সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতের মাটিতে নিজের আধিপত্য বিস্তার করেই চলেছে নোভেল করোনা ভাইরাস (Corona Virus)। বাড়ছে আক্রান্ত, মৃত্যুর সংখ্যা। মহামারির বিরুদ্ধে লড়তে একপ্রকার গোটা দেশেই ‘লকডাউন’ ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। মঙ্গলবার ২৩টি রাজ্য ও ৭ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে একযোগে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। অর্থাৎ ভারতীয় ভূখণ্ড পুরোপুরি অবরুদ্ধ হয়ে গেল। ১৩০ কোটি মানুষের ভারত আয়তনে বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম দেশ। এ হেন দেশ করোনার প্রভাবে এই মুহূর্তে সর্বকালের সর্ববৃহৎ ‘লকডাউন’ এলাকায় পরিণত হল। তাতেও অবশ্য কাটছে না আতঙ্ক। প্রয়োজনে কারফিউ জারি করারও হুঁশিয়ারি দিয়েছে প্রশাসন। পাঞ্জাব, মহারাষ্ট্র, পুদুচেরিতে কারফিউ জারিও হয়েছে।
এই লকডাউনকে হাতিয়ার করে করোনার স্টেজ-থ্রি বা তৃতীয় পর্যায়ের সংক্রমণ আটকাতে মরিয়া দেশবাসী।কিন্তু মুশকিল হল, করোনা আটকাতে গিয়ে অর্থনৈতিক দিক থেকে আশু বিপর্যয়ের মুখে দেশ। শেয়ার বাজার খুললেই উড়ে যাচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা। মঙ্গলবার বাজার খানিক ঘুরে দাঁড়ালেও, তা সাময়িক। বিশেষজ্ঞরা বলছেন দালাল স্ট্রিটের এই রক্তক্ষরণ অব্যাহত থাকবে আগামী দিনেও। রেকর্ড গতিতে ভারতে থাকা সম্পত্তি বিক্রি করে দিচ্ছে বিদশি সংস্থাগুলি। লকডাউনের জেরে উৎপাদন বন্ধ দেশি সংস্থাগুলোরও। উৎপাদন বন্ধ হওয়াই ‘দিন আনি দিন খায়’ শ্রমিকদের মাথার উপর ঝুলছে কর্মহীনতার খাড়া। এমনিতে আগে থেকেই ধীরগতিতে চলছিল ভারতের অর্থনীতি। তার উপর করোনার কোপ আদৌ ভারত সামলাতে পারবে কিনা, তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন তুলে দিয়েছে এই ‘লকডাউন’।
Oxford Economics নামের একটি আন্তর্জাতিক সমীক্ষক সংস্থা বলছে, এই আর্থিক লকডাউনের জেরে ভারতের সার্বিক বৃদ্ধির হার কমতে কমতে ৩ শতাংশে নেমে আসতে পারে। ওই সংস্থাটি বলছে, বর্তমান পরিস্থিতি থেকে দেশের অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রাখতে মোট জিডিপির এক শতাংশ খরচ করতে হবে সরকারকে। ওই টাকা সরাসরি পৌঁছে দিতে হবে গরিব মানুষের হাতে। যাতে বাজারে চাহিদার অভাব না হয়। সংস্থাটি বলছে, অন্তত ১৮ হাজার কোটি টাকা সাধারণ মানুষের কাছে সরাসরি পৌঁছে দিতে পারলে, তবেই ঘুরে দাঁড়াবে অর্থনীতি। তা যদি সম্ভব না হয়, তাহলে লকডাউনের জেরে ভারতের অর্থনীতিও দীর্ঘদিন লকডাউন থাকতে পারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.