চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: ফণী তখনও অনেক দূরে। তার আগে ঘটে যাওয়া এক ভয়ঙ্কর ঘটনার রেশ এখনও কাটয়ে উঠতে পারেনি আসানসোলের মিঠানির বাসিন্দারা। গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, একদল ‘আগুন পাখি’-র দৌলতে এখনও তাঁরা বেঁচে। নাহলে ট্রান্সফর্মার ও জয়েন্ট বক্সে আগুন ধরে যাওয়ায় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। কারণ, যখন দুর্ঘটনা ঘটে তখন পুরো গ্রাম ঘুমে আচ্ছন্ন। কিন্তু জনাকয়েক যুবক আগুন লাগার খবর পেয়ে সাহস নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। জল নয়, বুদ্ধি খাটিয়ে বস্তা বস্তা বালি এনে বিদ্যুতের প্লাগ বাক্স ও ট্রান্সফর্মারের আগুন নেভাতে সমর্থ হন তাঁরা। আজ তাদের জন্যই গোটা গ্রাম বেঁচে গিয়েছে বলে কৃতজ্ঞতার সুরে জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা।
[ আরও পড়ুন: ভোটের সময় আঙুলে কালি লাগানোর নিয়মে বড়সড় বদল আনল কমিশন ]
মিঠানি স্কুল মোড়ের কাছে বহু পুরাতন প্লাগ জয়েন্ট বক্স রয়েছে। উপরে রয়েছে ট্রান্সফর্মার। সেখানেই রয়েছেন ইলেকট্রিক বক্স শাট ডাউন করার হ্যান্ডেল। এই এলাকায় রয়েছে বহু ছোট দোকানও গুমটি। এমনকী লোকালয়ের বহু পরিবারও রয়েছে। সেই বক্সের মধ্যে প্রথমে আগুন লাগে। স্থানীয় এক দোকানদার দেখতে পেয়ে স্থানীয় এক যুবককে ফোনে দুর্ঘটনার খবর জানান। সে ঘটনাস্থলে এসে ফোনেই বাকিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে৷ মিন্টু, গোপাল, বাবু, অরুণ, ঋজু, প্রীতমরা সঙ্গে সঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়েন৷ কোনওভাবে তাঁরা ওই অবস্থায় শাট ডাউন করেন ইলেকট্রিক বক্স। ভোটের পর স্কুলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য যে বাংকার করা হয়েছিল, সেই বাংকার থেকে বস্তা বস্তা বালি নিয়ে এসে ঢালতে থাকে।
তবে সেই বালির বস্তাগুলি স্কুলের বাউন্ডারি টপকে আনতে হয়েছে। আধ ঘণ্টার টানা কসরতের পর পুরোপুরি আগুন নেভানো সম্ভব হয়। এই ঘটনার পর থেকে যুবকদের নামকরণ হয়েছে ‘আগুন পাখি’। দমকলকর্মীরাও ভূয়সী প্রশংসা করেন উদ্ধারকারী যুবকদের। তাঁরা বলেন, “সময় মতো ওরা না থাকলে ট্রান্সফর্মার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটতে পারত।” স্থানীয় কাউন্সিলর উত্তম বাউরি বলেন, “ওই ছেলেরা ঝুঁকি নিয়ে আগুন না নেভালে বড় দুর্ঘটনা ঘটত।”
[ আরও পড়ুন: বিশ্বভারতীর ক্যাম্পাসে আত্মঘাতী যুগল, প্রশ্নের মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.