মনিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে সকালে এক কিশোরীকে কাটারি দিয়ে কুপিয়ে খুনের পর রাতে মৃতদেহ উদ্ধার হল ঘাতকের। মৃতের নাম অজিত বাগ। তিনি উদয়নারায়ণপুরের গড়ভবানীপুর পানিয়াগড়ির বাসিন্দা। অভিযোগ, বুধবার সকালে তৃষা বাগ নামে এক প্রতিবেশী ছাত্রীকে অজিত খুন করে। পরে রাতে অজিতের মৃতদেহ উদ্ধার হল জয়পুর থানার কাশমলির শিমুলতলা এলাকায়। স্থানীয়রা তাঁকে মাঠের ধারের এক গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। খবর পেয়ে প্রথমে আসে জয়পুর থানা ও পরে উদয়নারায়ণপুর থানার পুলিশ।
বুধবার সকাল সাড়ে নটা নাগাদ গড়ভবানীপুর রামপ্রসন্ন বিদ্যা নিকেতনের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী তৃষা প্রাইভেট টিউশন পড়ে সাইকেলে চেপে বাড়ি ফিরছিল। সেই সময় গড়ভবানীপুর বাঁশ তলাা এলাকাার কাছে অজিত আচমকা তৃষার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই অজিত তৃষার ঘাড়ে কাটারি দিয়ে কোপ মারে। রক্তাক্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে তৃষা। স্থানীয়রা ঘটনাটি দেখে ছুটে আসে। তাঁদের আসতে দেখে চম্পট দেয় অজিত। পেশায় যাত্রা শিল্পীদের পোশাক ব্যবসায়ী তৃষার বাবা দেবজিত বাগও মেয়ের উপর হামলার ঘটনার সাক্ষী। খবর পেয়ে চলে আসে উদয়নারায়ণপুর থানার পুলিশ। তৃষাকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে ততক্ষণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ অজিতের মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করে।
এরপর রাতে অজিতের মৃতদেহ উদ্ধার হল জয়পুর থানার কাশমলির শিমুলতলা এলাকায়। স্থানীয়রা তাঁকে মাঠের ধারের এক গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। খবর পেয়ে প্রথমে আসে জয়পুর থানা ও পরে উদয়নারায়ণপুর থানার পুলিশ। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, অজিত আত্মহত্যা করেছে। ওই গাছের তলা থেকে একটি বাইক উদ্ধার করেছে। মনে করা হচ্ছে বাইকটি অজিতেরই। পুলিশ জানিয়েছে, খুন করার পর বাইক নিয়ে পালিয়ে এসে গা ঢাকা দেয় অজিত। পরে অনুশোচনায় দগ্ধ হয়ে আত্মহত্যা করে সে।
অজিত তৃষার দুঃসম্পর্কের কাকা। একই পাড়ায় থাকত তারা। পরিবারের অভিযোগ, অজিত তাকে প্রায়শই প্রেম নিবেদন করে উত্যক্ত করত। এ নিয়ে তৃষার পরিবারের লোকেরা অজিতকে বহুবার বারণ করেছে। বেশ কয়েকদিন আগে একবার সালিশিও হয়। অজিতকে প্রেম নিবেদন না করার কথাও বলা হয়। তারপর কয়েকদিন অজিত আর তৃষাকে প্রেম প্রস্তাব দেয়নি। তারপর বুধবার আচমকা ওই স্কুলছাত্রীর উপর হামলা চালায় সে। তৃষার মা প্রভাতী বাগ বলেন, “অজিত মেয়েকে বিরক্ত করত। আমরা প্রতিবাদও করেছি। কিন্তু ও যে মেয়েকে খুন করে দেবে তা ভাবতে পারছি না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.