Advertisement
Advertisement
Team India

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নামার আগে একনজরে রোহিতদের শক্তি ও দুর্বলতা

রোহিত-বিরাটের চওড়া ব্যাটের দিকে নজর দেশের ক্রিকেটভক্তদের।

Here lies the strength and weakness of Team India in ICC T-20 World Cup
Published by: Krishanu Mazumder
  • Posted:June 5, 2024 4:08 pm
  • Updated:June 5, 2024 9:06 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে (ICC T-20 World Cup) আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচ দিয়ে অভিযান শুরু করছে রোহিত শর্মার টিম ইন্ডিয়া (Team India)। গোটা দেশ তাকিয়ে রোহিত-বাহিনীর দিকে। সেই ২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ঘরে এসেছিল মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে। তার পরে ১৭ বছর অতিক্রান্ত হলেও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আর জিততে পারেনি ভারত। প্রতিবারই অন্যতম ফেভারিট হিসেবে টুর্নামেন্ট খেলতে নেমেছে ভারত। কিন্তু ব্যর্থ মনোরথে দেশে ফিরতে হয়েছে।
আমেরিকা-ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বল গড়াতে শুরু করে দিয়েছে। সম্ভবত বিরাট কোহলি (Virat Kohli) ও রোহিত শর্মা (Rohit Sharma) শেষবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নামছেন। তাঁদের চওড়া ব্যাট কি কথা বলবে মেগা ইভেন্টে? ৫০ ওভারের বিশ্বকাপে অশ্বমেধের ঘোড়া থেমে গিয়েছিল ফাইনালে। আরও একবার সুযোগ রোহিত-কোহলিদের সামনে। পারবে কি ভারত? তার উত্তর সময়ের গর্ভে। তবে ভারত বিশ্বকাপে নামার আগে দেখে নেওয়া যাক টিম ইন্ডিয়ার শক্তি ও দুর্বলতা।   

[আরও পড়ুন: লোকসভায় নজরকাড়া ফল হেভিওয়েট মহিলা প্রার্থীদের, হারলেন শুধু স্মৃতি]

শক্তি-  যে কোনও ফরম্যাটের বিশ্বকাপে নামার আগে ভারতকেই অন্যতম ফেভারিট হিসেবে ধরা হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। প্রত্যাশার পারদ চড়তে শুরু করে দিয়েছে। কাপ ঘরে আনো, দেশের ক্রিকেট ভক্ত-অনুরাগীদের আকাশচুম্বী প্রত্যাশা এবং শুভেচ্ছা সঙ্গে করে বিমানে উঠেছেন বিরাট কোহলি-রোহিত শর্মারা। আয়ারল্যান্ড হোক বা পাকিস্তান, ভারতের ব্যাটিংয়ের প্রাণভোমরা যে বিরাট কোহলি, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাঁকে ঘিরেই স্বপ্ন দেখা শুরু হয়ে গিয়েছে। দেশের শ্বাসপ্রশ্বাসে বিরাট কোহলি! ক্রিকেট রোম্যান্সের নতুন এক অধ্যায় তিনি। আইপিএলের ১৫টি ম্যাচে ৭৪১ রান করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে এসেছেন কোহলি। আইপিএলের পৃথিবীতে কোহলি রূপকথা লিখেছেন। খাদের কিনারায় চলে যাওয়া রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু দলকে কোহলি প্রায় একাই কাঁধে করে নিয়ে গিয়েছেন প্লে অফে। প্লে অফে এসে আরসিবির সেই সোনালী দৌড় থেমে গেলেও কোহলিই শুষে নেন সব আলো। 
দলের আরেক পুরুষসিংহ রোহিত শর্মা। হিটম্যানের অভিজ্ঞতা টিম ইন্ডিয়ার বড় সম্পদ। ২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রোহিত ছিলেন ধোনির বিশ্বজয়ী দলের সদস্য। সেই রোহিত আর এখনকার রোহিতের মধ্যে জমিন-আসমান পার্থক্য। অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার তাঁর পরিপূর্ণ। ওপেন করতে নেমে রোহিতের ব্যাট যদি চলতে শুরু করে, তাহলে বিপক্ষের বোলারের রাতের ঘুম উড়বে, তা বলাইবাহুল্য। 
কে ভুলতে পারে সূর্যকুমার যাদবকে! আইসিসি ক্রমতালিকায় তিনি এখনও একনম্বর ব্যাটার। ঘরোয়া ক্রিকেটে তিনি ‘স্কাই’ নামেই পরিচিত। আকাশই তাঁর সীমা। ব্যাট করতে নেমে তাঁকে ভয় পায় না এমন কোনও বোলার নেই বিশ্বে। উইকেটের পিছনেও যে মিড অন-মিড অফ থাকতে পারে,  সূর্যকুমার যাদব সেটাই দেখিয়ে দিয়েছেন। বিশ্বকাপে রোহিতরা তাকিয়ে সূর্যর দিকে। যেদিন তাঁর ব্যাট চলবে, সেদিন তাঁকে রোখে কার সাধ্যি! 
প্রত্যাবর্তনের ঋষভ পন্থ হতে পারেন এক্স ফ্যাক্টর। ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর গাড়ি দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন ঋষভ। তারপর জীবন-মৃত্যুর মধ্যে চলেছে দীর্ঘ লড়াই। দীর্ঘ ১৬ মাস অপেক্ষার পরে ভারতীয় দলে কামব্যাক ঘটছে তাঁর। পন্থের কিপিংয়ের পাশাপাশি তাঁর ব্যাটিং ভারতীয় দলের সম্পদ। যথার্থ অর্থেই তিনি একজন ম্যাচ উইনার। লড়াই আর সাহসকে সঙ্গী গাব্বায় অস্ট্রেলিয়ার অহমিকা গুঁড়িয়ে দিয়ে এসেছিলেন পন্থ। সেই পন্থ ভারতের ব্যাটিংকে নির্ভরতা জোগাবেন, সেই আশাতেই বুক বাঁধছেন ভক্ত-অনুরাগীরা।
রবীন্দ্র জাদেজা, অক্ষর প্যাটেল, কুলদীপ যাদব এবং যুজবেন্দ্র চাহালের মতো স্পিনারের  উপস্থিতি ভারতীয় দলে। স্পিনের ঘূর্ণিতে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে পারেন তাঁরা। রবীন্দ্র জাদেজা দীর্ঘদিনই বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিংয়ে নিজের ছাপ রেখেছেন। ২০১৯ বিশ্বকাপের সেই সেমিফাইনাল কে ভুলতে পারেন! ধোনি আর জাদেজা জুটি প্রায় জিতিয়ে দিয়েছিলেন ভারতকে। গতবারের আইপিএল ফাইনালে শেষ দুবলে জাদেজা ম্যাজিক দেখিয়ে চেন্নাই সুপার কিংসকে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন। তিনি, অক্ষর, কুলদীপ এবং চাহাল অধিনায়ককে স্বস্তি এনে দেবেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
ভারতের এই দলে বড় ম্যাচের প্লেয়ারের সংখ্যাধিক্য। যে কোনও সময়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো প্লেয়ার রয়েছে টিম ইন্ডিয়ায়।
ভারতীয় বোলিংয়ের বড় সম্পদ জশপ্রীত বুমরাহ। রিকি পন্টিংয়ের মতো প্রাক্তন অজি অধিনায়ক বুমরার হয়ে বাজি ধরেছেন। গত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলে চলেছেন বুমরা। নতুন বলে ভয়ংকর। সুইং করাতে পারেন। সিম বোলিংও খুব ভালো করেন। সেই সঙ্গে তাঁর হাতে রয়েছে বিষাক্ত ইয়র্কার। যা যে কোনও সময়ে প্রতিপক্ষের ব্যাটারের কাছে মৃত্যু পরোয়ানা নিয়ে হাজির হতে পারে। 

