অর্ণব আইচ: একাধিকবার রিপোর্ট নেগেটিভ। ফলে করোনার কোনও চিকিৎসাও হয়নি। শ্বাসকষ্টের স্বাভাবিক চিকিৎসা চলছিল। শেষবারের রিপোর্ট পজিটিভ হওয়ায় তড়িঘড়ি চিকিৎসা শুরু হলেও বাঁচানো গেল না লালবাজারের এক পুলিশ ইন্সপেক্টরকে। শুক্রবার সাতসকালেই বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হল তাঁর। মৃত ইন্সপেক্টর লালবাজার ট্রাফিকের ইকুইপমেন্ট বিভাগের দায়িত্ব ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁর মৃত্যুতে আতঙ্ক বাড়ল কলকাতা পুলিশের সদর দপ্তরে। জানা গিয়েছে, এই বিভাগের আরও অন্তত ২৯ জন পুলিশ কর্মী করোনা পজিটিভ (Coronavirus)।
লালবাজার সূত্রে খবর, বেশ কয়েকদিন আগে ইকুইপমেন্ট বিভাগের ওই ইন্সপেক্টর অসুস্থ হয়ে পড়েন। বছর সাতচল্লিশের ওই অফিসারকে মুকুন্দপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করানো হয়। সেখানে দু’বার তাঁর করোনা পরীক্ষা হয়। কিন্তু দু’বারই রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। ফলে করোনার চিকিৎসা নয়, তাঁকে সুস্থ করে তুলতে সাধারণ চিকিৎসাই চলছিল হাসপাতালে।
বৃহস্পতিবার থেকে হঠাৎ তাঁর শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকে। এরপর আরেকবার করোনা পরীক্ষার জন্য লালারসের নমুনা পাঠানো হয়। রাতে সেই রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এরপর তাঁকে বাইপাসের আরেকটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু চিকিৎসার সেভাবে সুযোগ মেলেনি। শুক্রবার সকাল ৮টা নাগাদ মৃত্যু হয় ওই ইন্সপেক্টরের। খবর পেয়ে মর্মাহত সহকর্মীরা। তাঁর মৃত্যুতে সমবেদনা প্রকাশ করেছেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী।
জানা গিয়েছে, লালবাজার ট্রাফিক বিভাগের অন্তত ২৯ জন কর্মীর শরীরে মিলেছে করোনার জীবাণু। লকডাউনের সময় তাঁরা প্রত্যেকেই আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য রাস্তায় নেমে কাজ করেছেন। শুধু তাঁরাই নন, পুলিশের প্রত্যেক বিভাগের কর্মী, আধিকারিকরা এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি কাজে ব্যস্ত। বিশেষত করোনা সংক্রমণ রুখতে এতদিনের লকডাউন সফল করতে তাঁরাই সবচেয়ে বড় ভূমিকা নিয়েছেন। নিজেদের ঝুঁকির কথা না ভেবে দিনরাত কর্তব্যে অটল থাকার ফলে তাঁদের শরীরেও থাবা বসিয়েছে মারণ করোনা ভাইরাস। ফলে প্রথম সারির করোনা যোদ্ধাদের নিয়ে চিন্তা বাড়ছে প্রশাসনের। তার মধ্যে এই অফিসারের মৃত্যু আতঙ্কও বাড়িয়ে তুলেছেন সহকর্মীদের মধ্যে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.