প্রতীকী ছবি
ধীমান রায়, কাটোয়া: ১১ বছরের বড় বউদির প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে ১৯ বছর বয়সি দেওর। যুবকের পরিবার জানতে পেরে অনেক চেষ্টা করেছিল যাতে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে সে। নাছোড় মনোভাব দেখে শেষে ওই যুবককে ত্যাজ্য করেন তাঁর বাবা। পরিবার মুখ ফেরালেও, বউদিকে ছাড়তে নারাজ যুবক। জোরাজুরি করায় যুবকের বিরুদ্ধে মাসতিনেক আগে শ্লীলতাহানি ও মারধরের অভিযোগে এফআইআর দায়ের করেছিলেন বিধবা মহিলা। আক্রোশে প্রকাশ্য দিবালোকে বিধবা মহিলাকে এলোপাথাড়ি ছুরি দিয়ে হামলার অভিযোগ উঠল যুবকের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার বিকেল নাগাদ পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া(Katwa) থানার পানুহাটের এই ঘটনা ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। গুরুতর জখম অবস্থায় চুমকি বৈরাগ্য (৩১) নামে ওই মহিলাকে উদ্ধার করা হয়। কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। মহিলার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাই তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। এই ঘটনার পর থেকেই পলাতক অভিযুক্ত প্রবীণ বৈরাগ্য (১৯)। তার সন্ধানে চলছে তল্লাশি।
পানুহাট বৈরাগ্যপাড়ার বাসিন্দা চুমকিদেবীর স্বামী নরোত্তম বৈরাগ্য ছিলেন লরিচালক। বছর চারেক আগে পথদুর্ঘটনায় নরোত্তম মারা যান। চুমকিদেবীর এক ছেলে ও এক মেয়ে। ছেলে নবীন অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। মেয়ে শুভশ্রী দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। চুমকিদেবী রাখি তৈরি করেন। পাশাপাশি লক্ষীর ভাণ্ডার ও বিধবা ভাতা পান। তাঁরই উপার্জনে তিনজনের সংসার চলে।
জানা গিয়েছে, প্রতিদিনের মতো শুক্রবার বিকেল তিনটে নাগাদ মেয়েকে স্কুল থেকে আনতে যাচ্ছিলেন চুমকিদেবী। বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে তাঁর উপর হামলা হয়। অভিযোগ সম্পর্কে দেওর প্রবীণ একটি ধারালো ছুরি হাতে চুমকিদেবীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। বুকে, পেটে মিলে একাধিক জায়গায় ছুরি চালিয়ে দেয়। রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকেন চুমকিদেবী। তাঁর আর্ত চিৎকারে পাড়ার লোকজন ছুটে আসতেই পালিয়ে যায় প্রবীণ।
কিন্তু কেন এই হামলা? জখম মহিলার ছেলে নবীন বলে,”আমার মায়ের উপর খারাপ নজর দিত প্রবীণ দাদা। মা রাজি ছিলেন না। একদিন আমাদের বাড়িতে ঢুকে মাকে মারধর করে। মা কেস করেছিলেন। গত ২৮ জুলাই আদালতে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু হাজিরা দেয়নি। মামলা করার জন্য মাকে হুমকি দিত।” যদিও অভিযুক্ত যুবকের বাবা পূর্ণচন্দ্র বৈরাগ্যের দাবি, “চুমকির সঙ্গে আমার ছেলের অবৈধ সম্পর্ক ছিল। ১১ বছরের বড় কোনও মহিলার সঙ্গে কি ওই সম্পর্ক মানা যায়? তাই ছেলেকে সরে আসতে বলেছিলাম। শোনেনি। অবাধ্য ছেলের জন্য তিতিবিরক্ত হয়ে আমি ওকে ত্যাজ্য পুত্র করে দিয়েছি। তার কাগজও আমার কাছে আছে। এরপর কি ঘটেছে আমাদের জানা নেই।” জানা গিয়েছে, ঘটনার খবর পেয়েই এলাকায় পৌঁছয় পুলিশ। তদন্তকারীরা হাসপাতালে গিয়ে জখম বধূর জবানবন্দি নেওয়ার চেষ্টা করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই চুমকিকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। পুলিশ জানায় অভিযুক্ত যুবকের সন্ধান চলছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.