ছবি: প্রতীকী
দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: পারিবারিক বিবাদ থেকে রক্ষা পেল না পোষ্যও। এক ভাইয়ের পোষা কুকুরকে খাবারে বিষ মিশিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল আরেক ভাইয়ের বিরুদ্ধে। নৃশংস এই ঘটনা ঘটেছে হুগলির চুঁচুড়ার বোসের ঘাট এলাকায়। চুঁচুড়া থানায় অভিযোগ দায়ের হলেও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি এখনও।
চুঁচুড়া থানার (Chinsura) বোসের ঘাট এলাকার বাসিন্দা সঞ্জিত হালদার। তাঁর সঙ্গে ভাই রঞ্জিত হালদারের পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিবাদ রয়েছে। অভিযোগ, এই বিবাদের কারণে সঞ্জিতবাবুর পোষা ল্যাব্রডর লিজার খাবারে শুক্রবার বিষ মিশিয়ে দেয় ভাই রঞ্জিত। নিরীহ, প্রভুভক্ত লিজা মানুষের এই ষড়যন্ত্রের আঁচ কোনোভাবেই পায়নি। বিষ মেশানো খাবার খেয়ে ফেলে লিজা। আর তারপরই সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। সেই অবস্থাতেই কোনওরকমে ছুটতে ছুটতে সে সঞ্জিতবাবুর কাছে এসে তাঁর কোলে লুটিয়ে পড়ে।
পোষ্যের এই অস্বাভাবিক আচরণে দিশেহারা হয়ে পড়েন সঞ্জিত হালদার। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ও তাঁর স্ত্রী লিজাকে নিয়ে চুঁচুড়া পশু হাসপাতালে ছোটেন। কিন্তু লকডাউনের কারণে সেখানে কোনও পরিষেবা পাওয়া যায়নি। এরপর চুঁচুড়া ষ্টেশনের কাছে এক পশু চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় লিজাকে। ওই চিকিৎসক দ্রুত লিজার চিকিৎসা শুরু করেন। টানা প্রায় ৪ ঘন্টা লড়াইয়ের পর মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে ল্যাব্রডর লিজা। সঞ্জিতবাবু মৃত পোষ্যকে কোলে
নিয়ে সোজা হাজির হন চুঁচুড়া থানায়। ভাই রঞ্জিত হালদারের বিরুদ্ধে তার পোষ্য লিজাকে বিষ খাইয়ে মারার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। রঞ্জিতবাবু অবশ্য কুকুরটিকে বিষ খাইয়ে মারার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
চুঁচুড়া থানার পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার কুকুরটির ময়নাতদন্ত করা হবে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই কুকুরটির মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। আর তারপরই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বিষ খাইয়ে মারার অভিযোগ প্রমাণিত হলে, রঞ্জিতবাবুকে গ্রেপ্তার করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওযা হতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে সবটাই নির্ভর করছে ময়নাতদন্তের রিপোর্টের উপর। এতদিনের প্রিয় পোষ্যকে এভাবে হারিয়ে শোকস্তব্ধ সঞ্জিত হালদার ও তাঁর পরিবার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.