নন্দন দত্ত, সিউড়ি: বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়কে পত্রাঘাতের পরদিনই Z+ নিরাপত্তা নিয়ে দিল্লির পথে রওনা দিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। রবিবার সকাল থেকে তাঁর বাসভবন ‘প্রতীচী’র নিরাপত্তাতেও বাড়তি নজরদারি দেওয়া হয়েছে। আরও চার-পাঁচজন অতিরিক্ত নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা হয়েছে। আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি দিল্লি থেকে শান্তিনিকেতনে ফেরার কথা তাঁর।
শনিবারই অমর্ত্য বলেন, ‘‘দিল্লিতে যে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সামাজিক শাসন চলছে, সেটাকে কি আমি ভারতবর্ষের প্রতি মঙ্গলময় বলে মনে করি? আমি মনে করি না। সেই কারণেই আমাকে আক্রমণ করা হচ্ছে, সেটা বলার মতো বুকের পাটা আমার নেই।’’ অমর্ত্যর এই বিস্ফোরক মন্তব্যে বিভিন্ন মহলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। নোবেলজয়ীর এই মন্তব্য যে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে ঘোর অস্বস্তিকর, তা বলাই বাহুল্য। আবার অমর্ত্যর এদিনের আইনি চিঠিতেও চাপে পড়েছে বিশ্বভারতী। শান্তিনিকেতনের প্রতীচী বাড়ির যৌথ সমীক্ষা এবং জমি জরিপের জন্য বিশ্বভারতীর তরফে দু’দিনের সময় চেয়ে চিঠির পরপরই পাল্টা শনিবার জয়েন্ট রেজিস্ট্রারকে চিঠি দিয়েছেন অমর্ত্যর আইনজীবী গোরাচাঁদ চক্রবর্তী।
চিঠিতে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে স্পষ্ট করে জানানো হয়, যুক্তিযুক্ত আইনি কারণ না থাকা সত্ত্বেও সঠিক কাগজপত্র না দিয়ে একাধিকবার নোবেলজয়ী এবং ভারতরত্ন অধ্যাপক অমর্ত্য সেনকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অসম্মানিত ও তাঁর মানহানি করা হচ্ছে। যা অনভিপ্রেত। এজন্য ক্ষমা চাক বিশ্বভারতী। অমর্ত্য নিজেও এদিন সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, ‘‘আমার ১৩ ডেসিমেল জমি জরিপ করলে ১৩ ডেসিমেলই থাকবে। অঙ্ক বুঝলে বিশ্বভারতীর এই অবস্থা হত না। ছাত্রছাত্রীদের অকারণে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নির্বাসিত হওয়া কমত।’’
আইনজীবীর চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ভূমি ও ভূমি রাজস্ব বিভাগের নথিতে ২৭০ সুরুল মৌজায় জেএল ১০৪-এর অধীনে ১.৩৮ একর এলাকা অমর্ত্য সেনের পূর্বসূরিদের লিজে দেওয়া হয়। ১.২৫ একর নয়, আদতে ১.৩৮ একর পৈতৃক জমি হিসাবে সরকারি খাতায় নথিভুক্ত থাকা সত্ত্বেও বিশ্বের একজন সম্মানিত ব্যক্তিকে ভিত্তিহীন, কাল্পনিক অভিযোগ এনে বারবার মানহানি করা হচ্ছে। জমির প্রসঙ্গ ছাড়াও অমর্ত্যর নোবেল জয় নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য। অমর্ত্যর আইনি চিঠির বক্তব্য, অবিলম্বে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এই ধরনের কাল্পনিক, ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যমূলক মন্তব্য বন্ধ করুক, ক্ষমা চাক। অমর্ত্য সেনের আইনজীবীর চিঠির প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা ভূমি ও ভূমি রাজস্ব বিভাগের আধিকারিকের কাছেও। যদিও এ বিষয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.