সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দুনিয়া কাঁপানো কাণ্ড হলেও মহামারী বা অতিমারী সভ্যতার ইতিহাসে অভিনব কিছু নয়, এমনটাই জানান দিচ্ছে অতি প্রাচীনকালের দাঁত। কিন্তু কার দাঁত এবং কেন? মানব প্রজাতির পূর্বসূরিদের দাঁতেই নাকি সেই অজানা প্রশ্নের উত্তর লুকিয়ে। অ্যারিজোনা স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ হিউম্যান এভিলিউশন অ্যান্ড সোশ্যাল চেঞ্জের অধ্যাপক অ্যান স্টোন বলছে, “সময়কে একটু ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করলেই অতিমারীর উৎসের খোঁজ মিলবে। সেই সঙ্গে অতি প্রাচীন মানুষের দাঁতের গঠনও বলে দেবে কীভাবে এতটা পথ অতিক্রম করলাম আমরা।”
মানুষ সমাজবদ্ধ হওয়ার কাল থেকেই ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের মাধ্যমে মারণ আঘাত নেমে এসেছে। শুধু স্পর্শ বা শ্বাস নয়, জলের মাধ্যমেও ছড়িয়েছে রোগের জীবাণু। তবে আদিকালে সংমক্রণের ধরন বা রূপ কী ছিল, তা স্পষ্ট নয়। স্বাভাবিক কারণেই তা এখনও অজ্ঞাত বা অনুসন্ধানের বিষয়। খ্রিস্টপূর্ব তিনহাজার বছর আগে মহামারীর প্রকোপে ছারখার হয়ে যাওয়া দু’টি বিলুপ্ত চিনা গ্রামের সন্ধান পেয়েছেন প্রত্নতত্ত্ববিদরা। মানব সমাজের অতিমারীর প্রথম বিশদ বর্ণনা দেড়হাজারের বেশি পুরনো। যিশুর জন্মের চারশো তিরিশ বছর আগের এই ঘটনা। পরিচিত ‘প্লেগ অফ এথেন্স’ (Plague of Athens) নামে। অর্থাৎ অতিমারীর ক্ষেত্রে প্লেগই প্রথম সংহারক। যার বাহক হিুসেবে চিহ্নিত আকারে ছোট্ট একটি চলমান প্রাণী-ইঁদুর। আর এই মরকের কেন্দ্র ছিল ইউরোপ (Europe)। সঠিকভাবে চিহ্নিত করলে ভূমধ্যসাগরের তীরর্বতী দেশ গ্রিস। এই গ্রিসের দু’টি রাজ্য এথেন্স ও স্পার্টা। এই দুই এ অঞ্চলের স্থানীয় রাজারা মেতে ছিল এলাকা অধিকারের যুদ্ধে। সে সময় স্পার্টানরা ছিল বলশালী। এথেন্সও কমতি কিছু নয়। প্লেগ প্রথমে হানা দেয় সেই এথেন্সে। রোগের লক্ষণ ছিল-জ্বর, রক্তাক্ত জিভ ও গলা, চামড়া লাল হয়ে যাওয়া, শরীরে ফোঁড়া এবং তৃষ্ণা। পরে যাকে বলা হয়েছিল টাইফয়েড (Typhoid)। পরে বিভিন্ন দেশে ছড়ায়।
১৯১৮ সালের স্প্যানিশ ফ্লু হোক বা সাম্প্রতিক মারণ করোনা ভাইরাস (Corona Virus)। কোথা থেকে এসেছে মানুষের মধ্যে? সেটাই প্রাচীন ডিএনএ বিশ্লেষন করলেই জানা যাবে বলছেন জার্মানির ম্যাক্স প্লাঙ্ক ইনস্টিটিউটিটের (Max Planck Institute) এক গবেষক। ২০১৮ সালে কোপেনহেগেনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়েও একটি গবেষণা হয়েছিল। সেখানেও জানা যাচ্ছে একই কথা। জিনতত্ত্বের বাইরে অতিমারীর উৎস সন্ধান দেওয়া মুশকিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.