জীবন বহিয়া যায় নদীর স্রোতের প্রায়। এই স্রোতের টানেই হারিয়ে যায় মানুষ। ২০১৯ সালেও আমরা এভাবেই হারিয়েছি অনেক মানুষকে। যাঁদের শরীর আজ পঞ্চভূতে বিলীন। কিন্তু প্রতিভা অমর, অক্ষয়। বছর শেষের মুখে তাঁদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালের।
রমাকান্ত আচরেকর
কোটির ভিড়ে ক্রিকেট ঈশ্বর শচীন তেন্ডুলকরকে খুঁজে বের করেছিলেন রমাকান্ত আচরেকর। গোটা বিশ্ব তাঁকে চিনত মাস্টার ব্লাস্টারের কোচ হিসেবে। বছরের শুরুতেই (২ জানুয়ারি) নিভে যায় সেই কিংবদন্তি কোচের জীবনদীপ।
প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জর্জ ফার্ন্ডাডেজ
২৯ জানুয়ারি মৃত্যু হয় প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী জর্জ ফার্নান্ডেজের। বাজপেয়ী জমানায় প্রতিরক্ষামন্ত্রী ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে অ্যালজাইমার্স এবং পার্কিনসন্স ডিজিজে ভুগছিলেন জর্জ। সোয়াইন ফ্লুতেও আক্রান্ত হয়ে জীবনাবসান হয় তাঁর।
প্রতীক চৌধুরি
২০ ফেব্রুয়ারি দূরে, বহুদূরে চলে গিয়েছিলেন একতারা বাজিয়ে গাওয়া বাউল। বাংলা সংগীত জগত থেকে খসে যায় আরেক নক্ষত্র। প্রয়াত হন প্রতীক চৌধুরি। এদিন সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথেই তাঁর হার্ট অ্যাটাক হয়।
বড়মা
৫ মার্চ চলে গেলেন মতুয়া মহাসংঘের বড়মা বীণাপাণি দেবী। বয়সজনিত কারণেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। গান স্যালুটে বিদায় জানানো হয় তাঁকে।
রমেন রায়চৌধুরি
১৯ মার্চ সাকেল শহরবাসীর ঘুম ভাঙে আরেক শোকের খবরে। জীবনাবসান হয় আরেক অভিনেতার, রমেন রায়চৌধুরি। অভিনেতা ভুগছিলেন ক্যানসারে। পাশাপাশি ছিল কিডনির সমস্যাও।
মনোহর পারিকর
১৭ মার্চ গোয়ায় নিজস্ব বাসভবনে প্রয়াত হন গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মনোহর পারিকর। গত এক বছর ধরেই অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন তিনি।
চিন্ময় রায়
১৭ মার্চ বাংলা সিনেমা জগতের এক নক্ষত্র পতন। প্রয়াত হন ‘টেনিদা’ চিন্ময় রায়।নিজের বাড়িতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা।
রুমা গুহঠাকুরতা
দী২ জুন প্রয়াত হন সংগীত শিল্পী তথা অভিনেত্রী রুমা গুহঠাকুরতা। ১৯৫১ সালে কিশোর কুমারকে বিয়ে করেছিলেন তাঁর। তবে তিনি নিজে যথেষ্ট নামী সংগীতশিল্পী ছিলেন। বড়পর্দায় অভিনয়েও প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন রুমা গুহঠাকুরতা।
দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শীলা দিক্ষিত
২০ জুলাই প্রয়াত হন দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিত। হৃদরোগজনিত কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। দিল্লির তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনি।
নাট্য ব্যক্তিত্ব গীরীশ কানাড
এ বছর নাট্য দুনিয়া হারিয়ে গিয়েছেন আরও এক নক্ষত্রকে-গিরীশ কারনাড। সিনেমা ও সাহিত্য জগতেও ছিল তাঁর অবাধ বিচরণ। সেরা পরিচালক হিসেবে ১৯৭১ সালে কন্নড় ছবি ‘ভামসা ভ্রিক্ষা’-র জন্য তিনি পেয়েছিলেন জাতীয় পুরস্কার। এছাড়া আরও ন’টি জাতীয় পুরস্কার রয়েছে তাঁর ঝুলিতে।
প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ
৭ অগস্ট ভারতীয় রাজনীতিতে ইন্দ্রপতন ঘটে। প্রয়াত হন বর্ষীয়ান বিজেপি নেত্রী তথা প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়।
কম্পোজার ওমর খৈয়াম
২০ আগস্ট প্রয়াত হন বলিউডের প্রখ্যাত সুরকার, ‘পদ্মভূষণ’ প্রাপ্ত মহম্মদ জাহুর খৈয়াম হাশমি। বলিউড তথা গোটা দেশ তাঁকে সুরকার ‘খৈয়াম’ নামেই চিনত।
অরুণ জেটলি
নরেন্দ্র মোদির সবচেয়ে বিশ্বস্ত সহযোদ্ধা যদি অমিত শাহ হয়ে থাকেন, তাহলে এই তালিকায় দ্বিতীয় নামটিই ছিল অরুণ জেটলি। ২৫ আগস্ট সেই বিচক্ষণ রাজনীতিবিদকে হারায় ভারতীয় রাজনীতি মহল।
