সুমন করাতি, হুগলি: আত্মীয়ের বাড়িতে চুরির সন্দেহে যুবককে বেধড়ক মার। বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে হাত-পা বেঁধে পাইপ, বাঁশ দিয়ে মারধরের অভিযোগ। ফের গণপিটুনিতে মৃত্যু যুবকের। বউবাজার, সল্টলেক, ঝাড়গ্রাম, পাণ্ডুয়ার পর এবার ঘটনাস্থল হুগলির তারকেশ্বরের রানাবাঁধ। এই ঘটনায় দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।
মৃত বিশ্বজিৎ মান্না, পেশায় গাড়িচালক। তারকেশ্বর থানার নাইটা মাল পাহাড় পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের রানাবাঁধ এলাকার বাসিন্দা তিনি। রবিবার সন্ধেয় গাড়ি চালিয়ে সাড়ে আটটা নাগাদ বাড়ি ফেরেন বিশ্বজিৎ। তাঁর ছেলের খাবার কিনে আনার বায়না করে। মৃতার মায়ের দাবি, তাই বাড়ি থেকে বেরন তিনি। সামনের দোকানে খাবার কিনতে যান। ফিরে বেশ কিছুক্ষণ বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে আড্ডাও দেন। বাড়ি ফিরে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। অভিযোগ, গভীর রাতে বিশ্বজিতের আত্মীয় বিকাশ সামন্ত ও তাঁর ছেলে দেবকান্ত সামন্ত বিশ্বজিতের বাড়িতে আসেন। নিজেদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে যান।
অভিযোগ, চুরির অভিযোগ দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাঁকে। এদিকে, ছেলে বাড়ি ফিরছেন না দেখে পুত্রবধূকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান বিশ্বজিতের মা। তিনি দেখেন, ছেলের হাত-পা একটি দড়ি দিয়ে ততক্ষণে বেঁধে ফেলা হয়েছে। একটি নির্মীয়মান বাড়িতে নিয়ে গিয়ে পাইপ, বাঁশ দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। বিশ্বজিতের আরেক বন্ধুকেও অল্পবিস্তর মারধর করা হয় বলেই অভিযোগ। তিনি কোনওক্রমে পালিয়ে প্রাণে বাঁচেন।
তবে হাজার কাকুতি মিনতিতেও রক্ষা পাননি বিশ্বজিৎ। তাঁকে উদ্ধার করে রাত দুটো নাগাদ তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিছুক্ষণ চেষ্টা করেন চিকিৎসকরা। তবে শেষরক্ষা হয়নি। শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন বিশ্বজিৎ। এই ঘটনায় তারকেশ্বর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ বিকাশ সামন্ত ও দেবকান্ত সামন্তকে আটক করেছে তারকেশ্বর থানার পুলিশ। এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত কিনা, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.