Advertisement
Advertisement
Kali Puja 2024

৩০০ বছরের দক্ষিণাকালী পূজিতা সুচিস্মিতার বাড়িতে, অলৌকিক ঘটনা জানালেন অভিনেত্রী

এবারের প্রস্তুতি কেমন? সংবাদ প্রতিদিন ডট ইন-কে জানালেন সুচিস্মিতা চৌধুরী।

Kali Puja 2024: Suchismita Chowdhury shares ancestral Puja rituals
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:October 28, 2024 5:37 pm
  • Updated:October 28, 2024 5:46 pm  

সন্দীপ্তা ভঞ্জ: ছোটপর্দার জনপ্রিয় মুখ সুচিস্মিতা চৌধুরী। খলনায়িকা হিসেবেই অবশ্য দর্শকদের অন্দরমহলে পরিচিত তিনি। তবে রিল লাইফে যাই হোক, রিয়েল লাইফে কিন্তু অভিনেত্রী আদ্যোপান্ত ঈশ্বরে বিশ্বাসী। বাড়িতে নিয়মিত ইষ্টদেবতা মহাদেবের পুজোর পাশাপাশি মহামৃত্যুঞ্জয় জপও করেন। সুচিস্মিতার বাড়িতে দক্ষিণাকালী পূজিতা হন ৩৬৫ দিন। দীপাবলিতেও মহাসমারোহে কালীপুজো হয় অভিনেত্রীর বেহালার বাড়িতে। এবারের প্রস্তুতি কেমন? সংবাদ প্রতিদিন ডট ইন-কে জানালেন সুচিস্মিতা চৌধুরী।

সুচিস্মিতার শ্বশুরবাড়ি অর্থাৎ চৌধুরী পরিবারের এই কালীপুজোর বয়স ২০০ বছর। অভিনেত্রী জানালেন, “আমার শ্বশুরবাড়ির সকলে যখন বাংলাদেশে থাকতেন, সেই তখন থেকে আমাদের মাকালী পূজিতা। ওঁরা আসলে ঢাকা বরিশালের লোক। ওখানকার বাংলাদেশের বাড়িতেই মা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন। দেশভাগের পর আমার শাশুড়ি মা কালীকে বাংলাদেশের বরিশাল থেকে এখানে আনেন। অন্তত তিন-চার প্রজন্ম ধরে আমাদের বাড়িতে মা ভবতারিণীর পুজো হয়। সূচীস্মিতা চৌধুরী জানালেন, তাঁদের দেবীমূর্তির বয়স প্রায় তিনশো বছরের বেশি। কষ্টি পাথরের তৈরি দক্ষিণাকালী। একদম দক্ষিণেশ্বরের মা ভবতারিণীর মূর্তির মতো। তবে আকারে ছোট। আমার বাপেরবাড়ি এবং শ্বশুরবাড়ির সকলেই শাক্ত। বাবার বাড়িতে দুর্গাপুজো হয়। আর শ্বশুরবাড়িতে কালীপুজো।”

Advertisement

কালীপুজোর দিনে মা নতুন করে সাজেন। প্রতিবার কালীঘাট থেকে লোক এসে মাকে সাজান। রং করা, তার পর নতুন বেনারসি শাড়ি-গয়নায় সাজানো হয় সুচিস্মিতাদের কুলদেবী দক্ষিণাকালীকে। অভিনেত্রী বললেন, “সারাবছর ধরে অনেকেই মানতের জন্য অনেক গয়না দেন, সেইসমস্ত পরে আমাদের মা কালীকে একেবারে অপরূপ লাগে দেখতে। সকাল থেকে ভোগ, নৈবদ্য প্রস্তুত করি। সমস্ত উপাচার পালন হয়। আমার ছেলে-বউমা লন্ডনে নিজেদের মতো করে পুজো করে। ভিডিও কলে অঞ্জলি দেয়। বড় কালীপুজোয় আমরা পরিবারের সকলে একত্রিত হই মায়ের সেবা করব বলে। এক সপ্তাহ আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। সারা বাড়ি নতুনভাবে সেজে ওঠে। চৌধুরী বাড়ির বড় উৎসব বলি আমরা এই দিনটিকে।” কালীপুজোর স্পেশাল ভোগে কী কী পদ থাকে? অভিনেত্রী সুচিস্মিতা জানালেন- খিচুড়ি ভোগ, পাঁচরকম ভাজা, লাবড়া, ফুলকপির তরকারি, পোলাও, কাশ্মিরী আলুরদমের পাশাপাশি পনিরের একটা পদ। আর শেষপাতে চাটনি এবং পায়েস।

