সৌরভ মাজি, বর্ধমান: কয়েকমাস আগে নামী রেস্তোরাঁয়া হানা দিয়ে মিলেছিল পচা-পোকাধরা মাছ-মাংস। এবার বড় দোকান থেকে কেনা রসগোল্লায় মিলল জ্যান্ত পোকা। কিলবিল করছে। ছোট্ট শিশুকে খাওয়াতে গিয়ে আঁতকে ওঠেন মা। মেয়ের রাতে রসগোল্লা খাওয়ার অভ্যাস থাকলেও সেই রাতে আর তা জুটল না। সবকিছু মোবাইলে ছবি তুলে ভিডিও রেকর্ডিং করে বাবা-কাকা ছোটেন ওই দোকানদারের কাছে। অভিযোগ শুনে দোকানদারের সাফাই, মিষ্টিতে পোকা থাকতেই পারে। বানানোর সময় চোখে পড়লে ফেলে দেওয়া হয়।
এই ঘটনা ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বর্ধমান শহর সংলগ্ন রায়ান এলাকায়। রায়ান-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের নারায়ণদিঘির বাসিন্দা সুমন্ত্র মঙ্গলবার ঘটনার বিষয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে তিনি জানিয়েছেন, রায়ান বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন একটি বড় দোকান থেকে দুটি রসগোল্লা নিয়ে যান শিশুকন্যার জন্য। সোমবার রাতে শিশুটিকে সেই রসগোল্লা খাওয়াতে গিয়ে তার মা পায়েলদেবী দেখেন হলদে-সাদা রঙের কয়েকটি পোকা কিলবিল করছে। মেয়েকে আর কী করে তিনি সেই রসগোল্লা খাওয়ান। কোনওক্রমে মেয়েকে বুঝিয়ে শান্ত করেন। ভালভাবে লক্ষ্য না করলে ওই পোকাই শিশুকন্যার পেটে চলে যেতে পারত। বড় বিপদও ঘটে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল।
[টানা বৃষ্টিতে বেহাল দুই মেদিনীপুর, বাঁকুড়ার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে]
এদিন সকালে ওই দোকানে পোকাধরা রসগোল্লা ও মঙ্গলবার রাতে তোলা ছবি-ভিডিও নিয়ে যান সুমন্ত্রবাবু। তিনি বলেন, “দোকানদারকে ঘটনার কথা বললে তিনি কোনও গুরুত্বই দেননি। উলটে বলেন, পোকা-মাছি রসগোল্লায় থাকে। বানানোর সময় চোখে পড়লে ফেলে দেওয়া হয়। চোখে পড়েনি তাই থেকে গিয়েছে।” কিন্তু তাই বলে জ্যান্ত পোকা কীভাবে থাকে সেই প্রশ্ন করলে অবশ্য কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি দোকানদার। সাধারণত কোনও খাবার পচে গেলে এই ধরণের পোকা ধরে তাকে। রসগোল্লাটি পচে যাওয়ার কারণেই ছোট ছোট পোকা হয়েছিল বলে মনে করছেন সুমন্ত্রবাবু। কিন্তু দোকানদার তা শুনেও চুপ থাকেন। সুমন্ত্রবাবু জানান, শুধু তাঁর সঙ্গেই নয়, এমন ঘটনা এলাকার আরও কয়েকজনের সঙ্গে ঘটেছে বলে তিনি পরে জানতে পেরেছেন।
দোকানের মধ্যে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মিষ্টান্ন তৈরি করা হয় বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। দোকানদারকে নিয়েই তিনি মিষ্টান্ন তৈরির জায়গার ভিডিও করেছেন। দোকানের মালিক শ্যামল রায় অবশ্য দাবি করেছেন, পচে পোকা ধরে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। কেন এমনটা হয়েছে তা বুঝতে পারছেন না। তাঁর দাবি, অবিক্রিত রসগোল্লা ফেলে দেন। যদিও তা মানছেন না সুমন্ত্রবাবু ও তাঁর দাদা সুব্রতবাবু। সুব্রতবাবু জানান, এদিন সকালে তাঁরা প্রথমে খাদ্য দপ্তরে গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁদের স্বাস্থ্য দপ্তরে অভিযোগ করতে বলা হয়। তাঁরা তা করেন। তারপর জেলা প্রশাসনের কাছেও অভিযোগ করেন। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বিষয়টি স্থানীয় বিডিওকে খতিয়ে দেখার জন্য বলা হয়েছে। কয়েকমাস আগে বর্ধমান শহরের কয়েকটি রেস্তরাঁ ও হোটেলে অভিযান চালিয়েছিল পুরসভা। সেখানে পচা ও পোকা ধরা মাংসের সন্ধান পেয়েছিলেন পুরকর্তারা। সংশ্লিষ্ট রেস্তরাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়।
[কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মহিলাকে মারধর, অভিযুক্ত তৃণমূল কাউন্সিলর]
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.