অস্কারের দৌড়ে বাংলা গান। সারা বিশ্বের সেরা ৮৯ গানের মধ্যে ঠাঁই পেল ইন্দিরা ধর মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ‘পুতুল’ সিনেমার ‘ইতি মা’ গানটি। অনির্বাণ ভট্টাচার্যর লেখা কথায় এই গানের সুর সাজিয়েছেন সায়ন গঙ্গোপাধ্যায় (Sayan Ganguly)। তাঁর সঙ্গীতায়োজনেই গানটি গেয়েছেন ইমন চক্রবর্তী। সুরকার হিসেবে প্রথম গানেই বাজিমাত করলেন সায়ন। সুপর্ণা মজুমদারকে জানালেন নিজের অনুভূতি।
অস্কারে তোমার সুর করা গান। কী বলবে?
সবচেয়ে বড় কথা সুরকার হিসেবে এটা আমার প্রথম কাজ। এর আগে প্রচুর ব্যাকগ্রাউন্ড করেছি, সিনেমার গানে সুর দিইনি। সত্যি কথা বলতে এখনও ঠিক হজম হচ্ছে না। এরকম হতে পারে? এটা ভাবাই যাচ্ছে না। আর উপরে যে নামগুলো তালিকায় রয়েছে ‘মোয়ানা’, ‘লায়ন কিং’— তার মাঝখানে নামটা দেখে ভাবছি সত্যিই দেখছি তো? না ভুল দেখছি।
প্রথম কোথা থেকে খবর পেলে?
খবরটা পেলাম আমাদের আমাদের লস অ্যাঞ্জেলস থেকে। সেখানে ১৩ তারিখে সিনেমাটা মুক্তি পাচ্ছে। আমাদের ওখানে যাঁরা রয়েছেন তাঁরাই লিঙ্কটা পাঠিয়ে বললেন দেখতে। তার পর দেখি এই ব্যাপার। তখন ভাবলাম এ কীরে বাবা! ঠিক দেখছি, না ভুল দেখছি।
কান চলচ্চিত্র উৎসবেও ছবি প্রশংসা পেয়েছিল…
কান চলচ্চিত্র উৎসবে সাংঘাতিক রেসপন্স ছিল। এ আর রহমান তো প্রচণ্ড প্রশংসা করেছিল। আমাদের টিজার-পোস্টার লঞ্চের পরই রহমান স্যারের ইভেন্ট ছিল। সেখানে বাজানো হয়। তিনি বারবার বলেন, ‘কলকাতায় বসে এই কাজ আমি ভাবতেই পারছি না। এটা সম্ভব নয়।’ অনেক পিঠ চাপড়েছিলেন। প্রচুর ছবি তুলেছিলেন। বলেছিলেন ‘অনেক দূর যাবে।’ পোস্টার ধরে আন্তর্জাতিক সাংবাদিকদের সামনে প্রমোটও করেন। এত ভালো কাজ, আপনারা সাপোর্ট করেন।
তোমার এতদিনের এই জার্নিটা জানতে চাইব।
গানবাজনার পরিবারেই জন্মেছি। আমার বাবা বুদ্ধদেব গঙ্গোপাধ্যায়। হলিউড ওয়াক অফ ফেম পেয়েছিলেন। ছোটবেলা থেকেই পিয়ানো শিখতাম, গান শিখতাম। পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর কাছে ২২ বছর শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিখেছি। এই দুটো শেখায় যা সুবিধা হয়েছে, কোনও মিউজিকই সিলেবাসের বাইরে পরে না। এই প্রথম ছবি যেখানে এমন স্কেল শুনতে পাবে। পাশ্চাত্য কোনও বাদ্য ব্যবহার হয়নি। ম্যাক্সিমাম, সিতার, ভায়োলিন, সোলো ভায়োলিন দিয়ে বাজানো। একটু অন্য ধাতের। আমার নিজের মনে হয়, এই ধরনের সঙ্গীত লুপ্ত হয়ে গিয়েছে। আমি নিজে ইলেক্ট্রনিকসের ভক্ত। কিন্তু ইন্দিরা স্পষ্টভাবে বলেছিল ভারতীয় সঙ্গীত চাই। যেহেতু পথশিশুদের নিয়ে সিনেমা। আমি বলেছিলাম, তুমি আমাকে বিশ্বাস করো। দেখি কী করতে পারি? সেই মাপকাঠি রেখেই করা। টিমের সবাই খুশি। হোয়াটঅ্যাপগ্রুপে কথা হচ্ছে। ইন্দিরা, ইমন, অনির্বাণদা যিনি গানটি লিখেছেন, আমার ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিয়ানদের সঙ্গেও কথা হয়েছে।
সবচেয়ে মন ছুঁয়ে যাওয়া কমপ্লিমেন্ট কার কাছ থেকে পেলে?
মা-বাবার থেকে। আমরা গর্বিত। এই দুটো শব্দ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.