ছবি: উদয়ন গুহ রায়।
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: নেশামুক্তি কেন্দ্রে এক যুবককে পিটিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগে সরব পরিবার। এই ঘটনায় শনিবার সকাল থেকে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে দুর্গাপুরে। তদন্তে নেমেছে দুর্গাপুর থানার পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে রিহ্যাব হোমের ম্যানেজারকে।
দুর্গাপুরের ২২ নম্বর ওয়ার্ডের সিটি সেন্টারের প্রণবানন্দ অ্যাভিনিউতে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার নেশামুক্তি কেন্দ্রে সুমিত দাসকে ((২৬) পিটিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগে সরব তাঁর পরিবার। হোমে সুমিতকে ঠিকঠাকভাবে খেতে দেওয়া হত না বলে অভিযোগ। এমনকী, মারধরও করা হত। এই হোমে ২০ জনের মতন আবাসিক রয়েছেন। পরিবার সূত্রে খবর, নিজের একমাত্র ছেলেকে নেশার হাত থেকে বাঁচানোর জন্য মা উমা দাস তাঁর ছেলেকে শহরের প্রাণকেন্দ্র সিটি সেন্টারের এই হোমে রেখেছিলেন। প্রায় ১৮ মাস এই হোমে ছিল সুমিত। দুর্গাপুরের নিউটাউনশিপ থানার অন্তর্গত ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের মামরা বাজার সংলগ্ন সুভাষ পল্লির বাসিন্দা সুমিতের পরিবার স্বপ্নেও ভাবেননি পরিবারের প্রিয়জনের এমন নির্মম পরিণতি হবে।
অভিযোগ, শুক্রবার রাত দেড়টা নাগাদ হোম কর্তৃপক্ষ মৃতের মামাকে হোম থেকে ফোন করে বলা হয় সুমিত অসুস্থ। সুমিতকে দেখতে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে আসার জন্য বলা হয়। হাসপাতালে গিয়ে পরিবার দেখে সুমিত মারা গিয়েছে। হাসপাতালের সুপার ধীমান মণ্ডল জানান,”বুকে ব্যথা নিয়ে ভরতি করা হয়। দেহে আঘাতের চিহ্ন ছিল না। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে ময়নাতদন্ত করা হবে।” সুমিতের মা উমা দাসের অভিযোগ, “ছেলেকে ঠিকঠাক মতো খেতে দিত না হোমে। এমনকী, মারধরও করা হত ছেলেকে। যার ফলে তার একমাত্র ছেলের মৃত্যু হয়েছে।” যখন শারীরিক অবস্থা অবণতির হচ্ছে সুমিতের তখন তড়িঘড়ি তাঁকে হাসপাতালে ভরতি করে সেখান থেকে পালিয়ে যায় হোমের লোকজন। ওঁকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ সুমিতের কাকা শশাঙ্ক দাসের।
শনিবার সকালে সিটি সেন্টারের ওই হোমের সামনে সুমিতের পরিবার ও পড়শিরা পুলিশের সামনে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। এমনকী, ওই হোমের আশপাশের বাসিন্দাদের অভিযোগ, মারধর করা হত হোমে থাকা আবাসিকদের। পুলিশ অভিজিত ভাওয়াল নামে হোমের ম্যানেজারকে আটক করে দুর্গাপুর থানার সিটি সেন্টার ফাঁড়িতে নিয়ে যায়। আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশের এসিপি (দুর্গাপুর) তথাগত পান্ডে জানান, “শারীরিক অসুস্থতার কারণে হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছিল। হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্ত না হলে মৃত্যুর কারণ বলা সম্ভব নয়।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.