Advertisement
Advertisement
Economics

অর্থনীতি নিয়ে উচ্চশিক্ষা, কোন কোন ক্ষেত্রে মিলতে পারে চাকরি?

বর্তমান কাজের বাজারে অর্থনীতি নিয়ে পড়া ছাত্রছাত্রীদের দারুণ চাকরি রয়েছে।

Job opportunities after studying economics

প্রতীকী ছবি

Published by: Sayani Sen
  • Posted:July 18, 2024 2:33 pm
  • Updated:July 18, 2024 2:33 pm

ইকোনমিক্স চিরকালই কলার উঁচু করা সাবজেক্ট। গবেষণা-চাকরির বিস্তৃতি নিয়ে বিশ্লেষণে কলকাতা বিশ্ববিদ‌্যালয়ের অর্থনীতির গবেষক, অধ‌্যাপক ড. সুগত চট্টোপাধ‌্যায়। শুনলেন অনিন্দ‌্য সিংহ চৌধুরী।

রাষ্ট্র হোক কিংবা বাড়ি, আর্থিক দিকটা যদি ঠিক না থাকে, তাহলে কিন্তু কখনও উন্নতি সম্ভব নয়। তাই তো আর্থিক ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের চাহিদা আগেও ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। সেই মতো অর্থনীতি নিয়ে যারা পড়াশোনা করে, তাদের কাজের বাজারে অতীতেও ভালই কদর ছিল, আর আগামিদিনে থাকবেই। এই তো কয়েকবছর আগেই উচ্চমাধ‌্যমিকের ‘ফার্স্ট বয়’ অর্থনীতি নিয়ে উচ্চশিক্ষার পথেই পা বাড়িয়েছে। স্বপ্ন অর্থনীতি নিয়ে উজ্জ্বল ভবিষ‌্যৎ গড়া।

Advertisement

আর সবচেয়ে বড় কথা, অর্থনীতি নিয়ে নোবেল পেয়ে ভারতের নাম বিশ্বমঞ্চে উজ্জ্বল করেছেন অমর্ত্য সেন ও অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপ্যাধায়। তাই অর্থনীতির কোনও দিক নিয়ে গবেষণা করে ভবিষ্যতে এ দেশের আরও কেউ হয়তো নোবেল পেতেই পারে। তাই সায়েন্স বা আর্টসের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে উচ্চমাধ্যমিকের পরে ইকোনমিক্স বা অর্থনীতি পড়ার আগ্রহ ভালই দেখা যায়। হওয়াটাই তো স্বাভাবিক, কেননা, এ রাজ্য তো বটেই, দেশের অন্যত্র কিংবা বিদেশেও অর্থনীতি নিয়ে পড়ার দারুণ সুযোগ রয়েছে। বর্তমান কাজের বাজারে অর্থনীতি নিয়ে পড়া ছাত্রছাত্রীদের দারুণ চাকরি রয়েছে। সেই কারণে এখন উচ্চমাধ‌্যমিক স্তরে ‘ইকো-স্ট‌্যাট-ম‌্যাথ’ কিংবা ‘ইকো-ম‌্যাথ’ কম্বিনেশন পড়ুয়াদের মধ্যে ‘হিট’।

স্কুলশিক্ষক থেকে অধ‌্যাপক
অর্থনীতি নিয়ে পড়ে সরকারি-বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক হওয়ার সুযোগ তো আছেই। সঙ্গে কলেজ বা বিশ্ববিদ‌্যালয়ে অধ‌্যাপক হওয়া যায়। এখন বহু বেসরকারি কলেজ-বিশ্ববিদ‌্যালয়ে অর্থনীতি পড়ার সুযোগ আছে। এমনকী, কেউ যদি অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করে, তাহলে স্কুলে অঙ্কের শিক্ষক হিসাবেও যোগ দেওয়া যায়।

ব‌্যাঙ্কের কর্মচারী টু ম‌্যানেজার
অর্থনীতি নিয়ে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর হওয়ার পর অনেকেই ব‌্যাঙ্কের পরীক্ষা দিয়ে সরকারি-বেসরকারি ব‌্যাঙ্কের কর্মচারী হতে পারে। অনেকেই আবার ব‌্যাঙ্কের উচ্চপদ থেকে ম‌্যানেজার পদে যোগ দিতে পারে।

কর্পোরেট কোম্পানিতে
সফটওয়‌্যার কোম্পানি হোক কিংবা অন‌্যান‌্য কর্পোরেট সংস্থায় ফিনান্স বিভাগের কর্মী থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক পরামর্শদাতা হিসাবেও কাজ করার সুযোগ আছে। এমনকী, সরকারি দফতরের অর্থনীতি বিভাগেও এই বিষয়ের ছাত্রছাত্রীদের বেশ ভাল চাহিদা আছে। পাশাপাশি, সংবাদপত্র থেকে টেলিভিশন মিডিয়াতেও অর্থনীতি নিয়ে পড়া ছাত্রছাত্রীরা ‘বিজনেস রিপোর্টার’ হিসাবে যোগ দেয়।

সরকারি উচ্চপদে
অনেকে যোগ দেয় ইন্ডিয়ান ইকোনমিক সার্ভিস, ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস বা ডব্লিউবিসিএস-এর মতো সরকারি চাকরিতে।

[আরও পড়ুন: অবশেষে NEET-PG পরীক্ষার দিন ঘোষণা করল বোর্ড, দুই শিফটে হবে পরীক্ষা]

