ছবি: প্রতীকী
দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: হবু স্ত্রীর নাম ভাঁড়িয়ে প্রচুর ঋণ নেওয়া, সেই ঋণ শোধ না করতে চেয়ে হবু স্ত্রীকে ডেকে ধর্ষণের (Rape) পর খুনের চেষ্টা – এতগুলি অপরাধ একসঙ্গে ঘটানোর পর পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে গেল দুই অভিযুক্ত। তাদের খোঁজে জোরদার তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। এমন নৃশংসতার শিকার হতে চলা মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) যুবতী বরাতজোরে প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন। আর তারপরই পুলিশের কাছে গিয়ে প্রেমিকের সমস্ত কুকীর্তি ফাঁস করেছেন। আপাতত যুবতী চিকিৎসাধীন দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Parganas)বারুইপুরের এক সরকারি হাসপাতালে। পলাতক ২ অভিযুক্ত।
জানা গিয়েছে, যুবতীর বাড়ি মুর্শিদাবাদে। তাঁর সঙ্গে সাবির শেখ নামে স্থানীয় এক যুবকের। বিয়ের আগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-পরিচয় করার জন্য যুবতীকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল সাবির। সেইমতো তাঁকে নিয়ে সাবির ও তার ভাই ট্রেনে ওঠে। তারপর যুবতীকে কিছু খেতে দেয় তারা। পুলিশের কাছে অভিযোগে যুবতী জানিয়েছেন, ওই খাবার খাওয়ার পর তিনি অচৈতন্য হয়ে পড়েন। অভিযোগ, সেই সুযোগে সাবির ও তাঁর ভাই মিলে একাধিকবার ধর্ষণ করে যুবতীকে।
ট্রেনটি শিয়ালদহে ঢোকার পর যুবতীর জ্ঞান ফিরে আসে পুরোপুরি। কিন্তু তখন তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। অত্যাচারের মুখে পড়ে পের জ্ঞান হারান যুবতী। এরপর যখন তাঁর জ্ঞান ফেরে, তখন বুঝতে পারেন, তিনি কোনও রাস্তার ধারে পড়ে রয়েছেন। ধীরে ধীরে সম্বিৎ ফিরে পেয়ে যুবতী জানতে পারেন, এলাকাটি নরেন্দ্রপুর (Narendrpur)। এরপর স্থানীয়দের সাহায্যে তিনি নরেন্দ্রপুর থানায় পৌঁছন এবং বিস্তারিত জানান। যুবতীর দাবি, ট্রেনে বারবার ধর্ষণ করার পর হয়ত সাবির ভেবেছিল, তিনি আর বেঁচে নেই। তাই রাস্তার ধারে ফেলে রেখেছিল।
পুলিশের কাছে যুবতী নিজের অনুমানের কথা আরও জানিয়েছেন। হবু স্ত্রীর নাম করে বিভিন্ন জায়গা থেকে ঋণ নিয়েছিল সাবির। সেই ঋণের বোঝা অনেকটাই। সেই টাকা দিয়ে কী করেছে, তা জানা নেই তাঁর। এরপর শোধ করার সময় এলে সাবির হবু স্ত্রীকেই খুনের পরিকল্পনা (Attempt to murder) করে। কারণ, তিনি মারা গেলে তাঁর নামে নেওয়া ঋণ আর শোধ করতে হবে। দায়মুক্ত হবে সাবির। কিন্তু সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হল না। ভয়ংকর ষড়যন্ত্রের হাত থেকে যুবতী প্রাণে বেঁচেছেন। তবে সাবির ও তার ভাই এখনও পলাতক। খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। যুবতীকে বারুইপুর হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। দ্রুত তাঁর মেডিক্যাল টেস্ট করা হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.