সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: হেলিকপ্টার টানাপোড়েনে বাতিল হয়েছে আগের দুটি সভা। তার একদিন পরই অবশ্য জট কাটিয়ে বাংলায় হাজির হলেন গেরুয়া শিবির অন্যতম নির্ভরযোগ্য সৈনিক যোগী আদিত্যনাথ। পুরুলিয়ার মাঠে নেমেই চেনা ভঙ্গিতে তৃণমূলকে আক্রমণ শানালেন। বললেন, তৃণমূলী গুন্ডাদের শাস্তি দিতে হবে। বাংলায় তৃণমূলের রাজত্ব শেষ করতে হবে।
লোকসভা ভোটের আগে এরাজ্যে প্রচারের জন্য বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট নেতার নাম স্থির করেছে বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। যার মধ্যে নাম রয়েছে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের। গত রবিবার বালুরঘাট এবং রায়গঞ্জে দুটি সভা করার কথা থাকলেও, তা হতে পারেনি কপ্টার নামানোর স্থানাভাবে। ওই দিন তিনি টেলিফোনেই ভাষণ দিয়েছেন। মঙ্গলবারের সভা নিয়েও অনিশ্চয়তা ছিল ঘোর। দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর ঠিক হয়, ঝাড়খণ্ডে নামবে যোগীর কপ্টার। সেখান থেকে সড়কপথে তিনি পৌঁছবেন পুরুলিয়ার নবকুঞ্জ ময়দানের সভায়। সেই মতো আজ বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ সভামঞ্চে পৌঁছে যান তিনি।
[সততার নজির, টাকা ভরতি মানিব্যাগ থানায় ফেরত দিল দুই ছাত্রী]
শুরু থেকেই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন যোগী আদিত্যনাথ। মমতা সরকারকে তোপ দেগে তাঁর বক্তব্য, ‘বাংলায় দুর্নীতি হচ্ছে। বর্বর, অসাংবিধানিকভাবে সরকার চলছে। আমার এখানকার সফর যেভাবে আটকানোর চেষ্টা হয়েছিল, তা নিন্দনীয়। তৃণমূল জমানায় বাংলা পিছিয়ে গিয়েছে। মোদি সরকারের উন্নয়নের ছোঁয়া পেতে দেওয়া হচ্ছে না বাংলাকে। কেন্দ্রের টাকা বাংলার মানুষের কাছে পৌঁছনোর আগে তৃণমূলের নেতারা তা আত্মসাৎ করছেন।’ তৃণমূলের বিরুদ্ধে সিন্ডিকেটরাজের অভিযোগ তুলেছেন যোগী। এদিনই ধর্মতলার ধরনা মঞ্চ থেকে যোগীকে কটাক্ষ করে উত্তরপ্রদেশ সামলানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরই জবাব দিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, ‘বিএসপি, এসপির গুন্ডাদের শায়েস্তা করেছি। অন্যায়ের অবসান ঘটিয়েছি। এখানেও তৃণমূল গুন্ডাদের উচিত শিক্ষা দিতে হবে। বিজেপি কর্মীদের ওপর পরিকল্পনামাফিক হামলা চলছে। ওরা ভয় দেখিয়ে ভোট আদায় করে। আর ভারতীয় জনতা পার্টি জনগণের কাছে ভোট ভিক্ষা করে।’
গত কয়েকটি নির্বাচনে পুরুলিয়ায় বিজেপির ভোটব্যাংক কিছুটা বেড়েছে। সংগঠন শক্তিশালী করার লক্ষ্যে এগোচ্ছেন কর্মীরা। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার গেরুয়া শিবিরের অন্যতম সফল প্রচারক যোগী আদিত্যনাথের ভোকাল টনিকে যে কর্মীরা আরও উজ্জীবিত হয়ে উঠলেন, তা সভাশেষে সমবেত ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনিতেই স্পষ্ট।
ছবি: অমিত সিং দেও
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.