গৌতম ব্রহ্ম: করোনা উপসর্গ ছিল রোগীর। কিন্তু রোগীকে পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা করা হল। COVID-19 আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুর পর টনক নড়ল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। রোগ নির্ধারণে চূড়ান্ত গাফিলতির উদাহরণ হয়ে রইল কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। রোগী মৃত্যুর জেরে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে মোট ৫৮ জনকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হল। কেন উপসর্গ থাকা সত্ত্বেও ওই করোনা আক্রান্ত রোগীকে মেডিসিন ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা হল তা নিয়ে নিরুত্তাপ কর্তৃপক্ষ। এবার একসঙ্গে এতজন চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মী কোয়ারেন্টাইনে চলে যাওয়ায় কার্যত দিশাহারা অবস্থা এনআরএস হাসপাতালের।
জানা গিয়েছে, মহেশতলার ৩৪ বছরের এক যুবককে অসুস্থ অবস্থায় ভরতি করা হয় গত ৩০ মার্চ। ১ এপ্রিল রাতে তাঁর উপসর্গ ধরা পড়ে। তবুও তাঁকে আইসোলেশনে না রেখে আইসিইউতে রাখা হয় বলে জানা গিয়েছে। এরপরের দিন রোগীর নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। এরপর আইসিইউতে ওই যুবক মারা যান। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওই রোগীর উপসর্গের কথা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। মেডিসিন ওয়ার্ডে রেখেই তাঁর চিকিৎসা চলছিল। এবার নিয়ম মেনে তাঁকে আইসোলেশনে রাখা হয়নি। ফলত ওই বিভাগের চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে ৫৮ জনকে পাঠানো হল কোয়ারেন্টাইনে। এদের মধ্যে ২৫ জনকে রাজারহাটের কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে এবং বাকিদের হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
এর আগেও একবার এনআরএস হাসপাতালে গাফিলতির ছবি উঠে আসে। সেইসময় রোগীর মৃত্যুর পর তাঁর রিপোর্ট না আসায় ধন্দে ছিলেন চিকিৎসকরা। তখন রোগীর আত্মীরা হাসপাতালে এসেছেন, ওয়ার্ডে ঘুরেছেন। কোনও নিয়ম তখনও মানা হয়নি। সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা না নিয়ে ফের একই জিনিস হল এনআরএস-এ। সল্টলেকের বেসরকারি হাসপাতালে রাজ্যের প্রথম করোনা আক্রান্তের মৃত্যুর পর ১৭ জন চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়। কিন্তু সেই সংখ্যাটা এনআরএসের তুলনায় কম। আপৎকালীন পরিস্থিতিতে একসঙ্গে ৫৭ জন কোয়ারেন্টাইনে চলে যাওয়া মহা বিপাকে এনআরএস হাসপাতাল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.