প্রতি অমাবস্যায় প্রতিষ্ঠিত মা দক্ষিণাকালীকে ভোগ দেওয়া হয়। এবং দীপাবলিতে খুব ধুমধাম করেই পুজো হয়। কথা প্রসঙ্গে সুচিস্মিতা চৌধুরী এক অলৌকিক ‘মিরাকল’-এর ঘটনা ভাগ করে নিলেন। তিনি জানান, “কোভিডের সময়ে যখন সারা পৃথিবীতে আতঙ্কের ছায়া নেমে এসেছিল, মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে অনুভব করতে পেরেছিলাম। সেরকম পরিস্থিতিতে আমার গৃহদেবী মাকালী এবং দেবাদিদেব আমার ইষ্টদেবতা, আমাকে খুব শক্তি দিয়েছিলেন। কথাতেই আছে, শক্তি এবং শিব একসঙ্গে থাকেন। আমি সেইসময়ে টের পেয়েছিলাম। অনুভব করেছিলাম, আমার পিঠে হাত রেখে কেউ আশ্বাস দিচ্ছেন- সব ঠিক হয়ে যাবে। তারপর থেকেই আমি মহামৃত্যুঞ্জয় জপ করি। আরেকবার পুজো করার সময়ে আমার হাতে বহু পুরনো শিবলিঙ্গ দু টুকরো হয়ে যায়। আমি দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। সেইসময়ে অদ্ভূতভাবে বেণারস থেকে নির্দেশ আসে যে নর্মদেশ্বর মহাদেব প্রতিষ্ঠা করা দরকার। কিন্তু কীভাবে পাব? কোথায় পাব? জানি না। এসবের মধ্যেই একজন পরিচিত আমাকে উজ্জয়ন মহাকালেশ্বর থেকে আমাকে নর্মদেশ্বর মহাদেব এনে দেন। আমার কাছে এটাও কম অলৌকিক ঘটনা নয়। অন্তর থেকে ভরসা করলে ঈশ্বর পাশে থাকেন, আমার বিশ্বাস।”

সামনেই ভূত চতুর্দশী। ভূতে কি সুচিস্মিতা ভয় পান? তাঁর কথায়, পঞ্চইন্দ্রিয় দিয়ে আমরা যে জিনিসটা অনুভব করতে পারি না, তাকে নিয়েই আমাদের মনে নানারকম সন্দেহ, প্রশ্নের উদ্রেক হয়। সেগুলোকে যদি ‘ভয়’ নাম দেওয়া যায়, তাহলে তাই। আমি ভূতে ভয় পাই না বললে ভুল হবে। তবে বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামাই না। আমার মনে হয়, এই পৃথিবীটা সকলের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের জন্য তৈরি। যেখানে ‘স্পিরিট’ বলে কিছুর অস্তিত্ব রয়েছে। আমরা আস্তিকরা এটা বিশ্বাস করি যে, অনেকগুলো স্তরের উপর ঈশ্বর রয়েছেন। অতঃপর মৃত্যুর পর পরলোক বা আত্মালোক বলেও যে একটা বিষয় রয়েছে, সেটায় বিশ্বাস করি। ভূতের অস্তিত্ব থেকে থাকে, তাহলে তারা তাদের মতো রয়েছে, আর আমরা আমাদের মতো জীবন কাটাচ্ছি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement