রেফ তাঁর কাছে পৌঁছনোর তাগিদে প্রবল উচ্ছ্বাসে মেতে। অভিষেক ঠিক কী করতে চলেছেন তার স্পষ্ট কোনও ছবি তখনও সামনে আসেনি। মানুষ তাঁকে দেখছেন অবাক চোখে। ভিড়ের ব‌্যাস বাড়ছে। অভিষেককে ঘিরে আগ্রহ যতটা, সমীহও সমানুপাতিক।

পরপর সাজানো কর্মসূচি নিয়ে মানুষের অভিযোগ, না পাওয়ার কথা শুনবেন অভিষেক। স্থানীয় দেবতার থানে দুদণ্ড বসবেন। জন সংযোগের ফাঁকে ফাঁকে সভা হবে। সবশেষে রাতের অধিবেশনে ব্লক স্তরের নেতা আর সমাজের কিছু বিশিষ্ট মানুষের মত নেওয়া। গোপন ব্যালটে। সঙ্গে আলাপচারিতা। পুরোটাই নিয়মমাফিক প্রযুক্তি আর প্রক্রিয়ার মিশেলে। কিন্তু সমর্থনের জনস্রোতকে কে কবে নিয়মে বাঁধতে পেরেছে! তাতে যদি মেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো জননেত্রীর ভাইপো তাঁরই পথে নেমে এসে মানুষকে চিরতরে ভালোবাসায় বেঁধে নিতে চাইছে- এমন মূল বিশ্বাস। মিথ থেকে বোধহয় তখন নতুন ভালোবাসার জন্ম হয়।

[আরও পড়ুন: কর্ণাটকে কংগ্রেসের ধার ও ভার ঈর্ষণীয়, ‘হিন্দু’ এককাট্টা হলে বিজেপির পোয়াবারো! শেষ হাসি কার?]

নিজে চোখে দেখলাম, প্রথম আগলটা ভাঙল দিনহাটার বামনহাটের গ্রামে। সেখানেই প্রথম রাতে তাঁবু ফেলে থেকেছিলেন অভিষেক। সকালে বিএসএফের গুলিতে নিহত হওয়া দু’জনের দুটি পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন। তারপর পায়ে হেঁটে কিলোমিটার খানেক পথ গিয়ে গ্রামের মন্দিরে পুজো। মানুষের ভিড়টা তাঁর সঙ্গে চলা শুরু করল। যতটা পারছেন অভিষেক কথা বলছেন সকলের সঙ্গে, অভিযোগ শুনছেন, সমাধান বাতলে দেওয়ার কাজ চলছে। আশীর কাছে বয়স এক বুড়ো সেসব দেখে আচমকা বলে উঠলেন, “এমা এতো ছেলেমানুষ! পথে পথে ঘুরবে? কী সুন্দর ব্যাবহার!” ওপার বাংলার টানে বৃদ্ধের গ্রাম্য মিঠে বোল সেই মুহূর্ত থেকে মানুষের সমর্থনের চেহারায় জারিত হওয়া শুরু করল।

এর পর সংকোচের বিহ্বল ভাঙা শুরু করল জনতা। যেখানে মানুষ সেখানেই থামছেন অভিষেক। তৃণমূলের জেতা এলাকা নয়। তবু সেখানে দঁাড়াচ্ছেন। একেকটা জটলায় মিশে গ্রামের গল্প শুনছেন। পিছনে পড়ে থাকছে গাড়ির কনভয়। অভিষেককে এ বাংলার সবাই চেনে তৃণমূলের দ্বিতীয় সর্বভারতীয় পদাধিকারী হিসাবে। কানে কানে খবর রটছে সেই অভিষেক নিজে এসেছেন, মেঠো পথে দাঁড়িয়ে মানুষের ঘরের গল্প শুনতে। কোথাও কোনও নিষেধ নেই। গ্রাম বাংলার যা অন্তরের কথা সেসব অনায়াসে বলা যাবে অভিষেককে! পদের উচ্চতা, জেলার নেতাদের ভিড়, বিজেপির জেতা বিধানসভায় তাদের উসকানির সমস্ত সম্ভাবনাকে পিছনে ঠেলে সব বাধার পাঁচিল ভেঙে অভিষেক এসেছে মানুষের দুয়ারে। গ্রামের সহজ-সরল জীবন দঁাড়িয়ে থাকে স্বচ্ছ বিশ্বাসে। সেই বিশ্বাস জিতে নিয়েছেন অভিষেক। মানুষকে আর কে রোখে!

