ছবি: প্রতীকী
রিন্টু ব্রহ্ম, কালনা: মধ্যরাতে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে লক্ষাধিক টাকার ডাকাতি। যদিও শেষরক্ষা হল না ডাকাত দলের। বাড়ির যুবকের সাহসিকতায় ধরা পড়ল ডাকাত দলের এক পাণ্ডা।
জানা গিয়েছে, কালনার পূর্ব সাতগাছিয়ার সাহাপুরে একটি বাড়িতে ঢুকে বৃদ্ধ দম্পতির মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে প্রথমে টাকা ও গহনা লুটপাট চালায় পাঁচ জনের ডাকাত দল। তারপরেই ওই বাড়ির দোতলায় ছেলের ঘরে লুটপাট চালাতে শুরু করে। বাধা দিতে গেলে ওই যুবকের মাথায় লোহার রড দিয়ে আঘাত করে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। ইতিমধ্যেই চিৎকার চেঁচামেচিতে ডাকাত দলের চারজন তাদের লুট করা টাকা ও গয়না নিয়ে বাড়ি থেকে পালায়। কিন্তু এক ডাকাত পালাতে গেলে ওই যুবক আহত অবস্থাতেই ধরে ফেলেন। দুজনের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ ধস্তাধস্তিও চলে। পালানোর জন্য যুবককের হাতে কামড়ে দেয় ওই ডাকাত। তা সত্ত্বেও ওই ডাকাতকে জাপটে ধরে থাকে ওই সাহসী যুবক। যার পরেই স্থানীয়রা এসে ওই ডাকাতকে ধরে ফেলেন। কিছুক্ষণ গণধোলাই দেওয়ার পর কালনা থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। গোটা ঘটনা নিয়ে কালনা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে ওই যুবক। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা এই ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছি। আরও একজনকে ডাকাতির পরিকল্পনা করার জন্য আটক করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই আমরা এই অপরাধের কিনারা করতে চলেছি।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মিরল মণ্ডল নামে ওই বাড়ির যুবককেও গুরুতর আহত অবস্থায় কালনা হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। তাঁর সাহসিকতার জন্যই ওই ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা গিয়েছে। চিকিৎসা করানোর পর সোমবার দুপুরে ওই যুবক কালনা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে। তিনি লিখিত অভিযোগে জানান, তাঁদের দোতলা বাড়ি। রবিবার রাতে তাঁদের নিচের ঘরে বৃদ্ধ বাবা নির্মল মণ্ডল ও মা মঞ্জু মণ্ডল ঘুমিয়ে ছিলেন। মধ্যরাতে পাঁচ জনের ডাকাত দল তাঁদের ছাদ বেয়ে ঘরে ঢোকে। নিচের ঘরে বৃদ্ধ বাবা-মা ও পাপাইয়ের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে সমস্ত কিছু লুটপাট চালায়। তারপরেই উপরের ঘরে গিয়ে মিরলকে বেড়িয়ে আসতে বলে। সে না বেড়িয়ে আসলে তাঁর মাকে গুলি করে দেবে বলে হুমকিও দেয়। ওই সময়ই তিনি সুচতুর ভাবে এক আত্মীয়কে ফোন করে বলেন, তাঁদের বাড়িতে ডাকাত পড়েছে। এই অবস্থায় ডাকাত দল ঘরে ঢুকে তাঁকে মারধর শুরু করে। টাকা-পয়সা বের করতে বলে। সমস্ত ঘটনার চিৎকার শুনে স্থানীয়রা ও আত্মীয়রা বাড়ির সামনে চলে আসেন। পরিস্থিতি প্রতিকূল দেখে ডাকাত দল লুট করা ৫ লক্ষ ৭৫ টাকা ও ১২২ গ্রাম ওজনের গয়না-সহ একটি মোবাইল নিয়ে পালায়। তবে, চার জন পালিয়ে গেলেও ওই একজনকেই ধরে ফেলেন মিরল। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ডাকাত দলের সদস্যের নাম বাদল বিশ্বাস। নদীয়ার শান্তিপুরের বাগগাছা এলাকার বাসিন্দা। সমস্ত ঘটনাই সে স্বীকার করেছে বলে জানা গিয়েছে। তার কাছ থেকেই বাকিদের নাম ও ডাকাতির টাকা ও গয়নার খোঁজ চালানোর চেষ্টা চলছে। তবে, এই ঘটনাতে ওই পরিবারের তথ্য সরবরাহ ও খোঁজ দেওয়ার ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দা সইদুল শেখের নাম জানতে পেরেছে পুলিশ। তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য কালনা থানার পুলিশ আটক করেছে।
[বিয়েতে আপত্তি পরিবারের, ফেসবুক পোস্ট দিয়ে আত্মঘাতী যুগল]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.