গৌতম ব্রহ্ম: কেউ বি টেক, কেউ আবার এম টেক। কেউ বায়োটেকনোলজি নিয়ে পড়েছেন। কেউ কম্পিউটার সায়েন্স। এমন ১১০০ ইঞ্জিনিয়ার ওয়ার্ড মাস্টারের পদে চাকরি চেয়ে আবেদন জানালেন। ইঞ্জিনিয়ারদের চাকরির বাজারের এমনই করুন অবস্থা। ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে ইন্টারভিউ শুরু। সম্প্রতি ওয়ার্ড মাস্টারের বহু পদ ফাঁকা হয়েছে। সেই পদেই গত ফেব্রুয়ারি—মার্চে লোক চেয়ে বিজ্ঞাপন দিয়েছে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল হেলথ রিক্রুটমেন্ট বোর্ড’। তবে ‘ওয়ার্ড মাস্টার’ পদের নতুন নামকরণ হয়েছে ‘ফেসিলিট ম্যানেজার’। শূণ্যপদের সংখ্যা ৮২৫। প্রচুর আবেদনপত্র জমা পড়েছে। তার মধ্যে ঝাড়াই—বাছাই করে ৪২১৭জনকে ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, এর মধ্যে ১১০০ প্রার্থীই ইঞ্জিনিয়ার। কেউ বিটেক, কেউ এম টেক। কেউ আবার আয়ুশ চিকিৎসক। হোমিওপ্যাথি, আয়ুর্বেদ বা ইউনানি নিয়ে পড়ে গ্র্যাজুয়েট হয়েছেন। স্বাস্থ্যভবন সূত্রের খবর, বিজ্ঞাপনে সাড়া দিয়ে তিন লক্ষের বেশি প্রার্থী আবেদন করেছেন। লিখিত পরীক্ষায় বসার সুযোগ পেয়েছেন ১৬,৩৯৩জন। এর মধ্যে অসংরক্ষিত প্রার্থীর সংখ্যা ৪২১৭জন। যার ১১০০ প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএইচএমএস, বিএএমএস, বিই, বি টেক, বিবিএ।
ইঞ্জিনিয়ার প্রার্থীদের বক্তব্য, গ্রুপ সি গোত্রের হলেও ফেসিলিটি ম্যানেজারের চাকরিটি স্থায়ী চাকরি। নিরাপত্তা আছে। জানা গিয়েছে, ফেসিলিটি ম্যানেজারের ‘জব প্রোফাইল’—এর সঙ্গে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সেই অর্থে কোনও সম্পর্ক নেই। প্রযুক্তিবিদ হয়েও তাঁদের মূলত ওয়ার্ড পরিষ্কার—পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব নিতে হবে। তদারকি করতে হবে হাসপাতালের সৌন্দর্যায়নের। সব দেখেশুনে বেজায় চিন্তায় প্রযুক্তি বিশারদরা। তাঁদের বক্তব্য, ইঞ্জিনিয়ারদের কাজের পরিধি ক্রমশ সঙ্কুচিত হচ্ছে। সরকারি গ্রুপ ডি পদের জন্যও আবেদন করে বসছেন গ্র্যাজুয়েটরা। কাজের বাজারের হাল এতটাই খারাপ।
এ রাজ্যে সরকারি, বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় আশিটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। প্রায় ৩৮ হাজার আসন। তার মাত্র ৫০ শতাংশ ভর্তি হয়। এর থেকেই বোঝা যায়, ইঞ্জিনিয়ার পেশার কদর কমছে। কমছে কাজের সুযোগও। তাই যে পেশায় সাধারণ গ্রাজুয়েটদের আসার কথা, সেখানে ভাগ বসাচ্ছেন ইঞ্জিনিয়ার ও আয়ুশ চিকিৎসকরা। ফলে সাধারণ গ্র্যাজুয়েটদের কাজের পরিধিও সঙ্কুচিত হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.