সন্দীপ চক্রবর্তী: অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে আমূল বদল হচ্ছে রাজ্যের এমপ্লয়মেন্ট ব্যাংক (Employment Bank)। আর এর ফলেই পছন্দমতো চাকরির খোঁজ পাবেন ইচ্ছুক প্রার্থীরা। তেমনই চাকরিদাতারা বাছাই করতে পারবেন যোগ্যতমদের। শুধু তাই নয়, প্রত্যেকের আলাদা ইউনিক নম্বর থাকবে, যার মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন কোন পর্যায়ে, বুঝে নিতে পারবেন। অর্থাৎ ট্র্যাকিং করা যাবে। বায়োডাটাও পুনর্গঠিত করা যাবে। আর থাকবে এসএমএস অ্যালার্ট। সরকারি আর বেসরকারি চাকরির জন্য আলাদা মডিউলের পাশাপাশি সুযোগ থাকবে বাংলায় আবেদনের। ফলে বিভিন্ন যোগ্যতার মানুষ যুক্ত হবেন। উদ্দেশ্য মূলত রাজ্যে কর্মসংস্থান সম্পর্কিত এক জানালা পদ্ধতি চালু করা।
নবান্ন সূত্রে খবর, রাজ্যে বিপুল পরিমাণ চাকরির (Job) সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট কিছু দপ্তরকে ডেটাবেস পরিকাঠামো উন্নত করতে বলা হয়েছিল। মূলত কিছু শিল্পপতি চেয়েছেন, সরাসরি নির্দিষ্ট পোর্টালের বা অ্যাপের মাধ্যমে উপযুক্ত প্রার্থী খুঁজে নিতে। তাঁদের বক্তব্য, বাংলায় অতি দক্ষ বা অদক্ষ, সব ধরনের লোক আছে, শুধু নির্দিষ্ট প্ল্যাটফর্ম নেই। আগে থেকেই এমপ্লয়মেন্ট ব্যাংক থাকলেও সেটার খোলনলচে বদলে ফেলার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। বাণিজ্য সম্মেলনের পর তাগিদ বেড়েছে বেশি। শ্রম দপ্তর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বিভিন্ন যোগ্যতার কর্মপ্রার্থীদের সঙ্গে চাকরিদাতাদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়। অনেকটা সেতুবন্ধনকারী হিসাবে কাজ করবে এটি। শ্রমমন্ত্রী বেচারাম মান্নার বক্তব্য, “রাজ্যে শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান বাড়াতে মুখ্যমন্ত্রীর যে উদ্যোগ, এমপ্লয়মেন্ট ব্যাংকের পুনরুজ্জীবন তারই অঙ্গ।”
উল্লেখ্য, ২০১২ সালে রাজ্যে এমপ্লয়মেন্ট ব্যাংক চালু করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ডিজিটালাইজড ভাবে প্রায় ৩৬ লক্ষের ডেটাবেস তৈরি হয়েছে। রয়েছে রাজ্যের নামী সংস্থার ডেটাবেসও। কর্মনিয়োগ সংক্রান্ত যাবতীয় পরিকাঠামোর সঙ্গেও যুক্ত। বর্তমানে ৮০০-র বেশি সংস্থাও পোর্টালে যুক্ত। যুবশ্রী প্রকল্পে এক লক্ষ জনকে প্রতি মাসে দেড় হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু পোর্টালের পারফরম্যান্স আশানুরূপ হয়নি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। গত ৯ বছর ধরে কোনও আধুনিকীকরণ হয়নি। প্লেসমেন্টের বিচারে তেমন সাড়া মেলেনি।
কেন পুনরুজ্জীবন? সফটওয়্যার ও ডিজাইনে আদিকালের প্রযুক্তি। সাইবার অ্যাটাক ও সার্ভার প্রায়ই থেমে থাকছে। আরও অভিযোগ, পোর্টাল মোবাইল বা ইউজার ফ্রেন্ডলি নয়। এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ ও সেন্ট্রাল অ্যাডমিনের মাধ্যমে ব্যাংক ডেটাবেসের সুবিধা নেই। একই নামের ও একই জন্মতারিখের উপভোক্তার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা যায়। সরাসরি এসএমএস করা যায় না বা আসে না। বায়োডাটার ডাটা পুনর্গঠন নেই। নির্দিষ্ট সময় পেরোলেও কাজে ইচ্ছুকদের জন্য ‘জব অ্যালার্ট’ যেমন নেই, তেমনই অনলাইনে চাকরি খোঁজারও উপায় নেই। তাঁরা কাজ খুঁজতে ট্র্যাকিং করতে পারেন না।
উপায় হল, এনরোলমেন্ট ফর্ম—সহ গুরুত্বপূর্ণ টেক্সট বাংলাতেও হবে। যোগ্যতার বিস্তারিত তথ্য থাকবে। চালু হবে বারকোড প্রিন্টেড এনরোলমেন্ট কার্ড অপশন। থাকবে সরাসরি ‘জব সার্চ ও জব অ্যাপ্লাই’ অপশন। এবার ইন্টেলিজেন্ট অ্যান্ড অ্যালগোরিদমিক ইঞ্জিন ব্যবহার করে প্রার্থীদের দক্ষতা ও কাজের তুলনা করে কাজ দেওয়া যাবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.