বোরিয়া মজুমদার: কেকেআরের গত আইপিএল জয়ে বড়সড় ভূমিকা ছিল তাঁর। শুধু তাই নয়, কেকেআর লিডারশিপ গ্রুপের অংশও ছিলেন ভেঙ্কটেশ আইয়ার। কিন্তু নাইট রিটেনশন তালিকায় জায়গা হয়নি তাঁর। যা নিয়ে তিনি কিছুটা আবেগপ্রবণ। আবার একই সঙ্গে আশা করছেন, নিলামে নাইটরা নিশ্চিত তাঁকে পেতে ঝাঁপাবে। সাক্ষাৎকারে যা যা বললেন ভেঙ্কটেশ…
প্রশ্ন: কেকেআরে আপনার সময়টা দারুণ গিয়েছে। ২০২১ সালে আপনি এসেছিলেন যখন, টিমটার অবস্থা খুব খারাপ ছিল। লোকে ধরেই নিয়েছিল যে, কেকেআর পারবে না। প্লে-অফের আগেই ছিটকে যাবে। কিন্তু তার পর আপনি খেলাটা সম্পূর্ণ ঘুরিয়ে দিলেন। ২০২৪ আইপিএলে তো টিমটা চ্যাম্পিয়নই হয়ে গেল। রিটেনশন তালিকায় না থাকায় নিশ্চয়ই আপনার আবেগপ্রবণ লাগছে?
ভেঙ্কটেশ: যদি বলি আবেগ কাজ করছে না, সম্পূর্ণ সত্যি বলা হবে না। কেকেআর আমার কাছে শুধুমাত্র একটা ফ্র্যাঞ্চাইজি ছিল না। পরিবার হয়ে গিয়েছিল। সতীর্থদের সঙ্গে আত্মার সম্পর্ক হয়ে গিয়েছিল। কেকেআরে কম ভালো সময় আমি কাটিয়েছি নাকি? কেকেআরও আমার জন্য প্রচুর করেছে। আমার যা ক্ষমতা, সেটাকে পুরো ব্যবহার করেছে। তাই রিটেনশন তালিকায় যদি নিজের আপনি দেখতে না পান, চোখ তো ভিজবেই। কিন্তু একই সঙ্গে এটাও বুঝতে হবে, কোন প্লেয়ারকে কেন রিটেন করা হয়েছে। যাদের রিটেন করা হয়েছে, তারা প্রত্যেকে সেটার যোগ্য। আশা করছি, নিলাম থেকে কেকেআর আমাকে নেওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করবে।
প্রশ্ন: সেটাই জিজ্ঞাসা করতে যাচ্ছিলাম। কেকেআরের হাতে আর রাইট টু ম্যাচ কার্ড পড়ে নেই। তাই আপনাকে নিতে হলে নিলাম যুদ্ধে নামতে হবে।
ভেঙ্কটেশ: আগে কখনও কথাটা বলিনি। কেকেআর যে বার আমাকে প্রথমে নিলাম থেকে নেয়, তার কোনও ভিডিও ছিল না। কেকেআর আমার জন্য ‘প্যাডল’ তুলছে, সে দৃশ্য দেখিনি আমি। পরের নিলামের সময় আমাকে রিটেন করা হল। তাই আমার জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজির ‘প্যাডল’ তোলার ছবি কখনও দেখিনি আমি। তাই অপেক্ষা করব, আমার জন্য কেকেআরের ‘প্যাডল’ তোলার। সেটা হলে প্রমাণ হবে, ফ্র্যাঞ্চাইজির জন্য আমি কী করেছি।
প্রশ্ন: অনেকেরই খেয়াল নেই যে, গত বার নীতীশ রানা চোট পাওয়ার পর আপনাকে টিমের সহ-অধিনায়ক করা হয়েছিল। সেই দায়িত্ব কতটা নেতৃত্বগুণ বাড়িয়েছিল আপনার?
ভেঙ্কটেশ: বিশাল বাড়িয়েছিল। আমার এখনও মনে আছে গৌতম গম্ভীর আমাকে বলেছিল যে, চার বছর ধরে তুমি আছো এই ফ্র্যাঞ্চাইজিতে। তাই তোমার যদি কোনও বিষয় নিয়ে মতামত থাকে, নির্দ্বিধায় বলবে। সব সময় তোমার মত মর্যাদা পাবে। কী জানেন, এ ধরনের কথাবার্তা শুনলে ভালো লাগে। তার পর দুর্ভাগ্যজনক ভাবে নীতীশের লেগে গেল। আমাকে সহ-অধিনায়ক করে দেওয়া হল। আমার কেরিয়ারের জন্য সেটা বিশাল মুহূর্ত। গৌতম ভাই আমাকে বলেছিল, ভেঙ্কটেশ তুমি যদি স্লিপে থাকো, আর শ্রেয়স যদি ডিপে ফিল্ডিং করে, তা হলে সব সময় দায়িত্ব নিয়ে ফিল্ড বদলাতে। এতে নিজেকে ক্ষমতাসম্পন্ন মনে হয়। এরপর আমি যে ড্রেসিংরুমেই ঢুকি না কেন, কেকেআরই হোক বা মধ্যপ্রদেশ, জেনে ঢুকব যে আমি লিডার। বলছি না, আমিই অধিনায়ক হব। কিন্তু এটা জানব যে, আমার মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে বিচার করা হবে।
প্রশ্ন: আপনি এ মুহূর্তে রনজি ট্রফি খেলছেন। এই মরশুমটা আপনার জন্য মহাগুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আপনার সামনে সুযোগ রয়েছে জাতীয় দলে অলরাউন্ডার হিসেবে প্রত্যাবর্তন করার। ২০২৫ আইপিএল আপনার জন্য ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দরজাও খুলে দিতে পারে।
ভেঙ্কটেশ: সে সমস্ত ভেবে নিজেকে চাপে ফেলতে চাই না আমি। বরুণকে দেখে আমি অনুপ্রাণিত হই। গত তিন বছরের পরিশ্রমের কারণে জাতীয় দলে ফিরে আসতে পেরেছে ও। যদি বরুণ পারে, আমিও পারব। তবে একটা কথা আমি বিশ্বাস করি। শাহরুখ (খান) একবার বলেছিল যে, ভবিষ্যতের কথা ভেবে আমরা অনেক সময়ই বর্তমানকে গ্রাহ্য করি না। সেই দর্শন আমিও মানি। বর্তমানেই মন রাখতে চাই আমি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.