সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বলিপাড়ার একসময়কার ডাকসাইটে প্রযোজনা সংস্থার সাত তলা অফিসটা এখন অতীত। ২৫০ কোটির দেনায় জর্জরিত সর্বস্বান্ত প্রযোজককে নাকি পূজা এন্টারটেইনমেন্টের অফিস (Pooja Entertainment) বিক্রি করে দিতে হয়েছে বাসু ভাগনানিকে (Vashu Bhagnani)! শুধু তাই নয়। সংস্থার কর্মরত ৮০ শতাংশ কর্মীদেরও নাকি ছাঁটাই করতে হয়েছে দেনায় ডুবে! এমন কথাই শোনা গিয়েছিল দিন দুয়েক আগে। তবে রণে ভঙ্গ দিয়ে মুখ খুলেছিলেন বাসু খোদ। গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়ে বলেছিলেন, “এমন কিছুই হয়নি…।” এবার প্রযোজক বাসুকে নিয়ে নতুন খবর প্রকাশ্যে।
জ্যাকি ভাগনানির বাবা বাসু ভাগনানি নাকি ‘বড়ে মিঞা ছোটে মিঞা’ ছবির কোনও কলাকুশলীকেই প্রাপ্য টাকা দিতে পারেননি। এমনকী সিনেমার মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করা অক্ষয় কুমার, টাইগার শ্রফ সকলেরই লক্ষ লক্ষ টাকা বকেয়া রয়েছে তাঁর কাছে। আর সেইজন্যই ফেডারেশন অফ ওয়েস্টার্ন ইন্ডিয়া সিনে এমপ্লয়িজ মারাত্মক চটেছে বাসুর উপর। ফেডারেশনের সভাপতি বিএন তিওয়ারি জানিয়েছেন, ‘মিশন রানিগঞ্জ’, ‘গণপত’ ও ‘বড়ে মিঞা ছোটে মিঞা’-সহ তিনটি ছবি বাবদ কলাকুশলীরা এখনও ৬৫ লক্ষেরও বেশি টাকা পান। এর মধ্যেই অক্ষয় অভিনীত ‘মিশন রানিগঞ্জ’ সিনেমার পরিচালক টিনু দেশাই ফেডারেশনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান যে, তাঁর পূজা এন্টারটেইনমেন্ট-এর থেকে ৩৩ লক্ষ ১৩ হাজার টাকা প্রাপ্য। সেকথাও সামনে আনেন সভাপতি বিএন তিওয়ারি। তবে বকেয়া টাকা নিয়ে অক্ষয় কুমার কিংবা টাইগার শ্রফের কেউই মুখ খোলেননি।
সূত্রের খবর, ‘বড়ে মিঞা ছোটে মিঞা’র বকেয়া পারিশ্রমিক নিয়ে টাইগার শ্রফ এযাবৎকাল চুপই ছিলেন। তবে তিনি যখন জানতে পারেন যে, কলাকুশলীদের টাকাও বাকি, তখন প্রযোজনা সংস্থাকে যত দ্রুত সম্ভব সেই টাকা মিটিয়ে দেওয়ার কথা বলেছেন টাইগার। এদিকে সোনাক্ষী সিনহা, আলায়া এফ, মানুষী চিল্লারদের তরফে বকেয়া টাকার জন্য বার কয়েক যোগাযোগ করা হলেও প্রযোজনা সংস্থার তরফে কেউ উত্তর দেননি বলেই জানা গিয়েছে। এমনকী পারিশ্রমিক না পেয়েও সিনেমার প্রচার করেছেন প্রত্যেকে, যাতে ছবির কোনও ক্ষতি না হয়। কিন্তু তবুও প্রাপ্য টাকা পাননি তাঁরা কেউই।
বিষয়টি নিয়ে জানাজানি হয় তখন, যখন ক্ষুব্ধ কলাকুশলীরা প্রতিবাদ করে বলেন, ‘তারকারা মোটা টাকা পেলেও কেন তাঁদের বকেয়া মেটানো হয়নি?’ এদিকে বলিউড ফেডারেশনকে বাসু ভাগনানি জানিয়েছেন যে, আগামী জুলাই মাসের মধ্যে সমস্ত বকেয়া মিটিয়ে দেবেন তিনি। নইলে ফেডারেশনের কোনও সদস্যই ভবিষ্য়তে তাঁর পূজা এন্টারটেইনমেন্ট-এর সঙ্গে কাজ করবেন না।
প্রযোজক বাসু ভাগনানি ঘনিষ্ঠের কথায়, “‘বেল বটম’ সিনেমা থেকেই ডুবতে শুরু করে বাসুর সংস্থা। অতিমারী পরবর্তীকালে মুক্তি পেয়েছিল এই ছবি। পরের ছবি ‘মিশন রানিগঞ্জ’-এরও বক্স অফিসে ভরাডুবি হয়। আরেকটা বিগ বাজেট ছবি ‘গণপথ’-ও যখন মুখ থুবড়ে পড়ে, তখন বড়সড় ধাক্কা খায় প্রযোজনা সংস্থা। এমনকী ভালো অঙ্কে নেটফ্লিক্সের সঙ্গে চুক্তি হওয়া সত্ত্বেও ওই ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ছবিটা নিতে চায়নি। তখন থেকেই সংস্থার উপর খাড়ার ঘা ঝুলছিল! কফিনে শেষ পেরেকটা পুঁতল ‘বড়ে মিঞা ছোটে মিঞা’। আবারও একটা ফ্লপ। তবে অক্ষয় কুমার এবং টাইগার শ্রফ ম্যাজিক সংস্থার ক্যাশবাক্স চাঙ্গা করবে বলে মনে করা হয়েছিল। তবে সেই ছবিটাও ঐতিহাসকভাবে ব্যর্থ!” উল্লেখ্য, ফ্লপের তালিকার সিংহভাগ ছবিতেই মুখ্য চরিত্রে অক্ষয় কুমার। এবার দেখার বাসু সত্যিই সকলের বকেয়া নির্ভারিত সময়ের মধ্যে মেটাবেন কিনা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.