Advertisement
Advertisement
Science

শিক্ষকের চাকরি নিয়ে টানাপোড়েন, পিওর সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনার আগ্রহ হারাচ্ছে পড়ুয়ারা

টেকনিক্যাল, ভোকেশনাল কোর্সে ভর্তি হওয়ার ঝোঁক বাড়ছে। সাহিত্য ও কলা বিভাগের অন্যান্য বিষয়েও অনার্স নিয়ে পড়াশোনায় আগ্রহী ছাত্রছাত্রীরা।

Problem relating to tacher recruitment jobs, students are losing interest in studying pure science
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:May 9, 2024 9:29 pm
  • Updated:May 10, 2024 3:14 pm  

সম্যক খান, মেদিনীপুর: কেমিস্ট্রিতে আসন সংখ‌্যা ৯৩। কিন্তু সেখানে ছাত্রছাত্রী মাত্র ৫ জন। আবার ফিজিক্সে আসনসংখ‌্যা ৪৭ তো সেখানে ভর্তি হয়েছিল ৬ জন। কিন্তু শেষমেশ পরীক্ষা দিলেন মাত্র ২ জন। প্রথমটি গড়বেতা কলেজের উদাহরণ তো পরেরটি জঙ্গলমহলের গোয়ালতোড় কলেজের উদাহরণ। অঙ্ক বিষয়ের অবস্থাও তথৈবচ। একপ্রকার বলতে গেলে পিওর সায়েন্স (Science) থেকে ক্রমশঃ আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন ছাত্রছাত্রীরা।

জেলা শহর এবং শহরতলির কয়েকটি কলেজ বাদ দিলে জেলার অধিকাংশ কলেজেরই (College)এই অবস্থা চলছে। যেখানে ছাত্রছাত্রীর তুলনায় ওই বিভাগে শিক্ষক সংখ‌্যা বেশি। গড়বেতা কলেজের অধ‌্যক্ষ হরিপ্রসাদ সরকারের কথায়, সাধারণ মধ‌্যবিত্ত বাঙালির একটা বড় অংশ তাদের ছেলেমেয়েদের ভবিষ‌্যৎ গড়ার জন‌্য তাকিয়ে থাকত এসএসসির (SSC) দিকে। কিন্তু এখন এসএসসির মাধ্যমে চাকরি পেয়েও ঘোর বিপদ। নিয়োগের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। তাই অনেকেই এখন অনার্স বা এমএসসি করার দিকে না গিয়ে টেকনিক‌্যাল কোর্স বেছে নিচ্ছেন। বিশেষ করে ছাত্রীদের একটা বড় অংশ তো নার্সিং কোর্সের দিকে চলে যাচ্ছে। ছাত্ররাও ইঞ্জিনিয়ারিং লাইন থেকে শুরু করে অন‌্যান‌্য জব ওরিয়েন্টেড কোর্সের দিকে ছুটছে। ফলে গ্রামীণ কলেজগুলির অবস্থা দিনের পর দিন খুবই শোচনীয় হয়ে পড়ছে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: রাজভবনের সিসিটিভি ফুটেজে প্রকাশ্যে অভিযোগকারিণীর মুখ! কী প্রতিক্রিয়া তরুণীর?]

কলেজগুলিতে আর্টস এবং বায়োলজিতে কিছু পড়ুয়া পাওয়া গেলেও পিওর সায়েন্সে পড়ুয়া খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তার কলেজে গত বছর কেমিস্ট্রিতে (Chemistry) মাত্র ৫ জন, ফিজিক্সে ৭ জন এবং অঙ্কে ১০ জন ভর্তি হয়েছে। কমার্সে পড়ার আগ্রহ অনেক আগেই হারিয়েছে ছাত্রছাত্রীরা। এবার পিওর সায়েন্সেও একই অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তুলনামূলক বায়োলজি (Biology) এবং আর্টসে তাও কিছু ছাত্রছাত্রী ভর্তি হচ্ছে। গড়বেতা কলেজেরই হিসাব অনুযায়ী বাংলায় ১০০, ইংরাজিতে ৮০, বটানিতে ৩০, জুওলজিতে ৪৫ জন ছাত্রছাত্রী আছে। একইভাবে ধুঁকছে গড়বেতার পাশের গোয়ালতোড় কলেজও। কলেজ অধ‌্যক্ষ মন্টু কুমার দাস বলেছেন, পিওর সায়েন্সের অবস্থা খুবই খারাপ। পাঁচ-ছয়জন করে ভর্তি হচ্ছে। তাও তারা টিকছে না। দু-একজন নিয়ে ওই বিভাগগুলি টিমটিম করে জ্বলছে। করোনা পরবর্তী সময় থেকেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে মন্তব‌্যও করছেন তিনি। তাঁর কথায়, ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে অভিভাবকরাও দ্বিধাবিভক্ত। সকলেই কেরিয়ার গড়ার লক্ষ‌্যে জব ওরিয়েন্টেড কোর্সের দিকে ছুটছে। তার উপর চার বছরের অনার্স কোর্স চালু হওয়ায় এবারও অনার্সে ভর্তির ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের কতটা আগ্রহ থাকবে তা নিয়েও সন্দেহ আছে।

[আরও পড়ুন: অভিযোগকারীরা বিজেপির মুখোশ খুলে দিচ্ছে! সন্দেশখালি কাণ্ডে এবার তৃণমূলের পাশে কংগ্রেস]

তবে এত সবের মধ‌্যেও বিসিএ-র (BCA) মতো কোর্সে ভর্তি নিয়ে কিছুটা হলেও আগ্রহ আছে ছাত্রছাত্রীদের মধ‌্যে। আবার আর্টসের বিষয়গুলিতেও ৫০ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশ আসন ভরে যাচ্ছে। আবার আদিবাসী অধ‌্যুষিত কলেজগুলিতে সাঁওতালি ভাষায় পড়ার বিষয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছেন আদিবাসী ছাত্রছাত্রীরা। বাংলা, ইংরাজির পাশাপাশি সংস্কৃত অনার্স নিয়েও ভর্তি হচ্ছেন তারা। তবে শিক্ষাবিদরাও মানছেন যে উচ্চমাধ‌্যমিক পাশ করলেই একটু ভালো পড়াশোনায় থাকা ছাত্রছাত্রীরা কেউ আর সাধারণ বিষয়গুলি নিয়ে পড়াশোনা করতে চাইছেন না। ভোকেশনাল কোর্স থেকে শুরু করে নানা টেকনিক‌্যাল কোর্সে ভর্তি হচ্ছেন তারা। চার-পাঁচবছর ধরে কেউ আর বিশেষ পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চাইছেন না। দু-একবছরের মধ‌্যেই তারা রোজগারের জন‌্য কাজ চাইছেন। চিরাচরিত বিষয়গুলি নিয়ে পড়ার আগ্রহ হারানোর এটাও একটা কারণ বলেই মনে করছেন তারা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement