সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তাঁর চোখের সামনে এখনও জ্বলজ্বল করছে দেশভাগের স্মৃতি। জীবনে দু’বার উদ্বাস্তু হওয়ার যন্ত্রণা ভোগ করেছেন দিল্লির কালীতারা মণ্ডল। সিআর পার্কের বাসিন্দা ১১১ বছরের সেই কালীতারা দিল্লির বয়স্কতম ভোটার। জন্ম বাংলাদেশে, বঙ্গভঙ্গের তিন বছর পরেই। আজ অবধি কোনও নির্বাচনে তিনি ভোট দেননি, এমনটা হয়নি। তাঁর জন্য বিশেষ ব্যবস্থাও রেখেছে দিল্লি নির্বাচন কমিশন। বিধানসভা নির্বাচনের আগে সংবাদসংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কালীতারাদেবী বলেন, “আমার এখনও মনে আছে, আগে হাতের আঙুলে কালি লাগিয়ে ব্যালট পেপারে ভোট দিতাম। তারপরে EVM এল।” শনিবার তিনি গ্রেটার কৈলাস বিধানসভা কেন্দ্রের সিআর পার্কের SDMC প্রাথমিক স্কুলে ভোট দেন।
110-yrs-old Kalitara Mandal, the oldest voter of Delhi, casts her vote for #DelhiElections2020, at SDMC Primary School, Chittaranjan Park in Greater Kailash assembly constituency https://t.co/AVBeQmkrpc pic.twitter.com/sqGFT1kyHy
— ANI (@ANI) February 8, 2020
কালীতারা দেবীর ছেলে সুখরঞ্জনের কথায়, “ভোট দিতে মা মুখিয়ে থাকেন। জ্ঞান হওয়ার পর থেকে কোনওদিন দেখিনি ভোটের দিন মা ভোট দিতে যাননি।” এক নির্বাচনী আধিকারিক জানিয়েছেন, পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার আবেদন করেছিলেন কালীতারা। কিন্তু দেরি হয়ে যাওয়ায় সেই সুবিধা দেওয়া যাচ্ছে না। তবে কালীতারাদেবী ভোট দিতে যাতে কোনও অসুবিধে না হয়, সে ব্যবস্থাও করেছে নির্বাচন কমিশনের দফতর। গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাকি ভোটারদের উদ্দেশে কালীতারাদেবীর বার্তা, “ভোটের দিন বাড়িতে বসে থাকবেন না। নিজের অধিকার প্রয়োগ করুন। এটাই গণতন্ত্র।”
জানা গিয়েছে, কালীতারাদেবীকে নিয়ে সেঞ্চুরি পার করা মোট ১৩২ জন ভোটার রয়েছেন দিল্লিতে। তাঁদের মধ্যে ৬৮ জন পুরুষ ও ৬৪ জন মহিলা। তাঁদের ভিআইপি ভোটারের সম্মান দেওয়া হয়েছে। এর আগে দিল্লির বয়স্কতম ভোটার ছিলেন বচ্চন সিং। গত বছর লোকসভা নির্বাচনের সময় তাঁর বয়স ছিল ১১১। কিন্তু ডিসেম্বর মাসে মারা যান তিনি।
পরিবার সূত্রে খবর, ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পরে পরিবার নিয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসেছিলেন কালীতারা। অন্ধ্রপ্রদেশে গিয়ে ওঠেন তাঁরা। কিন্তু ভিটেমাটির টান উপেক্ষা করে থাকতে পারেননি। তাই কিছুদিন পরে ফের বাংলাদেশে ফিরে যান তাঁরা। কিন্তু সেবারেও বেশিদিন থাকতে পারেননি। ফের ভারতে এসে মধ্যপ্রদেশে আশ্রয় নেন তাঁরা। পরে দিল্লিতে এসে পাকাপাকিভাবে থাকতে শুরু করে মণ্ডল পরিবার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.