সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: টিকটক ভিডিও বানিয়ে তা আপলোড করা এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেন্ড। তাই যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সলমন খানের ‘কিক’ সিনেমার অনুকরণে চলন্ত ট্রেনের সামনে থেকে লাইন পার হওয়ার ভিডিও টিকটকে পোস্ট করার পরিকল্পনা করেছিল এক কিশোর। কিন্তু তার পরিণতি হল মর্মান্তিক। পরিকল্পনামাফিকই সব কিছু চললেও শেষরক্ষা হল না। ভিডিও তৈরি করতে গিয়ে পুরুলিয়ায় আসাবরাভূম–আসানসোল প্যাসেঞ্জারের ধাক্কায় মৃত্যু হল কিশোরের। আহত হয়েছে ওই কিশোরের এক বন্ধুও।
অ্যাডভেঞ্চারের নেশায় বুঁদ হয়ে সোশ্যাল সাইটে লাইক-কমেন্ট পেতে রবিবার না বুঝেই মৃত্যুফাঁদের সামনে গিয়ে দাঁড়ায় বছর পনেরোর পুরুলিয়ার চুনাভাট্টির বাসিন্দা মহম্মদ নূর আনসারি। তার সঙ্গে ছিল তিন বন্ধুও। ভিডিও করার নেশায় এদিন সন্ধেয় তারা হাজির হয় দক্ষিণ পূর্ব রেলের আদ্রা ডিভিশনের কাটিন রেল গেট চত্বরে। সেখানেই চলছিল ভিডিও তৈরির কাজ।
পরিকল্পনা ছিল, দ্রুত ভিডিও রেকর্ড করে ট্রেন কাছে আসতেই লাইন থেকে সরে যাবে নূর। কিন্তু নাহ, তা হল না। ভিডিও রেকর্ডিং চলাকালীন আচমকাই দ্রুত গতিতে আসা আসাবরাভূম-আসানসোল প্যাসেঞ্জার ট্রেন পিছন থেকে ধাক্কা দেয় নূরকে। রক্তাক্ত অবস্থায় লাইনের পাশে পড়ে যায় সে। চলন্ত ট্রেনের গতিতে ছিটকে পড়ে নূরের এক সঙ্গীও। বন্ধুদের পরিণতি দেখে আতঙ্কে ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয় ওই কিশোরদের সঙ্গে থাকা বাকি দু’জন। বেশ কিছুক্ষণ রক্তাক্ত অবস্থায় লাইনের পাশেই পড়ে থাকে নূর ও তার বন্ধু।
পরে স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের উদ্ধার করে দেবেন মাহাতো মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা নূরকে মৃত বলে ঘোষণা করে। কিন্তু তখনও এই মৃত্যুর কারণ জানতে পারেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে আহত কিশোরের থেকে চলন্ত ট্রেনের সামনে হেঁটে যাওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন সকলে। ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়টি জানানো হয়েছে পুলিশে। এর আগেও টিকটিক ভিডিও বানাতে গিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিপদের সম্মুখীন হয়েছেন অনেকেই। দুর্ঘটনা রুখতে বেশ কিছুদিনের জন্য বন্ধও করে দেওয়া হয়েছিল টিকটক অ্যাপ। পরে আবার তা চালু হয়। ফের নেশায় ডুবে যায় যুব প্রজন্ম। তবে এই অ্যাপ যে কতটা ভয়ংকর, পুরুলিয়ার নূরের ঘটনা ফের সেটাই প্রমাণ করে দিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.