ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: শুধু ট্যাংরা, তিলজলা নয়। উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট, বারাসত, বাদুড়িয়া, মধ্যমগ্রাম থেকে বেলঘরিয়া পর্যন্ত ম্যালেরিয়া (Malaria), ডেঙ্গুর (Dengue) জোড়া কামড়ে অস্থির এলাকাবাসী। বিভিন্ন জেলা থেকে স্বাস্থ্যভবনে যে তথ্য জমা পড়েছে, তাতে উত্তর ২৪ পরগনা ছাড়াও হুগলি, মালদহ, মধ্য হাওড়ার বিভিন্ন এলাকা মশাবাহিত রোগে কাহিল। এই অবস্থায় স্বাস্থ্যভবনের ভেক্টর (Vector) কন্ট্রোল বিভাগ অর্থাৎ পতঙ্গবাহিত রোগ সংক্রান্ত বিভাগ নিয়মিত তথ্য জোগাড় করে সুপারিশ দেওয়ার কাজ শুরু করছে।
স্বাস্থ্যভবনের (Swasthya Bhaban) প্রাথমিক তথ্য, ম্যালেরিয়া রোগীর সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। এমনকী পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূমের মতো এলাকা থেকেও ডেঙ্গু রোগীর খোঁজ মিলছে। গত ৪ বছর পর ফের মশাবাহিত রোগ ও সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় কিছুটা হলেও চিন্তায় স্বাস্থ্যভবন। গত সপ্তাহে কলকাতা পুরসভার (KMC) সঙ্গে আলোচনায় স্বাস্থ্যদপ্তর জানতে পারে, ট্যাংরা, তপসিয়া, তিলজলা এলাকায় ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে।
পুরসভার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, এমন ঘটনা কেন? স্বাস্থ্যভবনের এক কর্তার কথায়, ”মূলত নির্মীয়মাণ বাড়িতে বর্ষার জমা জলে মশার লার্ভা থেকেই রোগ ছড়াচ্ছে।” আগামী সপ্তাহে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের (CMOH) সঙ্গে আলোচনায় বসছে স্বাস্থ্যভবন। মৎস্য দপ্তর থেকে ইতিমধ্যেই গাপ্পি মাছ ছাড়া হচ্ছে জলাশয়ে। সেচ দপ্তরকে বলা হয়েছে, ২১ টি খাল সংস্কার করতে। কয়েকটি খালের প্রয়োজনে ‘বর্ষায় নৌকা চালানোর’ জন্য সুপারিশ করা হবে, যাতে জল জমে না থাকে।
অন্যদিকে, আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা বাড়ি বাড়ি প্রচারের কাজেও যুক্ত হবেন। এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, ”ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার ওষুধ থেকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে, এই আশঙ্কায় কয়েকটি পুরসভা রোগীদের রক্তপরীক্ষার পরও ওষুধ দিতে দোটানায় রয়েছে।” স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া রোগ চিহ্নিত হওয়ার পর কী ধরনের ওষুধ রোগীকে দেওয়া হবে, তার একটা নির্দিষ্ট গাইডলাইন তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। সেই গাইডলাইন মেনেই পুর স্বাস্থ্যদপ্তর কাজ করবে। এর সঙ্গে প্রয়োজনে সরাসরি স্বাস্থ্যভবন ওয়েবিনারে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবে।
করোনা (Coronavirus)কমছে। গত ১৮ মাসে করোনার মারাত্মক দাপটে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ তেমন মালুম হয়নি। কিন্তু বর্ষার মধ্যেই ফের রোগ মাথাচাড়া দেওয়ায় তা নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া শুরু হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.