সুকুমার সরকার, ঢাকা: দিল্লির নিজামুদ্দিনে তবলিঘি জামাত (tablighi jamaat) -এর জমায়েতের ছায়া এবার মানুষ প্রত্যক্ষ করল বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলায়। শনিবার সেখানে লক্ষ মানুষের সমাগম ভেঙে দিল লকডাউনের সমস্ত বাধা ও নিষেধ।
সেখানে কেউ এসেছিলেন গাড়িতে তো কেউ বা দল বেঁধে। সামাজিক দূরত্বকে থোড়াই কেয়ার করে মুহূর্তের মধ্যে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে গেলেন হাজার হাজার মানুষ। মাস্ক পরার জন্য সরকারের তরফে যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ভাঙা হল তাও। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলায় একজন ইসলামি বক্তার মৃত্যুর পর নমাজে জানাজাকে কেন্দ্র করে গতকাল এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। জানাজায় লক্ষাধিক জনতার উপস্থিতি সরকারের ভূমিকাকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই জানাজার ছবি প্রকাশ পাওয়ার পর সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এর ফলে পুরো জেলায় করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক বেড়ে গেল বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে।
বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হওয়ার পরেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল থানার ওসি শাহাদাত হোসেন টিটুকে ওই এলাকার দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে। সেই সঙ্গে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় আশঙ্কায় আশপাশের ৮টি গ্রামে লকডাউনের ঘোষণা করেছে প্রশাসন। এই সমস্ত গ্রামের বাসিন্দাদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে ঢাকা ও সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের বেড়তলায় জামিয়া রাহমানিয়া মাদ্রাসা মাঠে। সেখানে ইসলামি আলোচক আল্লামা মৌলানা যুবায়ের আহমদ আনসারির নমাজে জানাজায় লক্ষ লোকের সমাগম ঘটে। মাদ্রাসা মাঠ ছাড়িয়ে মহাসড়কের দু’পাশে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত চলে যায়। এছাড়া মাদ্রাসা-সহ সেখানকার আশপাশের ভবনের ছাদে জানাজা পড়তে লোকজন দাঁড়িয়ে যায়। অনেকের গলায় থাকা ব্যাজ, প্রচুর যানবাহন আসা প্রমাণ করে যে ব্যাপক সমাগমের মাধ্যমে জানাজার পূর্ব প্রস্তুতি ছিল। জানাজাস্থলের আশপাশে বেশ কিছু পুলিশকর্মী থাকলেও তাঁরা ছিলেন নীরব দর্শক। শাসকদর জেলা আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকার এত লোকের সমাগমের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘এটা জনস্বাস্থ্যের পরিপন্থী। আমাদের মধ্যে যে সচেতনতার অভাব রয়েছে, সেটাও এর মাধ্যমে জানা হয়ে গিয়েছে।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.