এইখানে শুরু জনস্রোতের। ম‌্যাজিকের মতো যেখানে স্রোত ক্রমে বেড়েছে মাথাভাঙ্গা, তুফানগঞ্জ পেরিয়ে কুমারগ্রাম, হলদিবাড়ির চা বাগান, চিলাখানা, কালচিনি, ধূপগুড়ি, ক্রান্তি, ওদলাবাড়ি, গজলডোবার মানুষের বসতির ভিতর দিয়ে। একেক পাশে কখনও পড়েছে অসম সীমান্ত, কোথাও ভুটান যাওয়ার রাস্তা। সেসব সীমান্তের বিপদ ক্ষণে ক্ষণে মানুষের মন নরম করে দেয়। সমস্ত চোখ রাঙানিকে পাল্টা হুঙ্কার শানিয়ে সেই নরম মনেই ভালোবাসার, আগলে রাখার কঠিন বীজ পুঁতে এগিয়ে চললেন অভিষেক। বিজেপির বিরুদ্ধে বরাবরের অভিযোগ, ভাগাভাগির। বিজেপির বিধায়ক, সাংসদদের ভোটে জিতিয়ে মন্ত্রী করেও যে আশঙ্কার মেঘ গভীর হয়েছে উত্তরের মানুষের মনে। বাংলা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে শেষে আলাদা রাজ‌্য! সেই আশঙ্কা, শাসানিকে চ‌্যালেঞ্জ জানিয়ে বাস্তবটা মানুষকে বুঝিয়ে পথে নেমে দু’হাত ভরে মানুষকে ছুঁয়েছেন। তঁাদেরও ছুঁতে দিয়েছেন। জনতা অবাক হয়েছে এমন করে তো কেউ সাহস জোগায়নি! সেই জনতার টানেই মানুষের মন জয় করে হেঁটে চলেছেন রাজপথ।

প্রথম যেদিন বাড়ি ছেড়ে বেরোলেন, সেদিনই বলেছিলেন, “কিছু পাওয়ার জন‌্য কিছু কষ্ট করতে হয়। মানুষের কাছে পৌঁছতে হলে, তঁাদের বিশ্বাস অর্জন করতে হলে, এটুকু কষ্ট করতেই হবে।” পথের দু’ধারে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের কোলে-কঁাধে টেনে নিয়েছেন। গাল টিপে আদর করেছেন বৃদ্ধ-বৃদ্ধার। তঁাদের আদরও মেখেছেন মাথা পেতে। নিজের ছেলে-মেয়ে-স্ত্রী, বাবা-মার কথা নিশ্চয়ই মনে পড়েছে। বাবার মন তো!

গ্রামের আলপথ, চা বাগানের ঢালে দাঁড়িয়ে যখন দূর থেকে অভিষেকের গাড়ির কনভয় দেখা গেছে, উথলে উঠে ছুটেছে মানুষ। দীর্ঘ অবহেলায় পড়ে থাকা গ্রামে হয়তো ছোট্ট একটা রাস্তা করে দেওয়ার ঘোষণা করেছেন। উচ্ছ্বাসে হইহই করে উঠেছে ৮ থেকে ৮০। অভিষেক জানতেন এই লড়াই শুধু বিজেপি, কংগ্রেস বা সিপিএমের বিরুদ্ধে নয়। আরও বড় করে বললে মানুষকে ভরসা জুগিয়ে সমস্ত সংকোচ কাটিয়ে ফেলার লড়াই। নির্দ্বিধায় অভিষেক তাই বলেছেন, দলের দ্বন্দ্বের কথা। নিঃসংকোচে মানুষ হুড়োহুড়ি করে এসেছে নিজের পছন্দের মানুষকে প্রার্থী করবে বলে।

তার মধ্যেও গন্ডগোল। যার মূলত দুটো দিক সামনে এসেছে। সভায় মানুষের ভিড়ে মিশে কেউ কেউ চেয়েছেন নিজের নামে ১০-১২টা বেশি ভোট ফেলাতে। মানুষকে যে সুযোগ অভিষেক নিজে দিতে এসেছেন, সেখানে ওইসব হীন কাজ মানুষ করতে দেবে কেন? তাতে কিছু অতি উৎসাহীর জন্য গোলমালের সূত্রপাত। বিরোধীদের নানা ইন্ধনও ছিল বলে অভিযোগ। মানুষের হাতে মানুষের পঞ্চায়েত গড়ার যে ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে, সেখানে আর কোনও বাধা থাকে না। সন্ধ‌্যার অধিবেশনে উল্টোটা। বুথ সভাপতি, অঞ্চল কমিটির সদস্য আর সমাজের বিশিষ্টদের নিয়ে ভোটাভুটি। স্বাভাবিকভাবেই নানা গোষ্ঠীর নেতা মুখোমুখি। ফল কিছু বিক্ষিপ্ত অশান্তি। চোরা স্রোতের মতো লুকিয়ে থাকা এই দ্বন্দ্বের চেহারাটাই তো দেখতে চাইছিলেন অভিষেক। ১০০ শতাংশ সফল। প্রয়োজনমতো যেখানে পেরেছেন ওষুধ দিয়েছেন। দলীয় নেতৃত্ব পথে নামিয়েছে সমস্ত মেশিনারিকে।

