ধীমান রায়, কাটোয়া: গভীর রাতে পুকুর পাড়ে জুয়ার আসর বসেছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে জুয়ার ঠেকে হানা দেয় পুলিশ। ঊর্দিধারীদের দেখে যে যেদিকে পারে দৌড় দেয়। পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে তিনজন ঝাঁপ দিয়েছিল। তাদের মধ্যে দুজনকে জল থেকে তোলা হয়েছিল। তাদের দু’চার ঘা দিয়ে পুলিশ ছেড়ে দেয়। কিন্তু জল থেকে উঠতে পারেনি একজন। মঙ্গলবার বিকেলে পুকুর থেকে উদ্ধার হয় ওই ব্যক্তির দেহ। আর তারপর থেকেই স্থানীয়দের তুমুল বিক্ষোভে উত্তপ্ত পূর্ব বর্ধমান জেলার গুসকরা।
বছর ছত্রিশের অনির্বাণ মণ্ডল নামে ওই ব্যক্তির দেহ মঙ্গলবার বিকেলে স্থানীয়রাই গুসকরা শহরের ধাড়াপাড়ায় ময়রাকল পুকুর থেকে উদ্ধার করেন। খবর পেয়ে পুলিশ দেহটি উদ্ধার করতে যায়। পুলিশকে ঘিরে স্থানীয়রা তুমুল বিক্ষোভ শুরু করেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, অনির্বাণ নামে ওই যুবক জুয়ার ঠেক থেকে পুলিশের তাড়া খেয়ে পুকুরে ঝাঁপ দিয়েছিল। কিন্তু পুলিশ তা জানার পরেও তাকে উদ্ধারের চেষ্টা করেনি। পালানোর সুযোগও দেয়নি। তাই তার এভাবে মৃত্যু হয়েছে। পূর্ব বর্ধমান জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “বিষয়টি ঠিক কি ঘটেছে আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে দেখছি। যদি কেউ এই ঘটনায় দোষী প্রমাণিত হয় তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
গুসকরা শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার ময়রাকল পুকুর পাড়ে সোমবার রাতে ৮-১০ মিলে জুয়ার আসর বসায়। এলাকা থেকে এই খবর পেয়ে গুসকরা ফাঁড়ির পুলিশ সেখানে অভিযানে যায়। রাত প্রায় সাড়ে বারোটা নাগাদ পুলিশ সেখানে যেতেই তারা ছুটে পালানোর চেষ্টা করে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সঞ্জয় রায় বলেন, “অনির্বাণের সঙ্গে আমিও ছিলাম। পুলিশ দেখে আমরা তিনজন পুকুরে ঝাঁপ দিই। পুলিশ পুকুর পাড় ঘিরে ফেলেছিল। আমাকে ও আর একজনকে জল থেকে উঠে আসতে বললে আমরা উঠে আসি। তখন পুলিশ আমাদের ধরে মারধর করে ছেড়ে দেয়। কিন্তু তখনও অনির্বাণ পুকুরের জলে ছিল। সিভিক ভলান্টিয়াররা জলে নামলে পোশাক ভিজে যাবে বলে নামেনি। তারপর আমাকে পালাতে বলে। আমি চলে যাই।” অনির্বাণ একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করত। তার স্ত্রী প্রীতিও বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। বুধবার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য বর্ধমানে পাঠানো হবে বলে জানা গিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.