সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ওড়িয়া সিনেজগতের ‘পয়লা সুপারস্টার’ হলেও একাধিক বাংলা সিনেমায় অভিনয় করে দর্শকদের নজর কেড়েছিলেন উত্তম মোহান্তি (Uttam Mohanty Death)। তাঁর প্রয়াণে শোকের ছায়া দুই সিনেদুনিয়ায়। শুক্রবার দিল্লির এক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। ওড়িয়া সিনেজগতের নক্ষত্রপতনে এদিন সকালেই পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্যের ঘোষণা করেছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি। শোকপ্রকাশ করে স্মৃতির সরণিতে ফিরে গেলেন তাঁর বাংলা ছবির নায়িকা ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তও (Rituparna Sengupta)।
স্মৃতিচারণায় অভিনেত্রী জানালেন, “একজন অসাধারণ ব্যক্তিত্ব, মানুষ, অভিনেতা চলে গেলেন। ওড়িয়া সিনে সাম্রাজ্যের উনি ‘মহানায়ক’ উত্তম মোহান্তি। আমাদের এখানে যেরকম উত্তম কুমার। ওখানে সেরকম উত্তম মোহান্তি। এই মহানায়কের এক দারুণ অধ্যায় রয়েছে। বাংলা এবং ওড়িয়া দুই ভাষাতেই উনি অনেক কাজ করেছেন এবং আমার যখন সৌভাগ্য হয়েছিল সেই মানুষটির সঙ্গে কাজ করার, তখন আমি সবে আমার অভিনয় কেরিয়ার শুরু করেছি। উনি আমার নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। ভাবা যায়! আর আমার ওঁকে ভীষণ ভালো লাগত। এত সুপুরুষ। আমি তখন খুবই বাচ্চা ছিলাম। উত্তমদাকে দেখেই আমার মন ভালো হয়ে যেত। সুদর্শন তো বটেই তবে ব্যক্তিত্বও ছিল নজরকাড়া। কী সুন্দর চেহারা, হাসি।”
ওড়িয়া ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির ‘পয়লা সুপারস্টারের’ সঙ্গে ঋতুপর্ণার অভিনয় জীবনের বেশ লম্বা সফর। অভিনেত্রী জানালেন, “আমি ওঁর সঙ্গে বারিপোতাতে গানের শুটিং করেছি। ওই ছবিতে মহাশ্বেতাদিও ছিলেন। আমিও ছিলাম। সেটে আমাকে দেখে জিজ্ঞেস করেছিলেন- ‘এই বাচ্চা মেয়েটা কোথা থেকে এল? হিরোইন হয়েছে।’ তারপর আমি উত্তমদার সঙ্গে ‘নাগপঞ্চমী’ করছি। সেই ছবিতে উনি আমার নায়ক না হলেও গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করছিলেন। পরবর্তীতে বেশ কিছু ওড়িয়া ছবিতে আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি। খুব ইন্টারেস্টিং বিষয় হল, আমার সিনেমাগুলিতে বিভিন্ন চরিত্রে আমি উত্তমদাকে পেয়েছিলাম। আমার নায়ক হওয়ার পাশাপাশি, আমার কাকা, এমনকী আমার বাবার ভূমিকাতেও অভিনয় করেছিলেন। স্বপন সাহার একটি ছবিতে উনি আমার বাবা হয়েছিলেন। একটা দীর্ঘসময় ধরে উত্তমদা কাজ করেছেন। ওড়িয়া ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে রীতিমতো রাজত্ব করেছেন তিনি।”
পেশাগত বিষয়ের পাশাপাশি উত্তম মোহান্তির সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবেও সুসম্পর্ক ছিল ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর। আবেগ ধরা কণ্ঠে তিনি জানালেন, “কী ভালো ব্যবহার। আমরা যখন লেকমার্কেটে থাকতাম তখন উনি আমার বাড়ির কাছেই ‘ট্রানজিট হাউজ’ নামে এক গেস্ট হাউজে উঠতেন। ওঁর স্ত্রীর সঙ্গেও আমার দারুণ আড্ডা হত। তখন আমার বাবা বেঁচেছিলেন। উত্তমদা আমার বাবাকে যেমন শ্রদ্ধা করতেন, তেমনই ভালোবাসতেন। দিন কয়েক আগেই যখন শুনলাম উনি অসুস্থ, তখনও খোঁজ নিলাম। বড় অকালেই চলে গেলেন উত্তমদা। তবে একটা সম্ভার সাজিয়ে দিয়ে গেলেন ওড়িয়া ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির জন্য। ওঁর ছেলেও এখন স্টার। আমি বলি, বাবুশান উত্তমদার যোগ্য উত্তরসূরী।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.