এই ছবিই আরও আগ্রহ বাড়িয়েছে মানুষের মধ্যে। বিজেপির ভোটবেস ততক্ষণে খানখান। বাকি বিরোধীদের কেউই অভিষেকের এই ছক ধরতে পারেনি। ফল, সফর যখন কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ির জঙ্গল, চা বাগান পেরিয়ে মফস্বলের দিকে ঢুকছে মানুষের অংশীদারি বাড়ছে স্রোতের মতো। সমর্থনের স্রোত সেসব। সেই স্রোত বঁাধ ভাঙতে দেখলাম উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর আর ইটাহারে। সভায় যাওয়ার পথ আগলে দঁাড়িয়ে অগণিত মানুষ। বাধ‌্য হয়ে গাড়ির কনভয় থামিয়ে গাড়ির ছাদে উঠে দু’হাত বাড়ালেন অভিষেক। সমর্থনের উচ্ছ্বাসও বঁাধ ভাঙল। গাড়ির ছাদের দঁাড়িয়েই বক্তৃতা রাখলেন। মালদহে সেই বঁাধভাঙা উচ্ছ্বাস তঁাকে গাড়ির ছাদ থেকে সটান লাফে নামিয়ে আনল। কাণ্ড দেখে প্রতে‌্যকে বিস্মিত! শেষে দস্তুর হয়ে গেল, গাড়ির ছাদে উঠেই তিনি স্রোতে ভেসে চলা মানুষের সঙ্গে গা ভাসাবেন।

অন‌্যদিকে, পরপর সভা থেকে মানুষের সঙ্গে সরাসরি মত বিনিময় করে মন বুঝে নিচ্ছেন অভিষেক। কন্যাশ্রী পাচ্ছেন? লক্ষ্মীর ভান্ডার? প্রবল চিৎকারে শোনা যাচ্ছে ‘হ্যাঁ’। যেই ১০০ দিনের কাজের টাকা কিংবা আবাসের কথা তুলছেন, দিল্লির বিরুদ্ধে বিদ্রোহের চড়া সুর উঠছে। এটাই তো চেয়েছিলেন। বাংলার জমি বুঝে নিয়ে দিল্লির বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগে ’২৪-এর লড়াইয়ের ভূমি তৈরি করা। যার শুরুটা অভিষেক করবেন বলেছেন এই কর্মসূচি শেষে দিল্লির বুকে ধরনা শুরু করে। সেই রসদ তিনি এখন তুলে নিচ্ছেন মানুষের পায় পায় হেঁটে তাঁদের নিজের শক্তি করে নিয়ে।

সময় যত গড়িয়েছে, দেখা যাবে সভা কমিয়ে জনসংযোগ বাড়িয়েছেন অভিষেক। তার মূল কারণ আরও বেশি করে মানুষের কাছে পৌঁছনো। যে সমর্থন তিনি আগেই পেয়ে গিয়েছেন। দলের বৈঠকেও বলেছেন, “এতো মানুষ আমাদের সঙ্গে। তাঁদের সঙ্গ কখনও ছাড়া যাবে না।” ব্যক্তিগত স্তরে অভিভূত হয়েছেন মানুষের এই সমর্থন পেয়ে। পদ্ম সম্মানে ভূষিত মানুষের দেখা পেলেই তাঁদের পায়ের কাছে নত হয়েছেন। কোনও পুরনো কর্মীর বিপদে তাঁকে কাছে টেনে নিয়েছেন। অজস্র মানুষের স্নেহ আশীর্বাদ হয়ে ঝরে পড়েছে পথে পথে। কারও ভালোবাসার আবদার ফেরাননি। হাতে তার চিহ্ন রয়েছে। গলা ভেঙে গেছে। ডাক্তারের নিষেধ সত্ত্বেও অল্প বিশ্রাম দিয়ে ফের কথা বলেছেন। কেন্দ্রের বঞ্চনা, উত্তরের জেলা নিয়ে বাংলা ভাগের চক্রান্ত নিয়ে সরব হয়েছেন জনতার মাঝে দাঁড়িয়ে। মালদহ, মুর্শিদাবাদে যখন এসেছেন, তখন আবার আক্রমণের অভিমুখ বদলে কংগ্রেসকে নিশানা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ তুলে। আর এত খোলামেলা সেসব তিনি করেছেন, তাতে তঁাকে আরও কাছের করে নিয়েছে মানুষ। ঘরের ছেলেটা যেমন ঘরের অভাব নিয়ে লড়ে, বঞ্চনার কথা বলে পথেও নামে।

