Advertisement
Advertisement
Fraud

কিডনি প্রতিস্থাপনের নামে ৩৭ লক্ষ টাকা প্রতারণা, সময়মতো চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যু যুবকের

মুর্শিদাবাদের ঘটনার তদন্তে নেমে বিহার থেকে ২ জনকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ।

Youth died after NGO cheated him by assuring to provide kidney donar as he needed kidney transplantation | Sahgbad Pratidin
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:September 16, 2021 9:28 pm
  • Updated:September 16, 2021 9:28 pm  

শাহজাদ হোসেন, ফরাক্কা: ছেলের জন্য কিডনি ঠিক জোগাড় করে দেবে এনজিও (NGO)। এমনই ভরসা রেখেছিলেন মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) অবসরপ্রাপ্ত পুলিশকর্মী। কিন্তু বছরভর অপেক্ষা, ভরসার মূল্য যে ছেলের প্রাণের বিনিময়ে চোকাতে হবে, তা ঘুণাক্ষরেও ভাবেননি তিনি। অথচ বাস্তবে ঘটল তাই। কিডনির জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা এনজিও-কে দিয়ে সর্বস্বান্ত হলেও সময়মতো কিডনি পাওয়া গেল না। চিকিৎসার অভাবে ছেলেকে হারিয়ে অসহায় অবসরপ্রাপ্ত হোম গার্ড গোবিন্দ প্রামাণিক। তবে ছেলের এহেন মৃত্যুতে ভেঙে পড়লেও সাহস হারাননি। সুবিচার চাইতে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে বিহার থেকে ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের কড়া শাস্তি হলে ছেলের আত্মা শান্তি পাবে বলে মনে করছেন তিনি।

ঘটনা প্রায় তিন, চার বছর আগের। ২০১৭ সালে মুর্শিদাবাদের হোম গার্ড (Home Guard) গোবিন্দ প্রামাণিকের বছর বত্রিশের ছেলে তন্ময় কিডনির অসুখে আক্রান্ত হন। কলকাতা এবং বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসার জন্য ছোটেন তাঁরা। সব চিকিৎসকেরই একমত, কিডনি প্রতিস্থাপন দরকার তন্ময়ের। এবার শুরু হয় কিডনি ডোনারের খোঁজ। সে বছরই আচমকাই গোবিন্দবাবুর কাছে একটি ফোন আসে। তাঁকে একটি এনজিও-র নাম বলা হয়। তারপর জানানো হয়, তন্ময়ের কিডনির ব্যবস্থা করে দেবেন সংস্থার সদস্যরা। তবে টাকা লাগবে। একবারে টাকা দিতে না পারলে ধাপে ধাপে তা দিতে হবে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: মাকে শৌচালয়ের জলে ডুবিয়ে খুন, ভাইয়ের গলার নলি কেটে হত্যার পর থানায় আত্মসমর্পণ ‘খুনি’র]

এই ফোনে অনেকটা আশ্বস্ত হয়েছিলেন গোবিন্দবাবু। প্রথম দফায় উদয় কুমার সিং নামে একজনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৯২০০ টাকা পাঠানোর কথা বলা হয় তাঁকে। তিনি তা পাঠিয়েও দেন। এরপর দফায় দফায় বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে চাহিদামতো হাজার হাজার টাকা দিয়েছেন গোবিন্দবাবু। ইতিমধ্যে ২০১৮ সালে তিনি অবসর নেন। কিন্তু এনজিও-র দাবিমতো টাকা দেওয়া হলেও তন্ময়ের কিডনি ডোনারের কোনও খোঁজ মেলে না। এর মধ্যে আবার আরও ৫৮ লক্ষ টাকা দাবি করে এনজিও। তখনই বেঁকে বসেন গোবিন্দবাবু। এর মধ্যে কিডনিরও জোগাড় হয় না। সময়মতো কিডনি প্রতিস্থাপন না হওয়ায় তন্ময়ের মৃত্যু হয়। ছেলের মৃত্যুশোকে মাও মাস ছয় পর মারা যান। এর মধ্যে ছেলের জন্য কিডনি জোগাড় করতে গিয়ে এনজিও-র ফাঁদে (Fraud) পড়ে সর্বস্বান্ত হন গোবিন্দবাবুও।

[আরও পড়ুন: প্রার্থী জট কাটতে না কাটতেই সামশেরগঞ্জে কংগ্রেসে ভাঙন, তৃণমূলে যোগ দিলেন বহু কর্মী]

এরপর গোবিন্দবাবু মরিয়া হয়ে টাকা ফেরতের পালটা জন্য চাপ দেন ওই এনজিও-কে। কিন্তু টাকা ফেরত না পেয়ে তিনি সোজা পুলিশের দ্বারস্থ হন। ফরাক্কা থানায় তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন। পুলিশ প্রাথমিক খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারে, সংস্থাটি বিহারের। এরপর ভিন রাজ্যে মামলায় আইনি জটিলতা কাটিয়ে অবশেষে এ বছরই তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু হয়। শেষমেশ গত সপ্তাহে বিহারের সুফল থানা এলাকা থেকে সুবাস রাম এবং সুরজ কুমার নামে দু’জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement