পুজোর সিনেমার ইতিহাসে বহুরূপী সবচেয়ে বেশি ব্যবসা করেছে’- ১৫ কোটি ছুঁয়ে স্পষ্ট বললেন শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। শম্পালী মৌলিক
পুজো রিলিজের পর থেকে তরতরিয়ে ১৫ কোটির মাইলস্টোন ছুঁয়ে ফেলল ‘বহুরূপী’। এতটা সাফল্য আশা করেছিলেন?
– না, এ তো কেউ কোনওদিন আশা করতে পারে না। আমি বলব এটা অভাবনীয় ব্যাপার (হাসি)। ‘বহুরূপী’-র সমগ্র টিম, সমস্ত দর্শক, কাস্ট অ্যান্ড ক্রু পাশে না থাকলে হত না। বাংলার দর্শক অভূতপূর্ব সাড়া দিয়েছেন।
বাংলা ছবির দুর্দিনে, এমন সাফল্য কি মোড় ঘোরানো হতে পারে?
– ডেফিনিটলি হতে পারে। ইন্ডাস্ট্রির বহু মানুষের কাছে যে বার্তা পেয়েছে বলছি। অনেকে মনে করেছিল, দশ কোটি পেরনো বা পাঁচ-ছয়-আট কোটি পেরনোও কঠিন। নম্বরটা বড় কথা নয়, কিন্তু একটা সময় ব্যবসা না হলেও তো বড় স্কেলের ছবি করা যায় না। তাই এই নম্বরটা আমরা আদৌ দেখতে পাব কি না, সেটা চিন্তার কারণ ছিল। এবং আরও একটা বিষয়, অনেকেই বলেছিল, এই ছবি পুজো রিলিজ কোরো না। তার কারণ পুজোর চারদিনের পরে ব্যবসা হয় না সাধারণত। পুজোর সিনেমার ইতিহাসে, এই ছবিটা সবচেয়ে বেশি ব্যবসা করেছে। সেটা সবথেকে বড় জিনিস। কারণ পুজোর দিনগুলো চলে যাওয়ার পর ভয়ংকর ডাউনফল হয়। সেটা অতিক্রম করেছে ‘বহুরূপী’ এবং পর পর সপ্তাহগুলো দর্শক ধরে রাখতে পেরেছে, এটা বড় ব্যাপার। যার থেকে প্রমাণ হয়, কোথাও আমাদের দর্শক রয়েছে।
তারপরে দুটো হেভিওয়েট হিন্দি ছবি আসে ‘ভুলভুলাইয়া থ্রি’ এবং ‘সিংহম এগেন’। তখন ‘বহুরূপী’-র শো কমিয়ে দেওয়া হয়। পরে অন্তত ৪০টা শো ফিরে আসে হল-এ আবার। এই প্রত্যাবর্তনটা কি আশা করেছিলেন?
– সে সময় খুবই দুঃখ পেয়েছিলাম, নিজের রাজ্যে ছবিটা এরকম রেজাল্ট দেওয়ার পরেও শো কমে যাওয়ায়। ছুটি চলে যাওয়ার পরে হল-এর শুকনো মরশুমে যখন আমরা ব্যবসা দিতে পেরেছিলাম এবং নিজের রাজ্যে, নিজের ভাষায়, সেখানে যখন আমাদের সিনেমা বিভিন্ন জায়গা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, তখন স্বভাবতই খুব কষ্ট হয়েছিল। এটা হওয়া কাম্য ছিল না। সেটাও আঙুল দিয়ে দেখানোর মতো জায়গা যে ‘বহুরূপী’র সঙ্গে যদি এটা হতে পারে, তাহলে কিন্তু আগামী দিনে যেকোনও সিনেমার সঙ্গে হবে। তারপর যখন শো ফিরে পাই, সেটা আরও বড় প্রাপ্তি। এটা বুঝিয়ে দেয়, যদি রেজাল্ট না ধরে রাখতে পারতাম, পরের সপ্তাহে ছবিটা উড়েই যেত।
নন্দিতা রায় এবং আপনি পরপর দুটো পুজোর ছবিতে ‘উইন্ডোজ’-এর ঘরানা থেকে বেরিয়ে এসেছেন। ‘রক্তবীজ’ এবং ‘বহুরূপী’তে থ্রিল এলিমেন্ট রয়েছে। তাহলে কি ধরে নেব, আগামী দিনে পুজোয় আপনাদের পাখির চোখ থ্রিলার ছবি?
– পুজোয় জমজমাটি ছবি হওয়া দরকার। সেটা থ্রিলার হবে কি না জানি না। কিন্তু সে ছবির মধ্যে সবকিছু থাকতে হবে। ফেস্টিভ্যালের ছবি আলাদা। পুজোর ছবি জমজমাটি। আবার গরমের ছুটির বা অন্য সময়ের সিনেমা আলাদা। যেমন, দিওয়ালিতে ‘সিংহম এগেন’-এর মতো সিনেমাই নিয়ে আসবে বলিউড। কারণ, লোকজনের মানসিকতা সেইরকমই।
বক্স অফিসের সাফল্য তো পেয়ে গিয়েছেন। এবারে কি ফেস্টিভ্যাল টার্গেট? এবারে ইফি-র প্রতিযোগিতা বিভাগে আপনাদের ‘আমার বস’ জায়গা করে নিয়েছে।
– এটা ভেবে তো কেউ সিনেমা করে না, যে এটা প্রতিযোগিতার বা অন্য কিছুর। আমাদের মূল লক্ষ্য বক্স অফিস-ই। তার বাইরে কিছুই নয়। ইফি-তে ছবি পাঠানোর ক্ষেত্রে জিনিয়ার (সেন) উদ্যোগটাই বেশি ছিল। আমাদের কেরিয়ারের প্রথম সিনেমা যেটা ইফি-তে নির্বাচিত হল। ‘আমার বস’-এর মধ্যেও জমজমাটি ছবি পাবে দর্শক। সেটাও বক্স অফিসের জন্যই তৈরি করা ছবি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.