বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: ছেলে ও স্ত্রীকে তাঁর বাপের বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসার পরদিনই রহস্যজনকভাবে যুবকের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার। মৃতের অণ্ডকোষে ফোটানো ছিল সেফটিপিন। শরীরের নিম্নাংশ ভেসে যাচ্ছিল রক্তে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ওই যুবকের অণ্ডকোষে সেফটিপিন ফুটিয়ে খুন করে দেহ ঝুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার শান্তিপুর থানার ফুলিয়ার মাঠপাড়া এলাকায়। যদিও ওই যুবকের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে পুলিশ ময়নাতদন্তের রিপোর্টের দিকে চেয়ে রয়েছে।
মৃতের নাম মলয় বসাক। বছর চল্লিশের মলয়, নদিয়ার ফুলিয়ার মাঠপাড়ার বাসিন্দা। পেশায় একজন টোটোচালক। বৃহস্পতিবার বিকেলে মলয় তাঁর আট বছরের পুত্রসন্তান এবং স্ত্রীকে নিজেই পৌঁছে দিয়ে এসেছিলেন বাপের বাড়িতে। সেদিন রাত প্রায় সাড়ে বারোটা নাগাদ বাড়ি ফেরেন মলয়। শুক্রবার সারাদিন বাড়িতে একাই ছিলেন। সন্ধের পর তাঁর স্ত্রী বাপের বাড়ি থেকে স্বামীর কাছে আসেন। দেখেন ঘরের ভিতর পড়ে রয়েছে স্বামীর মরদেহ। মলয়ের মৃত্যু যে স্বাভাবিক নয়, তা স্পষ্ট। তিনি দেখেন, স্বামীর দেহ ঝুলছে। অণ্ডকোষে লাগানো সেফটিপিন। তাঁকে খুন করে দেহ ঝুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
মলয়ের মা মালতী বসাক থাকেন তাঁর মেয়ের বাড়িতে। রোজগার করে সংসার চালানোর জন্য নিজে ছেলেকে টোটো কিনে দিয়েছিলেন তিনি। ছেলের সঙ্গে তার পুত্রবধূর ঝগড়া অশান্তি হত কিনা, তা তিনি স্পষ্ট জানেন না। স্থানীয়দের দাবি, মলয়ের স্ত্রীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক থাকতে পারে বলে সন্দেহ করতেন। তার ফলে স্ত্রীর সঙ্গে খুব একটা বনিবনা ছিল না। মাঝেমধ্যেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি হত। যদিও কী নিয়ে অশান্তি হত, তা স্পষ্ট নয়।
মলয়ের মৃত্যুতে একাধিক প্রশ্নের ভিড়। মলয় আত্মহত্যা করেছেন নাকি তাঁকে খুন করা হয়েছে? দ্বিতীয় প্রশ্ন, স্ত্রীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ার কারণে মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে মলয় যদি গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যাই করে থাকেন, তাহলে তাঁর অণ্ডকোষে সেফটিপিন ফোটানো কেন? তৃতীয় প্রশ্ন, মলয় বসাকে যদি খুনই করা হয়ে থাকে, তাহলে তার কারণ কী? খুনিই বা কে? পুলিশ মৃত মলয়ের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। মলয় বসাকের পর্নের প্রতি আসক্তি ছিল বলেই দাবি তাঁর স্ত্রীর। তবে কী যৌন উত্তেজনার বশে এই কাজ করেছেন মলয়, উঠছে প্রশ্ন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.