আকাশনীল ভট্টাচার্য ও বিপ্লবচন্দ্র দত্ত: দু’দিন আগেই দাদা মারা গিয়েছেন। খবর পেয়ে বিহার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন কৃষ্ণনগরের ভীমপুরের বাসিন্দা পেশায় চিকিৎসক বিশ্বজিৎ। নামার কথা ছিল নৈহাটি স্টেশনে। কিন্তু ঘুমে চোখ লেগে গিয়েছিল। যখন ঘুম ভাঙল ট্রেন তখন নৈহাটি স্টেশন ছাড়িয়ে কাঁকিনাড়া পৌঁছেছে। অগত্যা কাঁকিনাড়ায় নেমে যেতে হয় তাঁকে। ঠিক করেছিলেন সকালের ট্রেনে কৃষ্ণনগর যাবেন। কিন্তু আর বাড়ি ফেরা হল না। ঘুমের পরিণতিই হল মর্মান্তিক। দুষ্কৃতীদের বোমার আঘাতে মৃত্যু হল বিশ্বজিতের। ঘটনার খবর গ্রামে পৌঁছতেই কান্নায় ভেঙে পড়েছে পরিবার। দু’দিনের ব্যবধানে দুই সন্তানকে হারানোর যন্ত্রণা কুরে কুরে খাচ্ছে বিশ্বজিতের মাকে।
শুক্রবার রাতে ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে কাঁকিনাড়া স্টেশনে ঘোরাফেরা করছিল কয়েকজন যুবক। সেই সময় কাঁকিনাড়া স্টেশনের ৩ নম্বর প্লাটফর্মে বসেছিলেন বিশ্বজিৎ বিশ্বাস নামে বছর ৩৫-এর ওই যুবক। শনিবার সকালের ট্রেনে নৈহাটি যেতেন তিনি। অভিযোগ, শনিবার রাত প্রায় আড়াইটে নাগাদ তিন দুষ্কৃতী তাঁর সঙ্গে থাকা টাকা ও সামগ্রী ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। বাধা দেন বিশ্বজিৎ। দুষ্কৃতীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয় তাঁর। এরপরই বোমাবাজি শুরু করে দুষ্কৃতীরা। বোমার আঘাতে গুরুতর আহত হন ওই যাত্রী। এরপর জিআরপি আধিকারিকরা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে।
ঘটনার খবর ভীমপুরে পৌঁছতেই কান্নায় ভেঙে পড়েছে পরিবার। আর কিছুক্ষণের মধ্যে যার ঘরে ফেরার কথা ছিল, এভাবে সে না ফেরার দেশে পৌঁছে যাবে ভাবতে পারেননি কেউই। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে শাস্তি দিতে হবে অভিযুক্তদের। কিন্তু এদিনের ঘটনায় প্রশ্নের মুখে রেল পুলিশের ভূমিকাও। যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে যাত্রীরা। সঙ্গত, বেশ কিছুদিন আগে অবরোধের সময় যাত্রীবোঝাই ট্রেনে বোমা ছুঁড়েছিল দুষ্কৃতীরা। তারপর ফের একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। কাকিনাড়া স্টেশনে যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে ফের প্রশ্নচিহ্নের মুখে রেল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.