রোমান্টিক ছবি ‘অউরো মে কাহাঁ দম থা’ মুক্তি পেতে চলেছে ৫ জুলাই। অজয় দেবগণ-টাবু এই ছবির প্রেমের কান্ডারি। মুম্বইয়ে সম্প্রতি হয়ে গেল ছবির ট্রেলার লঞ্চ। নীরজ, অজয়, টাবু-সহ উপস্থিত ছিলেন ছবির অন্যান্য কলাকুশলীরা। প্রেস কনফারেন্স ছাড়াও সাংবাদিকদের সঙ্গে আড্ডা দিলেন সকলে। শুনলেন বিদিশা চট্টোপাধ্যায়।
নীরজ, আপনি কেরিয়ারের শুরুতে প্রেমের ছবি বানাতে চেয়েছিলেন, সেই সময় প্রোডিউসার পাননি। এখন এমন একটা সময় আপনার প্রেমের ছবি রিলিজ করছে, যখন ট্রেন্ড অ্যাকশন ছবির। আপনাকে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়নি?
নীরজ : এই ধরনের সংশয়, প্রশ্ন সারাজীবন থাকবে। তাই যেটা করার সেটাই করে যাওয়া উচিত, অন্যদের উপদেশ না শুনে। আমি যেটা বিশ্বাস করি সেই কাজটাই করি। এবং যেহেতু চারপাশে এত বেশি অ্যাকশন ছবি হচ্ছে তাই এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে প্রেমের ছবি করা আরও বেশি দরকার।
এখনকার বলিউড ছবিতে প্রেম করার বয়স বেড়ে গিয়েছে অর্থাৎ ম্যাচিওরড লাভস্টোরিও আমরা দেখতে পাচ্ছি। অজয় এবং টাবুর কাছে জানতে চাই সিনেমায় এই ধরনের পোর্ট্রেয়াল নিয়ে আপনাদের কী মতামত?
অজয় : বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যে কোনও অনুভূতিই গভীর থেকে গভীরতর হয়। অল্প বয়সে একটা সারল্য থাকে, ইমপালস থাকে যেটা বয়সের সঙ্গে বদলে যায়। বয়স বাড়লে অনেক কিছু অ্যানালাইজ করতে পারি তখন অল্প বয়সের অনেক না বোঝা অনুভূতি পরিষ্কার হয়।
তাব্বু : পরিণত প্রেমের গল্প দেখানোর দায় ফিল্মমেকারদের থাকে। এই ছবির জন্য আমি নীরজকে কৃতিত্ব দিতে চাই। আমাকে এবং অজয়কে নিয়ে এমন একটা গল্প ভাবার জন্য। সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সিনেমাও পাল্টায়। আজকাল পর্দায় নানান বয়সের মানুষের মধ্যে প্রেম আরও বেশি করে দেখাতে পারেন পরিচালকরা। সেই সুযোগ তৈরি হয়েছে। তবে ব্যক্তিগত ভাবে আমি বয়স্কদের প্রেম নিয়ে আলাদা করে ভাবি না।
২০২৪-এ দাঁড়িয়ে প্রেমকে কীভাবে দেখেন আপনারা?
অজয় : আজ থেকে একশো-দুশো বছর আগে যেভাবে দেখা হত, সেই ভাবেই দেখি। অনুভূতি বদলায় না। আজকের যুগে হয়তো এক্সপ্রেশন বদলেছে। বাকিটা একই আছে।
তাব্বু : আমাকে একটু আগেই একজন প্রশ্ন করলেন বয়স হওয়া সত্ত্বেও রোমান্টিক লিড হিসাবে অভিনয় করা কতটা এমপাওয়ারিং। আগেই বলেছি প্রেমকে ওইভাবে দেখি না। বয়স কোনও বাধা নয়। আসলে প্রেম মানে তো একটা সম্পর্কও এবং ছবিতে হিউম্যান রিলেশনশিপ খুব সুন্দর ভাবে এক্সপ্লোর করা যায়।
নীরজ, আপনার অলটাইম ফেভারিট প্রেমের ছবি কোনগুলো?
