সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সম্পর্ক মানতে না পেরে মেয়ের প্রেমিককে খুন করানোর অভিযোগ উঠল এক কিশোরীর পরিজনদের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার নাজিরপুরের বাঘাডোবা গ্রামে। এই ঘটনায় নিহতের তিন বন্ধুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কিশোরীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর আপাতত ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। নিহতের পরিবারের দাবি, আর্থিক অবস্থা ভাল না হওয়ার কারণেই প্রেমের সম্পর্ক মানতে পারেনি কিশোরীর পরিবার। তাই তাকে খুন করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, নাজিরপুর সারদা বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রীর সঙ্গে বেতাই উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেনীর ছাত্র জয়ন্তের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তবে ওই কিশোরীর পরিবার জয়ন্তর সঙ্গে এই সম্পর্ক মানতে চাইনি। ঘটনার দিন তিন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে জয়ন্ত তেহট্টে কিশোরীর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল। হাউলিয়া পার্ক মোড়ে গিয়ে জয়ন্ত ও ওই মেয়েটি বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে বলে পুলিশকে জানায় আটক তিনজন। তারা আরও জানায়, বাকবিতণ্ডার মাঝে হঠাৎ কিশোরী অটো ধরে নাজিরপুরে বাড়ির উদ্দেশ্যে চলে যায়। এরপর ওই চার বন্ধু বেতাই ছানাতলায় সুদীপ রায়ের বাড়িতে আসে। বাড়িতে সেই সময় কেউই ছিল না। বিকেল চারটে নাগাদ সুদীপ খেলতে যাচ্ছি বলে বাইরে যায়। বাকি দু’জন খাওয়াদাওয়া করবে বলে চলে যায়। ফাঁকা বাড়িতে জয়ন্ত একাই থাকে। বেশ কিছুক্ষণ পর সুদীপ এসে জয়ন্তকে ডাকাডাকি করে। তার সাড়া না পেয়ে ঘরে ঢুকে যায়।
জয়ন্তের কাছে গিয়ে দেখে সে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সুদীপ্ত তার দুই বন্ধু রানা ও দেবাঞ্জনকে ডাকে। তিনজন স্থানীয় এক টোটো চালককে ডেকে নিয়ে আসে। জয়ন্তকে তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসক জানান, জয়ন্ত মারা গিয়েছে। পুলিশ জয়ন্তর দেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। ওই তিন বন্ধু-সহ টোটো চালককে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পরে টোটো চালককে ছেড়ে দিলেও ওই তিন বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়।
মৃতার বাবা জয়দেব হালদার বলেন, “আমরা গরিব বলে এ সম্পর্ক কিশোরীর পরিজনেরা মেনে নিতে পারেনি। এমনকি আমাকে খুনের হুমকি দিয়ে গেছে। এই আক্রোশে আমার ছেলেকে কিশোরীর পরিবারের মদতে তিন বন্ধু মিলে গলায় ফাঁস দিয়ে খুন করেছে।” ওই কিশোরী জানায়, “গত ছ’মাস ধরে আমার সঙ্গে জয়ন্তর সম্পর্ক ছিল। জয়ন্ত আমাকে একটা মোবাইল কিনে দিয়েছিল। সেই মোবাইলে আমাদের কথা হত। তেহট্টে সকলে একসঙ্গে দেখা হয়েছে। ওরা আমাকে একটা চার চাকার গাড়িতে উঠতে বললে আমি সেখান থেকে অটো ধরে বাড়ি ফিরে আসি। এর বাইরে আমি আর কিছু জানি না।” অভিযোগ খতিয়ে দেখে পুলিশ জয়ন্তর তিন বন্ধুকে গ্রেপ্তার করে। বৃহস্পতিবার তাদের তেহট্ট আদালতে তোলা হয়। অভিযুক্তদের পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। একজন নাবালক হওয়ায় তাকে কৃষ্ণনগর জুভেনাইল আদালতে পাঠানো হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.