সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় গোটা দেশজুড়ে জারি লকডাউন। রোগ সংক্রমণ এড়াতে সকলকে গৃহবন্দি থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তবে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে প্রথম সারিতে দাঁড়িয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন পুলিশ এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা। করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন নিজেরাও। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটল রাজধানীতে। করোনা আক্রান্ত হয়েও হাসপাতালে ভরতি হতে পারলেন না দিল্লি পুলিশের এক কনস্টেবল। তাঁর পরিচিতদের অভিযোগ, প্রায় বিনা চিকিৎসাতে মৃত্যু হল ওই পুলিশকর্মীর।
একত্রিশ বছর বয়সি ওই কনস্টেবল আদতে হরিয়ানার সোনিপাতের বাসিন্দা। তিনি উত্তর পূর্ব দিল্লির ভারত নগর থানায় কনস্টেবল হিসাবে কর্মরত। প্রথমদিকে তাঁর শরীরে কোনও উপসর্গ ছিল না। তবে মঙ্গলবার থেকে শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে ওই পুলিশকর্মীর। অল্প জ্বরও আসে। সন্দেহ হয় তাঁর। করোনা হয়নি তো, এই ভাবনা থেকে মঙ্গলবার অশোক বিহার করোনা পরীক্ষাকেন্দ্রে যান তিনি। সেখানে শুধুমাত্র করোনা পরীক্ষা করা হয় তাঁর। তবে রিপোর্ট পজিটিভ হলেও তাঁকে ভরতি নেওয়া যাবে না বলেই সাফ জানিয়ে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এরপর বাবা সাহেব আম্বেদকর হাসপাতালে যান তিনি। তবে অভিযোগ, ওই হাসপাতালেও ভরতি নেওয়া হয়নি তাঁকে। এরপর একজন শীর্ষ পুলিশ আধিকারিককে গোটা বিষয়টি জানান তিনি। ওই শীর্ষ আধিকারিক দীপচাঁদ বাহাদুর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ফোনে কথা বলে। সেই সূত্র মারফত পুলিশ কর্মী ওই হাসপাতালে যায়। সেখানেই জানা যায় পুলিশকর্মী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তবে ওই হাসপাতালও তাঁকে ভরতি নেয়নি। পরিবর্তে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকে বাড়িতে কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেয়। সেই অনুযায়ী বাধ্য হয়ে বাড়ি ফিরে যান পুলিশকর্মী। কিছুক্ষণ পরে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় ওই পুলিশকর্মীর।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এই ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেন। টুইটে তিনি লেখেন, “পুলিশ কনস্টেবল নিজের জীবনের কথা না ভেবে সকলের জন্য কাজ করে গিয়েছেন। আমি তাঁকে কুর্নিশ জানাই। তাঁর পরিবারকে ১ কোটি টাকা আর্থিক সাহায্য করা হবে।” দিল্লির পুলিশ কমিশনারও তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.