নীরজ : ‘সিনেমা প্যারাডিসো’, ‘এক দুজে কে লিয়ে’…। এই ছবিগুলোর নাম এখনও করছি মানে, গভীরভাবে এই ছবি দুটো আমার অবচেতনে রয়ে গিয়েছে। ‘এক দুজে কে লিয়ে’ এখনও দেখলে নতুন কিছু খুঁজে পাই। যে ভাবে ক্রস-কালচার, ভাষা নিয়ে ছবিটা তৈরি হয়েছে–ইটস অ্যামেজিং। তার মানে এই নয় যে, এই ছবির কপি করে ছবি করব। কিন্তু এই ভাবে গল্প বলাও শেখার মতন।
ছবির মিউজিক ডিরেক্টর এম. এম. ক্রিম বলছিলেন প্রেমের গান বললেই ওঁর হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের কথা মনে পড়ে। এই ছবির গানে সেই রেশ থাকবে?
নীরজ : এম. এম. ক্রিম একজন লিভিং লেজেন্ড। ওর সঙ্গে মিউজিক নিয়ে নানান আলোচনা হয়েছে। হেমন্তদার একটা গান আমাদের আড্ডায় বারবার উঠে এসেছে– ‘অলিরও কথা শুনে…..’। ওঁর মিউজিক্যাল ল্যান্ডস্কেপের বিস্তার অশেষ।
কলকাতার সঙ্গে আপনার নিবিড় যোগ…
নীরজ : হ্যাঁ, কলকাতায় জন্মেছি, বড় হয়েছি। অক্সফোর্ড বুক স্টোর ছিল আমার প্রিয় জায়গা। স্কুলে আন্ডার সিক্সটিন ক্যাথলিক ফুটবল টিমের জন্য খেলতে গিয়ে ডনবস্কো লিলুয়া-পার্ক সার্কাসের মাঠে কিংবা জেভিয়ারের মাঠে খেলেছি। আমি পরিচালনা না করলেও ‘খাকি : বেঙ্গল চ্যাপ্টার’ শুট হচ্ছে কলকাতায়। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে আমার বহুদিনের পরিচয়। আমি এর আগেও জিৎ এবং আবিরের সঙ্গে বাংলা ছবি করেছি।
টাবু আপনার কাছে জানতে চাই এই দীর্ঘ চল্লিশ বছরের কেরিয়ারের আপনি এতটা সফল কীভাবে? এবং অজয় দেবগণের সঙ্গে আপনার এতদিনের কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে কী বলতে চান?
তাব্বু: এটা এত গভীর প্রশ্ন যে উত্তর দিতে অনেকটা সময় লেগে যাবে।
তবে এইটুকু বলব আমার দীর্ঘ কেরিয়ারে আমি সকলের কাছ থেকে ভালোবাসা, শ্রদ্ধা পেয়েছি। আর অজয়ের সঙ্গে আমার যাত্রা এখনও চলছে। আমি যতদিন বেঁচে থাকব এটা আমার জীবনের অংশ হয়েই থেকে যাবে।
অজয় আপনি বরাবরই নানান ধরনের ছবি করেছেন। অনেক সময়ই ট্রেন্ড থেকে বেরিয়ে গিয়েও কাজ করেছেন। প্রোডিউসার হিসাবে টাকার লগ্নি যখন অনেক তখন এই সময়ে দাঁড়িয়ে ‘‘অউরো মে দম কাহাঁ থা’-র মতো প্রেমের ছবি করা কতটা শক্ত?
অজয় : কতটা শক্ত সেটার থেকেও বেশি জরুরি হল ট্রেন্ডের বাইরে গিয়ে কাজ করা। গল্পটা শুনে আমার খুবই ভালো লেগেছিল। নীরজকে বলেছিলাম, বক্স অফিসের কথা না ভেবে ছবিটা করে ফেলি। আমি আগেও ট্রেন্ডের বাইরে গিয়ে ‘রেনকোট’, ‘তক্ষক’, ‘দিল ক্যায়া করে’-এর মতো ছবি করেছি। এই অভিজ্ঞতা থেকে যা শিখেছি সেটা আমার এখনও কাজে লাগছে।
তাব্বু আপনি তো ‘ডিউন’ ছবির ফ্র্যাঞ্চাইজিতে কাজ করতে চলেছেন। এর আগে আপনার বিদেশি ছবির কো-স্টার ছিলেন ইরফান খান। কিছু বলতে চান?
টাবু : নতুন ছবি নিয়ে এই মুহূর্তে কিছু বলতে পারব না। ইরফান খানকে নিয়ে কথা বলা মানে খুবই ইমোশনাল জায়গায় চলে যাওয়া। আজকে আমরা বরং ‘অউরো মে দম কাহাঁ থা’ নিয়েই কথা বলি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.