Advertisement

দুর্বলতা- দীর্ঘ আইপিএল খেলে আমেরিকার বিমান ধরেছে টিম ইন্ডিয়া। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট গতিশীল খেলা। ক্রিকেটারদের কাছ থেকে অনেককিছু শুষে নেয়। আসল সময়ে দুশো শতাংশ দিতে হয় ক্রিকেটারদের। সবার মনে একটাই সংশয়, আইপিএলের ধকল প্রভাব ফেলবে না তো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে?
ভারতের এই দলে মিডল অর্ডারে অভিজ্ঞতার কিছুটা হলেও অভাব রয়েছে। মিডল অর্ডার যে কোনও দলের মেরুদণ্ড। ওপেনাররা দ্রুত ফিরে গেলে মিডল অর্ডারকেই হাল ধরতে হয়। এতকিছুর পরে বলতেই হচ্ছে টিম ইন্ডিয়ার মিডল অর্ডারে অভিজ্ঞতা এবং মারকুটে ব্যাটারের অভাব রয়েছে। আশঙ্কার আরও একটা দিক রয়েছে, চাপের মুখে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়বে না তো ভারতীয় ব্যাটিং?

অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ডিয়াকে নিয়ে প্রবল চর্চা দেশের ক্রিকেটমহলে। অনেকেই তাঁকে নিয়ে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে জায়গা পাওয়া নিয়ে উষ্মাপ্রকাশ করেছেন। আইপিএলে দেখা গিয়েছে ব্যাটিং ও বোলিংয়ে একেবারেই ছন্দে নেই হার্দিক পাণ্ডিয়া। টি-টোয়েন্টি  বিশ্বকাপের আগে সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে দেশের অলরাউন্ডার জানিয়েছেন, তিনি ফোকাসড। আইপিএলের ব্যর্থতা কাটিয়ে নিজেকে নতুন করে প্রমাণ করার মঞ্চ হিসেবে  বিশ্বকাপকে পাচ্ছেন পাণ্ডিয়া। 
মহম্মদ শামি সেরে না ওঠায় বিশ্বকাপের দলে জায়গা হয়নি তাঁর। তিনি এই দলে থাকলে রোহিত-ব্রিগেডের বোলিং শক্তি যে বহুগুণে বাড়ত, তা বলে দেওয়াই যায়। বুমরাও পার্টনার পেতেন। ৫০ ওভারের বিশ্বকাপে শামি আগুন জ্বালিয়েছিলেন। সেই তাঁকেই এবার পাওয়া যাচ্ছে না। মহম্মদ সিরাজ-অর্শদীপ সিংরা রয়েছেন ঠিকই, তবে শামির জুতোয় কি তাঁরা পা গলাতে পারবেন? 

জনগণমনের অধিনায়ক রোহিত শর্মা এবং তাঁর দলকে নিয়ে আশা,স্বপ্ন, প্রত্যাশার ফানুস উড়তে শুরু করে দিয়েছে। গোটা দেশের একটাই প্রার্থনা, কাপ ঘরে নিয়ে এসো।  

 

[আরও পড়ুন: আজ বিশ্বকাপ অভিযান শুরু ভারতের, আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে কেমন দলের অতীত ফল?]

 

 

 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement