হর্ষিত রানা। ফাইল চিত্র
রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায়: গতবার কেকেআরের আইপিএল জয়ের অন্যতম নায়ক। সেখান থেকে ভারতীয় দলের জার্সি। বর্ডার গাভাসকর ট্রফিতে টেস্ট অভিষেক, আবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিজয়। গত এক বছরে দুনিয়াটা আমূল বদলে গিয়েছে হর্ষিত রানার। কিন্তু তাতেও মাটিতে পা রেখেই চলতে চান নাইট বোলার। আর এই শিক্ষাটা তিনি পেয়েছেন ভারতের কোচ গৌতম গম্ভীরের থেকে। শেখার অধ্যায় এখনও চলছে হর্ষিতের। সেটা কখনও নাইট মেন্টর ডোয়েন ব্র্যাভো, তো কখনও রোহিত-বিরাট। সেই সব অভিজ্ঞতা নিয়ে স্পষ্ট স্বীকারোক্তি হর্ষিতের।
গম্ভীরের কথা যখন উঠলই, তখন স্বাভাবিকভাবেই উঠে আসে ‘পক্ষপাতিত্বে’র অভিযোগ। অনেকেই বলেন, গতবার কেকেআর মেন্টর গম্ভীর না থাকলে নাকি ভারতীয় দলে সুযোগই পেতেন না হর্ষিত। তা সে আইপিএলের পরিসংখ্যান যাই বলুক না কেন। হর্ষিত অবশ্য সেসবে পাত্তাই দিচ্ছেন না। স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, পারফরম্যান্স করেই ভারতীয় জার্সি পরার অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছেন। তিনি বলছেন, “দেখুন, কে কী বলে সেসবে আমার কিছু যায়ে আসে না। আমি পারফর্ম করে সুযোগ পেয়েছি। ফের পারফর্ম করেই উত্তর দেব। আমি শুধু নিজের খেলায় মনোযোগ দিতে চাই।”
অবশ্য এই সফরটা শুরুই হত না, যদি না আরেক রানা থাকতেন। তিনি নীতীশ রানা। গত বছর নাইট রাইডার্সেই ছিলেন। এবার জায়গা পেয়েছেন রাজস্থান রয়্যালসে। নীতীশ রানাই তাঁকে কেকেআরে নিয়ে আসেন। সেই নিয়ে হর্ষিত বলছেন, “ওঁর প্রতি আমি চির কৃতজ্ঞ। উনিই প্রথম আমার প্রতিভা চিনতে পারেন। কেকেআরে আসতে বলেন। সেখান থেকেই আমার শুরু।” নীতীশের হাত ধরে লড়াই শুরু হয়, তার সফরের দ্বিতীয় অধ্যায়ে আছেন ‘গুরু’ গম্ভীর। পরিষ্কার বলেন, গম্ভীরের জন্যই ক্রিকেটকে দেখার দৃষ্টিভঙ্গি বদলেছে তাঁর। হর্ষিতের বক্তব্য, “উনি আমাকে বলেছিলেন, ‘হয়তো একদিন ৪ ওভারে ৬০ রান দেবে। আবার একদিন ৪ ওভারে ১০ দিয়ে ৪ উইকেট নেবে। কিন্তু লড়াইয়ের মানসিকতা যেন না বদলায়। ৬০ রান খেলেই মন খারাপ করে থাকতে হবে, কিংবা ৪ উইকেট পেলেই সব পেয়ে গিয়েছি, এরকম মনে করার কিছু নেই।’ কারণটাও আমি জানি। ক্রিকেট এরকম একটা খেলা, যেখানে সব দিন সমান যাবে না।”
আর সেটার জন্য প্রতিনিয়ত উন্নতি করতে হবে। কিছু না কিছু শিখে যেতেই হবে। যেমন এবার আর নাইট সংসারে গম্ভীর নেই। সেই জায়গায় মেন্টর হিসেবে আছেন ডোয়েন ব্র্যাভো। তাঁর থেকে এখন শিখে নিচ্ছেন ওয়াইড ইয়র্কারের কলাকৌশল। হর্ষিত বলছেন, “ব্র্যাভো টি-টোয়েন্টির কিংবদন্তি। ক্রিকেট নিয়ে ওর মাথাটা অত্যন্ত পরিষ্কার। একটা কথা উনি আমাকে প্রায়ই বলেন, স্কিলের থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ মানসিকতা তৈরি করা।”
একদিকে যেমন নাইট সংসারে তারকাদের সঙ্গে যোগাযোগ, তেমনই ভারতের ড্রেসিংরুমে রোহিত-বিরাটদের মতো কিংবদন্তিদের সংস্পর্শ। শেখার কোনও সুযোগ ছাড়ছেন না হর্ষিত। তিনি নিজেও কিছুটা অবাক হয়ে যান, এত কম বয়সে এঁদের সঙ্গ পাচ্ছেন বলে। ২৪ বছর বয়সি পেসারের বক্তব্য, “ওরা আমাকে বলেন, নিজের শক্তির উপর ভরসা রাখতে। কখনই ব্যাটারদের শক্তি নিয়ে না ভাবতে।” সেই শক্তিতেই জাতীয় দলে তাঁর পথচলা। এবারের আইপিএলে ৪ ম্যাচে ৩ উইকেট নিয়েছেন হর্ষিত। রাস্তা অনেকটাই বাকি, কঠিনও বটে। তাতে বিন্দুমাত্র চিন্তিত নন তিনি। বরং লড়াইয়ের মন্ত্রেই অভিযান বজায় রাখতে চান হর্ষিত রানা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.