দেবব্রত মণ্ডল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: বান্ধবীদের হেনস্তার প্রতিবাদ করায় বেধড়ক মারধর করা হয় এক যুবককে৷ প্রায় পাঁচদিন ধরে হাসপাতালে চলে যমে-মানুষে টানাটানি৷ তবে তাতেও শেষরক্ষা হল না৷ প্রাণ দিয়ে প্রতিবাদের মাসুল গুনতে হল বারুইপুরের কল্যাণপুরের ত্রিপুরানগরের বাসিন্দা অরুণ বিশ্বাসকে৷ এই ঘটনায় স্থানীয় বেশ কয়েকজন যুবকের বিরুদ্ধে বারুইপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন নিহতের মা৷ যদিও ঘটনার পর থেকে পলাতক অভিযুক্তরা৷
ঘটনার সূত্রপাত গত ১৪ ফেব্রুয়ারি৷ ওইদিন বাড়িতে ছিলেন না বছর আঠাশের অরুণ বিশ্বাস৷ সেই সময় তাঁর বাড়িতে আসেন দুই বান্ধবী৷ বাড়িতে অরুণকে না পেয়ে ফিরে যাচ্ছিলেন তাঁরা৷ অভিযোগ, স্থানীয় খেয়ালি সংঘ ক্লাবের বেশ কয়েকজন ওই দুই তরুণীর পথ আটকায়৷ জোর করে ক্লাবেও নিয়ে যায় তাঁদের৷ সেখানেই আটকে রেখে শ্লীলতাহানি করা হয় দুজনের৷ ইতিমধ্যেই বাড়ি ফেরেন অরুণ৷ লোক মুখে বান্ধবীদের ক্লাবে আটকে রাখার বিষয়টি জানতে পারেন তিনি৷ দৌড়ে যান ক্লাবে৷ কেন আটকে রাখা হল তাঁর বান্ধবীদের, প্রশ্ন করেন অরুণ৷ এটাই ছিল তাঁর ‘অপরাধ’৷ অভিযোগ, এরপর বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে অরুণকে বেঁধে ফেলেন ক্লাবের বেশ কয়েকজন সদস্য৷ বেধড়ক মারধর করা হয় তাঁকে৷ এমনকী, ওই দুই তরুণী বাড়িতে আসার জন্য যুবকের থেকে ৪০ হাজার টাকা দাবিও করে ক্লাবের সদস্যরা৷ টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় বাড়তে থাকে মারধর৷ এমনকী, জোর করে অরুণকে বিষ খাইয়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ৷ অকথ্য অত্যাচারের পর ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যায় ক্লাবের সদস্যরা৷ বাড়ি ফেরেন অরুণ৷ ১৪ ফেব্রুয়ারি রাতে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে৷ তড়িঘড়ি এম আর বাঙুর হাসপাতালে ভরতি করা হয় অরুণকে৷ বুধবার গভীর রাতে হাসপাতালেই মারা যান ওই যুবক৷
এদিকে, অরুণের মৃত্যুর পর থেকে ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয়রা৷ তাঁদের অভিযোগ, প্রতিদিন সন্ধে হলেই এলাকায় মদ, গাঁজার আসর বসায় ক্লাবের সদস্যরা৷ শুধু তাই নয় খেয়ালি সংঘ ক্লাবের সদস্যদের মদতেই এলাকায় ক্রমশ বাড়ছে অসামাজিক কার্যকলাপ৷ এই ঘটনায় অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবিও জানিয়েছেন এলাকাবাসী৷ বারুইপুর থানায় ক্লাবের বেশ কয়েকজন যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে৷ ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২, ৩০৬, ৩৪১ এবং ৩২৫ নম্বর ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ৷ যদিও এই ঘটনার পর থেকে পলাতক খেয়ালি ক্লাবের বেশিরভাগ সদস্য৷
ছবি: বিশ্বজিৎ নস্কর
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.