সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিল্লি বিধানসভায় ধরাশায়ী গেরুয়া ব্রিগেড। তবে বেশ কিছু কেন্দ্রে আপ-বিজেপির জমজমাট লড়াই হয়েছে। সেই কেন্দ্রগুলির মধ্যে অন্যতম মুস্তাফাবাদ। উত্তরপ্রদেশ সীমান্তের ঘেঁষা এই কেন্দ্রে প্রথম থেকে ২৭ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিলেন বিজেপি প্রার্থী জগদীশ প্রধান। শেষমেশ বড় ব্যবধানে আপ প্রার্থী হাজি ইউনাসের কাছে পরাজিত হয় তিনি। এই আসনে বিশাল ব্যবধানে এগিয়ে থাকার পর, বিজেপি প্রার্থী হারতে পারে তা গেরুয়া নেতৃত্বের কল্পনারও বাইরে ছিল।
৮ ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে বিধানসভা নির্বাচন শেষের পরই বুথ ফেরত সমীক্ষায় ঝাড়ু ঝড়ের ইঙ্গিত মিলেছিল। মঙ্গলবার সকালে পোস্টাল ব্যালট খুলতেই সমীক্ষার পূর্বাভাস মিলতে শুরু করে। বিজেপিকে অনেকটাই পিছনে ফেলে দেয় অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দল। তবে ইভিএমের গণনা শুরু হতে প্রথমদিকে আশার আলো দেখেছিল গেরুয়া শিবির। কিন্তু বেলা গড়াতেই ঝাড়ু ঝড়ের সামনে খড়কুটোর মতো উড়ে গিয়েছিল পদ্ম। তবে বেশ কয়েকটি কেন্দ্রের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলেছিল। তার মধ্যে মুস্তাফাবাদ অন্যতম। এই কেন্দ্র নিয়ে আশায় বুক বেঁধেছিল বিজেপিও। কিন্তু আশাহত হতে হয় তাদের। ২০১৫ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মাত্র তিনটি আসন পেয়েছিল বিজেপি। তারমধ্যে একটি ছিল মুস্তাফাবাদ। অথচ ২০২০ সালের ৮টি আসন ঝুলিতে পুড়লেও হাতছাড়া হল মুস্তাফাবাদ।
কিন্তু এতটা এগিয়ে থাকার পরও কেন এমন ফল করল বিজেপি? পরিসংখ্যান বলছে, এই আসনটি ভীষণই অনিশ্চিত। ২০১৫ সালে মাত্র ৫ শতাংশ ভোটে জিতেছিল বিজেপি। এমনকী গত তিনটি বিধানসভাতেও ভোটের পার্থক্য ছিল পাঁচ শতাংশের আশপাশে। তবে এবার সেই পার্থক্য বেড়েছে অনেকটা। বিধানসভা কেন্দ্রে তফসিলি জাতি ভোটার প্রায় ১১ শতাংশ। আবার অধিকাংশ ভোটার ‘লোয়ার ইনকাম গ্রুপ’-এর। ফলে কেন্দ্রের একাধিক নীতি তাঁরা মানতে পারেনি। স্থানীয় বাসিন্দারা আগেই জানিয়েছিলেন, ২০১৫ সালে মুসলিম ভোটারদের ভোট কংগ্রেস ও আপে ভাগাভাগি হয়েছিল। ফলে ফাঁক তালে বিজেপি জয় পেয়েছিল। কিন্তু এবার আর ভোট কোনও ভাগ হবে না। তাই স্বাভাবিকভাবেই ‘পকেট ভোট’ পেলেও বিজেপি বিরোধী ভোট একজোট হয়েছিল।
আবার কেজরি সরকারের উন্নয়নমূলক কাজে উপকৃত হয়েছেন তাঁরা। খুব স্বাভাবিকভাবেই সেই অংশের পুরো ভোটটাই পেয়েছে আপ। তবে উত্তরপ্রদেশ সীমান্ত ঘেষা এলাকা হওয়ায় যোগীর ক্যারিশমায় নির্বাচন বৈতরণী পার হওয়ার পরিকল্পনা ছিল। তাতেও কার্যত গোচনা পড়ে গেল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.