গ্র‌্যাজুয়েশন কিন্তু দেশেই হোক
পশ্চিমবঙ্গে কলকাতা, বর্ধমান, কল্যাণী, উত্তরবঙ্গ, ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলির অন্তর্গত বহু কলেজেই অর্থনীতি পড়ানো হয়। মৌলানা আজাদ, আশুতোষ, লেডি ব্রেবোর্ন, বেথুন, যোগমায়া দেবী, বাসন্তীদেবী , বিধাননগর, কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট-সহ বহু কলেজেই অর্থনীতি রয়েছে। সেন্ট জেভিয়ার্স (স্বশাসিত), রামকৃষ্ণ মিশন রেসিডেনশিয়াল কলেজ (নরেন্দ্রপুর, স্বশাসিত), প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েও স্নাতক স্তরে বিষয়টি আছে।

দিল্লির সেন্ট স্টিফেন্স, লেডি শ্রীরাম , মিরান্ডা হাউস বা হিন্দু কলেজ, মুম্বইয়ের সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ, মাদ্রাস প্রেসিডেন্সি কলেজ, বেঙ্গালুরুর ক্রাইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেলে সতি্যই দারুণ হবে। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে নম্বরের ভিত্তিতে ভর্তি করা হয়। তবে কোথাও কোথাও প্রবেশিকা পরীক্ষা হয়। সেখানে মোটামুটি ইংরেজি এবং অঙ্কের উপরেই পরীক্ষা হয়। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানেই বিষয়টি বিএসসি হিসাবে পড়ানো হয়। তবে দু’-একটা জায়গায় বিএ হিসাবেও অর্থনীতি পড়ানো হয়।

উচ্চশিক্ষার দারুণ সুযোগ
গ্র্যাজুয়েশনের পর এমএ বা এমএসসি, এম ফিল, পিএইচডি করা যায়। সেন্ট্রাল বা স্টেট ইউনিভার্সিটিগুলিতে এই ধরনের উচ্চশিক্ষার সুযোগ থাকেই। অনেকে ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক‌্যাল ইনস্টিটিউটে মাস্টার অব সায়েন্স ইন কোয়ান্টিটেটিভ ইকোনমিক্স কোর্স পড়তে যায়। ভর্তি হতে ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক‌্যাল ইনস্টিটিউট পরিচালিত প্রবেশিকা পরীক্ষা দিতে হয়। কোর্সটি দু’বছরের। জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব সোশাল সায়েন্সেস-এর অন্তর্গত সেন্টার ফর ইকোনমিক স্টাডিজ অ্যান্ড প্ল্যানিং, দিল্লি স্কুল অব ইকোনমিক্স, ইন্দিরা গান্ধী ইনস্টিটিউট অব ডেভলপমেন্ট রিসার্চ-এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলিতেও অর্থনীতিতে উচ্চশিক্ষা করা যায়।

জেনারেল ইকোনমিক্স, ফিনানশিয়াল ইকোনমিক্স, অ্যাপ্লায়েড কোয়ন্টিটেটিভ ফিনান্স, এনভায়রনমেন্টাল ইকোনমিক্স, অ্যাকচুয়ারিয়াল ইকোনমিক্স-এর মতো বিষয়ে এমএসসি পড়ানো হয় মাদ্রাজ স্কুল অব ইকোনমিক্সে। দিল্লি বা কলকাতা আইএসআই-তে যে ধরনের প্রবেশিকা পরীক্ষা হয়, ডিএসই বা জেএনইউ-র পরীক্ষার ধরন তার থেকে কিছুটা আলাদা। মোটামুটি সব পরীক্ষাই অঙ্ক এবং ইকোনমিক্সের উপরে হয়। মূলত মাইক্রো ইকোনমিক্সের উপরেই জোর দেওয়া হয়। ম্যাক্রো ইকোনমিক্সের উপরেও প্রশ্ন আসে, তবে বেশি নয়। অঙ্কের পরীক্ষা হয় বিএসসি পাশ স্তরের।

গবেষণা করতে বিদেশে
মেনস্ট্রিম ইকোনমিক্স আর হেটেরোডক্স ইকোনমিক্স–পিএইচডি স্তরে মূলত দু’টি শাখায় উচ্চশিক্ষা করে পড়ুয়ারা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এমআইটি, হার্ভার্ড, প্রিন্সটন, ইয়েল, ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভেনিয়া, ফ্লোরিডা ইউনিভার্সিটি কিংবা ব্রিটেনের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি, লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স-এর মতো প্রতিষ্ঠানেই মেনস্ট্রিম ইকোনমিক্স নিয়ে গবেষণা হয়। আর যারা হেটেরোডক্স ইকোনমিক্স বা পলিটিকাল ইকোনমি নিয়ে উচ্চশিক্ষা করতে চায় তারা যোগ দিতে পারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আমেরিকান ইউনিভার্সিটি ওয়াশিংটন ডিসি, ম্যাসাচুসেটস বিশ্ববিদ্যালয়ে কিংবা কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি, সাসেক্স ইউনিভার্সিটি বা লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজে। আসলে, সঠিক পথে এগিয়ে গেলে অর্থনীতির পড়ুয়াদের ভবিষ‌্যৎ উজ্জ্বল।

[আরও পড়ুন: আগামী বছর মাধ্যমিক কবে? দিনক্ষণ ঘোষণা পর্ষদের]

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement