সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আজমেরী হক বাঁধন (Azmeri Haque Badhon), বাংলাদেশের প্রথম মহিলা যিনি সন্তানের পূর্ণ অভিভাবকত্ব পেলেন। পদ্মাপারে মা হিসেবে তিনি যে ইতিহাস গড়লেন, তা বলাই বাহুল্য। গত ২২ এপ্রিল আদালতের রায়ে মা হিসেবে জয়ের হাসি হাসলেন অভিনেত্রী।
এর আগে বাংলাদেশের কোনও মহিলা সন্তানের পূর্ণ অভিভাবকত্ব পাননি। বাঁধনকে এই স্বীকৃতি দেওয়ার পাশাপাশি নাবালক সন্তানের অভিভাবকত্ব নির্ধারণে নীতিমালা প্রণয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের সম্মিলিতভাবে একটি কমিটি গঠন করার নির্দেশও দিয়েছে বাংলাদেশের হাইকোর্ট। আদালতের তরফে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রক এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে আগামী ৪ আগস্টের মধ্যে ওই কমিটিকে নীতিমালা দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সোমবার বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজি জিনাত হকের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই নির্দেশ দেন।
বাংলাদেশের অভিভাবক ও প্রতিপাল্য আইন, ১৮৯০-এর ১৯ (খ) ধারা অনুসারে কোনও নাবালক সন্তানের বাবা জীবিত থাকা অবস্থায় অন্য কারও পক্ষে সেই নাবালক সন্তানের অভিভাবকত্ব নেওয়ার সুযোগ নেই। সংশ্লিষ্ট আইনের ধারা সংবিধান স্বীকৃত মৌলিক অধিকারের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় কেন তা সংবিধানের ২৬, ২৭ ও ২৮ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তাও জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট।
আদালতের এই রায়ে আজমেরী হক বাঁধনের আইনজীবী বলেন, “বাঁধন যেটা পেলেন সেটা অনেক বড় একটা অর্জন। বাংলাদেশে মহিলারা সন্তানদের নিজেদের হেফাজতে পাচ্ছেন। কিন্তু একটি ঘটনা ছাড়া আর কাউকে অভিভাবকত্ব দেওয়া হচ্ছে না। আজমেরী হক বাঁধন তাঁর সন্তানের অভিভাবকত্ব পেয়েছিলেন। বাংলাদেশে এক নতুন দৃষ্টান্ত তৈরি হল।” উচ্ছ্বসিত আজমেরী হক বাঁধন বলেন, “এটা শুধুমাত্র আমার একার অর্জন হয়ে থাক সেটা আমি চাই না। আমি চাই বাংলাদেশের সব মায়েরাই অধিকার থাকুক তাঁর সন্তানের উপর।”
২০১৮ সালের ৩০ এপ্রিল ঢাকার দ্বাদশ সহকারী বিচারক এবং পারিবারিক আদালতের বিচারক ইসরাত জাহান একমাত্র মেয়ে মিশেল আমানি সায়রার অভিভাবকত্ব দিয়েছিলেন বাঁধনকে। সময়ের সঙ্গে সেই গুরুত্ব বুঝতে পেরেছেন অভিনেত্রী। আজমেরীর কথায়, “যেহেতু আমিই সায়রার সম্পূর্ণ ভরণ-পোষণ করেছি, তাই আমি ভেবেছিলাম কেন আমি তার অভিভাবক হতে পারব না? সায়রার বাবা কোনও দায়িত্ব পালন করেননি বলেই আমাকে অভিভাবকত্ব দেওয়া হয়েছিল। সেটা একটা ব্যতিক্রমী রায় ছিল।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.