কাটোয়া আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে অভিযুক্ত স্ত্রীকে
ধীমান রায়, কাটোয়া: পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল স্ত্রী। আর আসতে চাইছিল না শ্বশুরবাড়িতে। তবুও স্বামী বারবার তাকে বাড়ি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছিলেন। শেষ পর্যন্ত তিনি সফল তো হলেনই না, বরং ফল হল পুরো উলটো। স্ত্রীর বঁটির কোপে জখম হয়ে হাসপাতালে ভরতি হলেন। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামে। আক্রান্ত যুবকের নাম কৃষ্ণ দাস (২৭)। বর্তমানে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। তাঁর বাবা মন্টু দাসের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ কৃষ্ণর স্ত্রী পূর্ণিমা দাস-সহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। ধৃতদের মধ্যে বাকি দু’জন হল জয়দেব দাস ও রঞ্জিত দাস। রঞ্জিত পূর্ণিমার ভাই। আর জয়দেবের সঙ্গে পুত্রবধূ পূর্ণিমা পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল বলে অভিযোগ মন্টুবাবুর। শুক্রবার কাটোয়া মহকুমা আদালতে তোলা হলে ধৃতদের ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কেতুগ্রামের ধাদলসা গ্রামের বাসিন্দা ও পেশায় কৃষক মন্টু দাসের বড় ছেলে কৃষ্ণের সঙ্গে নিরোল গ্রামের বাসিন্দা সুফল দাসের মেয়ে পূর্ণিমার প্রায় তিনবছর আগে বিয়ে হয়। কৃষ্ণ চাষবাসের পাশাপাশি গাড়িও চালান। মন্টুবাবু জানিয়েছেন, দুর্গাপুজোর একমাস আগে তাঁর ছেলে কৃষ্ণ বাইরে কাজে গিয়েছিলেন। মাস দুয়েক সেখানে থাকার পর বাড়ি আসেন। স্বামী বাইরে কাজে যাওয়ার সময়েই পূর্ণিমা চলে যায় বাপের বাড়ি।
তিনি আরও বলেন, ‘ছেলে বাড়ি ফেরার পর কয়েকবার ফোন করে বউমাকে ফিরতে বলে। কিন্ত, বউমা বাপের বাড়ি থেকে আসতে চাইছিল না। তাই ছেলে তাকে আনতে গত মঙ্গলবার নিরোল গ্রামে ওর শ্বশুরবাড়ি যায়। কিন্তু, সেখানে যাওয়ার পরেই বউমা ঝগড়া শুরু করে। পরে বউমার ভাই রঞ্জিত ফোন করে আমাকে ডাকে। আমি নিরোলে গিয়ে ছেলেকে বাড়ি নিয়ে আসি। এরপর বৃহস্পতিবার সকালে ফের নিরোলে যায় কৃষ্ণ। ঘণ্টাতিনেক পর ওখান থেকে ফোন আসে কৃষ্ণ রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তখন কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে নিরোলে গিয়ে দেখি শ্বশুরবাড়ির সামনেই জখম অবস্থায় পড়ে রয়েছে আমার ছেলে। স্থানীয়দের জিজ্ঞাসা করে জানতে পারি পূর্ণিমা, রঞ্জিত ও জয়দেব তিনজন মিলে প্রথমে ওকে মারধর করে। তারপর বউমা একটি বঁটি দিয়ে কৃষ্ণর গলায় কোপ মারতে যায়। হাত দিয়ে তা আটকানোর চেষ্টা করতে গিয়ে কৃষ্ণর বাঁ হাতের কবজি থেকে কিছুটা অংশ ঝুলে যায়।’
পরে জখম কৃষ্ণকে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভরতি করা হয়। আর বৃহস্পতিবার রাতে মন্টুবাবু তাঁর ছেলের শ্বশুর সুফল-সহ চারজনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন। যদিও ঘটনার পর থেকেই পলাতক সুফল বাকিদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত জয়দেবের বাড়ি মুর্শিদাবাদের সোনানন্দী গ্রামে। তার সঙ্গে মাস দুয়েক আগে পরকীয়া সম্পর্ক জড়িয়ে পড়ে পূর্ণিমা। যদি পুলিশের জেরায় কৃষ্ণের স্ত্রী জানিয়েছে যে তার স্বামী পাগলাটে স্বভাবের। তাই তার সঙ্গে ঘর করতে রাজি নয় সে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.