নিমু ভৌমিক
২৮ আগস্ট বিশিষ্ট বাঙালি অভিনেতা নিমু ভৌমিকের জীবনাবসান হয়। প্রথমদিকে কৌতুক অভিনেতা হিসেবে জনপ্রিয় হয়েছিলেন। পরে বাংলা ছবিতে খলনায়কের চরিত্রেই বিখ্যাত হন তিনি। একসময় রাজনীতির ময়দানেও দেখা যায় তাঁকে।
আবদুল কাদির
৮ সেপ্টেম্বর খেলার দুনিয়ায় শোকের ছায়া নেমে আসে। চলে যান পাকিস্তানি লেগ স্পিনার আব্দুল কাদির। টেস্টে ২৬৭ উইকেটের মালিক ছিলেন তিনি।তিনি তাঁর সময়ে বিশ্বের সেরা লেগস্পিনার। ভিভ রিচার্ডসকে একবারও রান করতে দেননি তাঁর বিরুদ্ধে।
রাম জেঠমালানি
৮ সেপ্টেম্বর প্রয়াত হন বর্ষীয়ান আইনজীবী তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাম জেঠমালানি। আইনজীবী হিসেবে সুদীর্ঘ কেরিয়ারে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মামলা লড়েছেন জেঠমালানি। মহারাষ্ট্র সরকারের বিরুদ্ধে কে এমকে নানাবতীর হয়ে মামলা লড়েন জেঠমালানি।
অভিনেতা বিজু খোটে
‘কিতনে আদমি থে কালিয়া’ শোলের সেই খ্যাতনামা সংলাপ মনে নেই এমন সিনেপ্রেমী বোধহয় খুঁজে পাওয়া দায়। গব্বরের সেই ‘চেলা’ ওরফে বিজু খোটেকে সবাই ‘কালিয়া’ বলেই ডাকতেন। ৩০ সেপ্টেম্বর সেই অভিনেতাই চিরনিদ্রায় গেলেন।
গুরুদাস দাসগুপ্ত
৩১ অক্টোবর প্রয়াত হন বর্ষীয়ান বামপন্থী নেতা তথা প্রাক্তন সিপিআই সাংসদ গুরুদাস দাশগুপ্ত। আটের দশকে শ্রমিক সংগঠনের নেতা হিসেবে রাজনীতিতে উত্থান তাঁর। ১৯৮৫ সালে প্রথমবার রাজ্যসভার সাংসদ হন।২০০৯ সালে ঘাটাল থেকে সিপিআই সাংসদ ছিলেন গুরুদাস দাশগুপ্ত।
লেখিকা নবনীতা দেবসেন
৮ নভেম্বর সাহিত্য জগতে ইন্দ্রপতন। চলে যান সাহিত্যিক নবনীতা দেবসেন। ‘নটী নবনীতা’ বইয়ের জন্য ১৯৯৯ সালে সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার পান তিনি। ২০০০ সালে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হন।
প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার টি এন শেসন
প্রয়াত হন দেশের প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার তিরুনেল্লাই নারায়ণ শেষনও। ১১ নভেম্বর রাত ৯.৪৫ মিনিটে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চেন্নাইয়ে নিজের বাসভবনে মৃত্যু হয় তাঁর। নির্বাচন ববস্থার ব্যাপক সংস্কার করেন তিনি।
রাম রে
শুধু বাংলা নয়, গোটা দেশেই বিজ্ঞাপনের পরিভাষা বদলে দিয়েছিলেন তিনি। বিজ্ঞাপন জগতের সেই বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব রাম রে প্রয়াত হন ১২ নভেম্বর। তাঁর হাত ধরেই পরিচয় পেয়েছিলেন প্রয়াত চিত্র পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষও।
ক্ষিতি গোস্বামী
২৪ নভেম্বর প্রয়াত হন রাজ্যের প্রাক্তন পূর্তমন্ত্রী ও বর্ষীয়ান আরএসপি নেতা ক্ষিতি গোস্বামী। বাম আমলের প্রাক্তন এই মন্ত্রীর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরেই শোকাছন্ন হয়ে পড়েন রাজ্যের বামপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত মানুষরা।
ইংল্যান্ডের প্রাক্তন ক্যাপ্টেন বব উইলস
১৯৮১-র ইংল্যান্ডের অ্যাসেজ জয় বললে সবার প্রথমে আসে তাঁর নামটাই। বব উইলিস। ভারতীয় সময় ৫ ডিসেম্বর ইংল্যান্ডের কিংবদন্তি পেসার তথা অধিনায়কের মৃত হয়। তিনবছর আগে ক্যানসার ধরা পড়েছিল উইলিসের।
নাট্য ব্যক্তিত্ব শ্রীরাম লাগু
১৮ ডিসেম্বর প্রয়াত হন মঞ্চ ও চলচ্চিত্রের প্রবীণ অভিনেতা ডাঃ শ্রীরাম লাগু। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন এই নবতিপর অভিনেতা। পেশায় ইএনটি বিশেষজ্ঞ ছিলেন ডা: লাগু। অভিনয় ছিল তাঁর নেশা। তাঁর বিখ্যাত মারাঠি নাটক ‘নটসম্রাট’ গোটা দেশে জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.