শম্পালী মৌলিক: চিরকাল ‘নাম্বার টেন’ মানেই স্পেশাল। আর সেই বিশেষ কিছু নিয়েই আসছে ‘চন্দ্রবিন্দু’র দশম অ্যালবাম ‘টালোবাসা’। প্রায় ১২-১৩ বছর বাদে আসছে তাঁদের নতুন অ্যালবাম। আর এই অ্যালবামের সঙ্গেই ফিরে আসছে এলপি রেকর্ড। সবথেকে বড় চমক এটাই। আইটিউনস, স্পটিফাইয়ের যুগে আস্ত অ্যালবাম? নব্বইয়ের নস্টালজিয়া ফেরাতে সেই অসম্ভবকেই সম্ভব করতে চলেছে ‘চন্দ্রবিন্দু’। ব্রহ্মাই সম্ভবত জানতেন চন্দ্রবিন্দুর গোপন ইচ্ছেটি।
এক যুগ বাদে এই নতুন অ্যালবাম বের করা প্রসঙ্গে অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, “একটা বয়স ছিল যখন বছর বছর আমাদের অ্যালবাম বেরত। আমাদের দু’চোখ জুড়ে স্বপ্ন ছিল, একদিন দশখানা অরিজিনাল অ্যালবাম বের হবে। প্রথম ক্যাসেট বেরিয়েছিল ১৯৯৭ সালে। তার ২৭ বছর পর চন্দ্রবিন্দু সত্যিই দশম অ্যালবাম বার করতে পারল।” রেকর্ডের আকারে নতুন অ্যালবাম প্রকাশের ভাবনা অবশ্য উপল সেনগুপ্তর মস্তিষ্কপ্রসূত। অনিন্দ্য বলছেন, “একটা ব্যাপারে ধন্দে পড়েছিলাম আমরা। এমন অ্যালবাম বেরবে সে শুধুই আইটিউনস আর স্পটিফাই’তে শোনা যাবে, এদিকে হাতে নেওয়া যাবে না, গন্ধ শোঁকা যাবে না নতুন গানের? বুদ্ধি বাতলাল উপল, রেকর্ড বার করি চল। এমন সাধু প্রস্তাবে সবাই একজোট হয়েছি। বন্ধুরা এগিয়ে এসেছে নানান দেশ-মহাদেশ থেকে। চন্দ্রবিন্দুর ১০ নম্বর অ্যালবাম শেষমেশ মুক্তি পাচ্ছে নতুন এক চেহারায়। এক অপার আনন্দ সরণী বেয়ে ক্যাসেট থেকে এই রেকর্ডে হাঁটার দীর্ঘ পথচলাগুলো খুব উত্তাল ও উত্তাপময় ছিল।”
উপল সেনগুপ্ত বললেন, “এত বছর পর আবার রেকর্ড! ভীষণ উত্তেজিত। রেকর্ড প্রায় উঠেই গিয়েছিল। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে পুরনো ব্যান্ডের রেকর্ডগুলো আবার ফিরে আসছে, নতুন ব্যান্ডগুলোও ভিনাইলে প্রিন্ট করাচ্ছে। আমাকে কেউ একজন আইডিয়াটা দিয়েছিল। তারপর দেখলাম, ভারত জুড়েই কোথাও এভাবে প্রিন্ট হয় না। ইংল্যান্ড বা চিনে করাতে হবে প্রিন্টটা। খরচটাও অনেকটা বেশি। এবার যেহেতু ‘চন্দ্রবিন্দু’ তেরো বছর পর, একেবারে নিজেদের উদ্যোগে অ্যালবামটা বের করছে, তাই একটু কম খরচে কীভাবে হতে পারে বিষয়টা, সেটা ভাবছিলাম। আমি বিভিন্নভাবে খোঁজ করতে করতে অস্ট্রেলিয়ার এক বন্ধুর সূত্রে অবশেষে একটা ব্যবস্থা করতে পেরেছি। সেই রেকর্ড তৈরির যন্ত্রতে আমাদেরই ‘টালোবাসা’ বেরচ্ছে, তার অন্যরকম রোমাঞ্চ! চন্দ্রবিন্দু অনেককিছু প্রথম করেছে। বাংলা ব্যান্ড হিসেবে প্রথম আমেরিকায় গিয়েছিল, প্রথমবার বিদেশে গিয়ে মাস্টারিং করেছিল, প্রথম বিদেশি rapper-এর সঙ্গে কোলাবরেট করেছিল। ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’র এত বছর পর এলপি আবার ফিরিয়ে আনাটাও ‘চন্দ্রবিন্দু’-ই ফিরিয়ে আনছে।”
‘টালোবাসা’ অ্যালবামের ভাবনা এল কীভাবে? অনিন্দ্য বলছেন, “অ্যালবাম বের করার ভাবনাটা আসলে বহুদিন ধরেই ছিল। কিন্তু আমাদের একাজ-সেকাজে আর হয়ে উঠছিল না। আর এই দীর্ঘবিরতির জন্য শ্রোতাদের কাছে সত্যিই আমার ক্ষমাপ্রার্থী। তবে এইসময়ে দাঁড়িয়ে নতুন বাংলা অরিজিনাল গান বের করতে পেরে আমাদের সত্যিই ভালো লাগছে। রেকর্ডটা নিয়ে মানুষের মধ্যে এত উন্মাদনা দেখছি, গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ২৫০ রেকর্ড বুকিং হয়ে গিয়েছে।” শেষপাতে চন্দ্রবিন্দুর দুই কাণ্ডারি জানালেন, “ভিনদেশ থেকে প্রকাশিত লিমিটেড এডিশন ৩৫০টি রেকর্ড পাওয়া যাবে অগ্রিম বুকিং এর ভিত্তিতে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.