মালদহে যখন পৌঁছলেন তখন মমতা বন্দে‌্যাপাধ‌্যায়ও সে জেলায়। সন্ধ‌্যায় অধিবেশন দেখতে গিয়ে ৩০ বছর আগে নিজের জনসংযোগ যাত্রার কথা বললেন। সেসব মিথ। মুখ‌্যমন্ত্রীর সংযোজন, টানা ২ মাস এই কর্মসূচি করা খুবই কষ্টের। কিন্তু অভিষেকের জেদ এই কর্মসূচি টানা করবেন। শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মুখ‌্যমন্ত্রী।

এর মাঝে একটা কথা ফাঁস করা যায়। অভিষেক কাজে কর্মে কর্পোরেট ভাবধারায় বিশ্বাসী হলেও আপাদমস্তক বাঙালি। পাত পেড়ে বসে ভাত, ডাল-ভাজা, মাছের ঝোল, মাংস এসব আর পঁাচজনের মতোই খান। তার সঙ্গে কিন্তু চলে কঠোর শরীরচর্চা। নিজেও বলেন যে, এটাই তাঁর কাজে অফুরান এনার্জি জোগায়। ময়নাগুড়ির দোমোহনির রাজবংশী পাড়ায় অবশ্য অভিষেক হালকা লাঞ্চ করেছিলেন। তার কারণ বিপুল কর্মসূচির শারীরিক আর মানসিক চাপ। মাঝেমাঝেই আবার সুযোগ বুঝে ভিড় সমেত ঢুকে পড়েছেন চায়ের দোকানে। বসেছেন আড্ডায়। সেখান থেকে সমাজের নানা স্তরের ছবি উঠে এসেছে অভিজ্ঞতায়।

অধিবেশন পর্বই সম্ভবত সবথেকে কঠিন। দিনভর ঠাসা কর্মসূচি সেরে যেখানে বিশ্রামের দরকার, অভিষেক সেখানে এসে বড় একটা ক্লাস নিচ্ছেন। তার সঙ্গে চলছে ভোটপর্ব। কখনও সেটা শুরু হতে হতে রাত হয়ে গেছে। ক্লাস কিন্তু শেষ করেই ছেড়েছেন। রাতের খাওয়া শেষ করতে করতে আরও দু’-একটা দলীয় মিটিং, পরের সূচিতে চোখ বোলানো, দিল্লি, রাজ্য, দল, রাজনীতির হালচাল জেনে নেওয়া। সঙ্গে বিগত ভোটাভুটির ফল দেখে নেওয়া। সারাদিনের খবরে এক ঝলক নজর। এতসব সারতে সারতে রাত গড়িয়েছে ৩টের দিকে।

রাতের ঘুম সেরে আবার পরদিন সকাল থেকে সফর শুরু। এই একই রুটিনে টানা ২ মাস এটা করবেন অভিষেক। স্বভাবতই যে কেউ এই রুটিনে হাঁফিয়ে উঠবে। কিন্তু অভিষেককে ঠেলে নিয়ে চলছে সেই মানুষের ভিড়। যাঁদের মাঝে দাঁড়িয়ে তিনি দলের ঝান্ডাটা বিপুল বেগে মাথার উপর দোলাচ্ছেন। প্লাবনের মতো জনস্রোত বয়ে নিয়ে চলেছে তাদের সেনাপতিকে। যে জনতাকে ভালোবাসায় উপার্জন করেছেন, চিরতরে তাঁদের সমর্থনকে জীবনের আশিষ করে এগিয়ে চলেছেন অভিষেক। যে পথের শেষে বড় ’২৪-এর লড়াই। যার প্রস্তুতির নরম কাদামাটি গড়েপিটে নিয়ে নিশ্চিত কঠিন নতুন ধাঁচে অভিষেক গড়ে উঠবেন নিজেও।

(মতামত নিজস্ব)

[আরও পড়ুন: কালজয়ী সমরেশের উপন্যাস ‘উত্তরাধিকার’! পাঠকের সঙ্গে আলাপ ‘মৌষলকালে’]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement